ফসলের রোগ পরীক্ষার ব্যবস্থা

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক সেমিনারে উত্থাপিত প্রবন্ধ এবং বক্তাদের বক্তব্য হলো, এ দেশে রোগাক্রান্ত ফসল আলাদা স্থানে রেখে তা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। বিদেশ থেকে অথবা দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কোনো ফল ও ফসল নিয়ে যাওয়ার সময় তাতে কোনো রোগ-জীবাণু আছে কি না, তা সঠিকভাবে পরীক্ষা করা হয় না। ফলে গমের ব্লাস্টের মতো মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ব্লাস্ট রোগের জীবাণু এতটাই মারাত্মক যে বীজ শোধন ও ছত্রাক প্রতিরোধক দিয়েও তা নির্মূল করা যাচ্ছে না। গত বছর দেশের নয়টি জেলায় ওই রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল। এ বছরের জানুয়ারিতেই চারটি জেলায় এ রোগের সংক্রমণ দেখা গেছে।
ব্লাস্ট রোগ গমের ফলন উজাড় করে দিতে পারে। একদল জার্মান গবেষক গত বছর গবেষণাগারে পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, এ রোগের জীবাণু ছত্রাক আকারে ধানগাছেও ছড়াতে পারে। যদি তা ঘটে, তাহলে ধানের ব্যাপক ফসলহানি কৃষিতে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আমাদের জাতীয় আয়ের ৫০ শতাংশ কৃষি খাত থেকে আসে। ফসল রোগাক্রান্ত হলে দেশ কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে তা সহজেই অনুমেয়। তাই ফল ও ফসলের রোগ নির্ণয় ব্যবস্থায় দুর্বলতা থাকলে চলবে না। এই ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। এ ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সম্প্রতি ‘কৃষকের জানালা’, ‘কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা’ ও ‘ই-বালাইনাশক প্রেসক্রিপশন’ নামের তিনটি অ্যাপ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছে। এর মধ্যে কৃষকের জানালা অ্যাপটি ব্যবহার করে ফসলসংক্রান্ত অনেক সমস্যার সমাধানমূলক পরামর্শ পাওয়া যায়। এটি ব্যবহার করে ধান, পাট, গম, ভুট্টা, আখসহ অন্তত ২১ ফসল রোগাক্রান্ত হলে কী করতে হবে, তা জানা যাবে। এই অ্যাপের ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকসহ সবাইকে জানাতে হবে। কৃষি খাতকে বাঁচানোর জন্য ফসল রক্ষার কোনো বিকল্প নেই।