প্রতিরোধের যথাযথ পথ খুঁজতে হবে

বাংলাদেশে বিপিএলকে ঘিরে জুয়ার বিস্তার, এমনকি এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের খুন হওয়ার ঘটনাটি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। ক্রিকেট অঙ্গনের নীতিনির্ধারকসহ সবারই উচিত এ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করা। সাংবিধানিকভাবে যে দেশে জুয়া নিষিদ্ধ, সেখানে বিপিএল জুয়ার বিস্তার রোধে করণীয় খুঁজে বের করার দায় সরকারের রয়েছে।

বিপিএল শুরুর বছর না ঘুরতেই আমরা প্রত্যক্ষ করেছি আশরাফুল কেলেঙ্কারি। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ধাক্কায় টালমাটাল বিপিএল ২০১৪ সালে বন্ধই রাখতে হয়েছে। বিপিএলের জনপ্রিয়তা একটি বাস্তবতা, কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্রিকেটীয় নৈতিকতার ব্যাপারে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট কুশলীবেরা ক্রিকেটকে যদি শুধুই অর্থকড়ি উপার্জনের একটি রমরমা চারণভূমিতে পরিণত করার পণ করে থাকেন, তাহলে একদিন হয়তো তা আমাদের গভীর অনুশোচনার কারণ হতে পারে।

একজন ক্রিকেট পণ্ডিতের কথায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বজুড়েই জুয়াড়িদের তীব্র আকর্ষণের বিষয়। আর বিপিএল ইতিমধ্যেই যে বাজি ও জুয়ার মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহের সুযোগ নেই। বিপিএল বিলুপ্ত করার চিন্তা হয়তো যুক্তির কথা নয়, তবে সে ক্ষেত্রে খেলাকে নির্মল আনন্দের উৎস হিসেবে টিকিয়ে রাখতে ক্রিকেট বোর্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর ও সজাগ থাকতে হবে।

বিপিএলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিনিয়োগকারীরা যাতে খেলা ও ব্যবসার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার শিক্ষা লাভ করেন, সে লক্ষ্যে ক্রিকেট বোর্ডকে পথ খুঁজতে হবে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমানে বিপিএল জুয়া যেভাবে নিম্নবর্গীয় মানুষদের মনোযোগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে, তার গণ্ডি এখানেই সীমিত থাকবে বলে মনে হয় না। আসলে ইতিমধ্যেই তা কোন স্তর পর্যন্ত পৌঁছেছে সে ব্যাপারেও আমরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল নই। ফেসবুকের মতো অনুষঙ্গের মাধ্যমে জুয়াকে ঘিরে দেশি-বিদেশি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

বিপিএলকে কেন্দ্র করে অবৈধ জুয়া বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। খুব বেশি দেরি হওয়ার আগেই নীতিনির্ধারকদের নৈতিক ক্রিকেট, যার আবেদন সর্বজনীন ও কালজয়ী তার সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।