ধর্ষক এবার ইজিবাইকের চালক

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, ওই তরুণী গত শুক্রবার ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় বাস ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলে তরুণীকে এক চালক নিজের ইজিবাইকে তোলেন। ওই ইজিবাইকে আরও দুই তরুণ ছিলেন। পরে এক নির্জন স্থানে তরুণীকে নামিয়ে চালকসহ তিনজন মিলে ধর্ষণ করেন। এমনকি তাঁরা মুঠোফোনে আরও চারজনকে সেখানে ডেকে আনেন। তাঁরাও তরুণীকে ধর্ষণ করেন। পরদিন সকালে ফরিদপুর র‍্যাব ক্যাম্পকে বিষয়টি জানান। ওই দিনই তিন ধর্ষককে আটক করা হয়। 

দেখা যাচ্ছে, কোনো তরুণী একা হলেই তিনি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। আমরা রূপার বেলায়ও তা-ই দেখেছি। রূপার ঘটনার পর গত নভেম্বর মাসে চট্টগ্রামে এক পোশাককর্মী চলন্ত বাসে একা হয়ে পড়লে পরিবহনশ্রমিকদের ধর্ষণের শিকার হন। সম্প্রতি যাত্রীকল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ মাসে গণপরিবহনে ২১ জন নারী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাহলে কি আমাদের দেশে নারীরা একা একা চলাচল করতে পারবেন না? একা হলেই কি তাঁরা ধর্ষণের শিকার হবেন?

পথেঘাটে, গণপরিবহনে, কর্মস্থলে যৌন হয়রানি বা ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা নারীদের অগ্রযাত্রাকে নিঃসন্দেহে বাধাগ্রস্ত করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে নারী একা বা নিজের মতো করে চলাফেরা করবেন কী করে? এ ধরনের পরিস্থিতি নারীর কাজের ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে দিতে ও বাধাগ্রস্ত করতে পারে। জাতীয় অর্থনীতিতে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 গণপরিবহনকে নারীবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি নারীর চলাচল নিরাপদ করার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বাসে বা ট্রেনে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হলে অভিযোগ জানানোর বিষয়টি সহজ করতে হবে। এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত চালু করা যেতে পারে। রুট অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতের ফোন নম্বর গণপরিবহনের প্রকাশ্য স্থানে লিখে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে সব স্থানে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। চালকসহ অন্য পরিবহনশ্রমিকদের যাত্রীদের সঙ্গে আচরণ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।  যৌন হয়রানিকারী ও ধর্ষকদের কঠোর সাজা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ নিয়ে যথাযথ প্রচার–প্রচারণাও জরুরি হয়ে পড়েছে।