সোনারগাঁয়ের ২৫ গ্রাম

সোনারগাঁয়ের ২৫ গ্রামের মানুষকে শহর-নগরের সঙ্গে বিজড়িত করে রেখেছে দুলালপুর-সনমান্দি সড়ক। খানাখন্দে ভরপুর এ সড়ক বর্তমানে যতটা না যোগাযোগের মাধ্যম, তার চেয়ে বেশি জনদুর্ভোগের উৎস হিসেবেই কাজ করছে। ২৫ গ্রামের মানুষের বের হওয়ার এ সড়ক খুবই চিকন, সেটাও আবার চলনসই নয়। যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী এ সড়কের যে চিত্র বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে একে সড়ক না বলে কুরুক্ষেত্র বলাই ভালো।

সোনারগাঁ পৌরসভার দুলালপুর থেকে প্রেমেরবাজার হয়ে সনমান্দি বাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক। সময়ের কাজ সময়ে না করার খেসারত হয়ে উঠেছে সড়কটি। দীর্ঘদিন কোনো মেরামতকাজ না হওয়ায় ছোট গর্ত বড় হয়েছে, বর্ষা মৌসুমে জায়গায় জায়গায় পানি জমে থাকছে। প্রথম আলোর ওই সংবাদে এলাকাবাসীর বরাতে বলা হয়, ওই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। এ সড়ক দিয়ে এখন আর ফসল কিংবা বাড়িঘরের নির্মাণসামগ্রী পরিবহন করা যাচ্ছে না। প্রসূতি কিংবা অসুস্থ মানুষের জন্য এ পথে চলাচল হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। এক বছর ধরে সড়কটি এ রকম অবস্থায়ই রয়েছে। জেলার সড়ক ও গণপূর্ত বিভাগের কাজ ছিল বর্ষার আগেই সড়কটি মেরামত করে দেওয়া। তা না করায় পুরো সড়কই এখন পুনর্নির্মাণ করতে হতে পারে। একেই বলে সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়।

শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, খোদ ঢাকার রাজপথ থেকে গলিপথের অবস্থা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো ক্ষতবিক্ষত। ঢাকারই যখন এ হাল, তখন জেলা ও মফস্বলের অবস্থা সহজেই অনুমান করা যায়। বর্ষার আগে সড়কে সংস্কারকাজ ঠিকমতো না করায় যা হওয়ার তাই হয়েছে। আমরা সড়ক দুর্ঘটনার যে পরিসংখ্যান প্রতিদিন পাই, যে মর্মান্তিক মানবিক বিপর্যয় সড়কে ঘটে চলে, তার জন্য কেবল চালকদের দায়ী করলেই হবে না; ভাঙাচোরা সড়ককেও দায়ী করতে হবে। কান টানলে যেমন মাথা আসে, তেমনি সড়ক ধরে টান দিলে চলে আসবে সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ের নাম।

আমরা আশা করব, সোনারগাঁয়ের ওই ২৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ দ্রুত দূর করা হবে। না হলে করোনা-পরবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে গেলে ভোগান্তির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শিশুরাও এসে পড়বে।