বৈষম্য কমাতে নাগরিক সম্মেলন

বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও ৭৪টি নাগরিক প্রতিষ্ঠানের জোট ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’ গত বুধবার ঢাকায় এক নাগরিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল, যেখানে বলা হয়েছে, এসডিজি অর্জনের লক্ষে্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষত, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর চাহিদার ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্মেলনে ‘কাউকে পেছনে রাখা যাবে না’ বলে যে স্লোগান উচ্চারিত হয়েছে, তা যথার্থ।

এই সম্মেলন উপলক্ষে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবর্তনের অন্বেষণ: বাংলাদেশে কাউকে পেছনে রাখা যাবে না’ নীতির বাস্তবায়ন–বিষয়ক যে গবেষণা করা হয়েছে, তার একটি বিশেষ দিক হলো, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এই প্রথম দেশে অরক্ষিত জনগোষ্ঠী (ভালনারেবল গ্রুপস) চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের চাহিদা নিরূপণ করে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এসডিজির আরেক নাম ‘আমাদের ধরিত্রীর রূপান্তর: টেকসই উন্নয়নে ২০৩০ অ্যাজেন্ডা’। এর মূল অভীষ্ট দারিদ্র্য দূরীকরণ, অসমতা হ্রাস, সমান সুযোগ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সামাল দেওয়া।

এই গবেষণাপত্রে সুপারিশ করা হয়েছে: নীতি সংস্কার করে অরক্ষিত শ্রেণিসমূহকে মূলধারায় আনতে হবে, ক্ষুদ্র অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি থাকতে হবে, আইনি কাঠামো সংস্কার করে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকারের সুরক্ষা দিতে হবে, তাদের সরকারি সম্পদ ও সেবাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে, তাদের সম্পর্কে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করতে হবে এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় সংস্থার মধ্যে অংশীদারি গড়তে হবে।

সম্মিলিত বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ ছিল এমডিজি, যা অর্জনে বাংলাদেশ যথেষ্ট সফল। তার হাত ধরে আমরা এসডিজির যুগে প্রবেশ করেছি। বলা বাহুল্য, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বৈষম্য হ্রাস করতেই হবে। কিন্তু সারা পৃথিবীতেই বৈষম্য বাড়ছে। বিশ্বায়নের মধ্য দিয়ে অনেক মানুষ দারিদ্র্যের চক্র থেকে বেরিয়ে এসেছে। এখন আমাদের বৈষম্য হ্রাসের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। সে লক্ষ্যে এসডিজির মতো বৈশ্বিক প্রচেষ্টার গুরুত্ব আছে। তবে বৈষম্য হ্রাসে সব রাষ্ট্রকে অন্তত ন্যূনতম ঐকমত্যে আসতে হবে, দরকার দৃপ্ত অঙ্গীকার।