বিশেষ সাক্ষাৎকার: আহমদ এহসানূর রহমান

অক্সিজেন হচ্ছে জীবনদায়ী ওষুধ

আহমদ এহসানূর রহমান আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মা ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী। তিনি অক্সিজেনের ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট–এর মেডিকেল অক্সিজেন সুরক্ষাসম্পর্কিত কমিশন রিপোর্টের নির্বাহী কমিটির সদস্য। ১২ নভেম্বর আইসিডিডিআরবিতে অক্সিজেন বিষয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়ল

এহসানূর রহমান
প্রশ্ন:

সম্প্রতি অক্সিজেন নিয়ে আলোচনা বেশি শোনা যাচ্ছে। কেন এমনটা হচ্ছে?

এহসানূর রহমান: জরুরি চিকিৎসা বা আইসিইউর রোগীর প্রয়োজন হলে অক্সিজেনের কথা আসে। করোনা মহামারি অক্সিজেনের আলোচনাকে ত্বরান্বিত করেছে। অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা গেছেন। জীবনের জন্য অক্সিজেন কতটা প্রয়োজন, এই মহামারি আমাদের তা শিখিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য সহযোগী সংস্থা এখন অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার কথা আগের চেয়ে বেশি বলছে। অক্সিজেন নিয়ে মানুষের মধ্যে একধরনের সচেতনতা দেখা যাচ্ছে।

প্রশ্ন:

অক্সিজেন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? এটি শরীরে কী কাজ করে?

এহসানূর রহমান: বাতাসের ২১ শতাংশ অক্সিজেন। বাতাস থেকে আমরা অক্সিজেন পাই। শ্বাসের সঙ্গে বাতাস ফুসফুসে যায়। ফুসফুস বাতাসের অক্সিজেন নেয়, সেই অক্সিজেন রক্তে মেশে। রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন কোষে যায়। কোষে থাকা খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করতে জ্বালানি হিসেবে কাজ করে অক্সিজেন। শক্তি উৎপাদনে বিদ্যুৎ বা তেলের যে ভূমিকা, শরীরের শক্তি তৈরিতে অক্সিজেনের একই ভূমিকা। কোষের জ্বালানি হচ্ছে অক্সিজেন। শরীরের কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অক্সিজেন কমে গেলে সেগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। মাথায় অক্সিজেন কমলে মাথা কাজ করে না। অক্সিজেন কমলে কিডনি ঠিকমতো কাজ করে না। অক্সিজেনের অভাবে শরীরের অঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

প্রশ্ন:

মেডিকেল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনের মধ্যে পার্থক্য কী?

এহসানূর রহমান: অক্সিজেন আগুন তৈরি বা কোনো কিছু জ্বলতে সাহায্য করে। অনেক কলকারখানায় আগুনের জন্য অক্সিজেন ব্যবহার করা হয়। মোটাদাগে বলা যায়, শিল্পে বা কলকারখানার জন্য তৈরি অক্সিজেন হচ্ছে শিল্প অক্সিজেন। আর রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত অক্সিজেন হচ্ছে মেডিকেল অক্সিজেন।

এই দুইয়ের পার্থক্য মূলত বিশুদ্ধতা ও উচ্চমানে। মেডিকেল অক্সিজেন ৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধ। শিল্প অক্সিজেন অতটা বিশুদ্ধ না হলেও চলে। বিশুদ্ধ হওয়ায় মেডিকেল অক্সিজেনের দাম বেশি। ক্ষেত্রবিশেষে ২ থেকে ১০ গুণ বেশি। অক্সিজেন উৎপাদন থেকে রোগীর নাকে পৌঁছানো পর্যন্ত বিশুদ্ধতা ও উচ্চমান নিশ্চিত করতে হয়।

বর্তমানে মেডিকেল অক্সিজেন তৈরি করে গুটিকয়েক বড় কোম্পানি। গবেষণায় প্রশ্ন আসছে, বিশুদ্ধতা কিছু কম থাকলেও সেই অক্সিজেন ব্যবহারযোগ্য কি না। এমন হলে অনেক ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান অক্সিজেন তৈরি করতে পারবে। এতে মেডিকেল অক্সিজেনের জোগান বাড়বে, দামও কমবে।

প্রশ্ন:

কোন ধরনের রোগীর মেডিকেল অক্সিজেন লাগে?

এহসানূর রহমান: রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে তাকে বলে হাইপোক্সিমিয়া। কারও হাইপোক্সিমিয়া হলে অক্সিজেন দিতে হয়। যেকোনো বড় অস্ত্রোপচার ও প্রসবের সময় অক্সিজেন লাগতে পারে। আবার বয়সভেদে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার ভিন্নতা আছে।

অপরিণত নবজাতকের অক্সিজেন লাগতে পারে। বার্থ-অ্যাস্পেক্সিয়া বা জন্মের সময় শ্বাসকষ্ট হলে নবজাতকের অক্সিজেন লাগে। ১ থেকে ১২ মাস বয়সী শিশু মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি অক্সিজেন দেওয়া জরুরি। আর ১১ মাস থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের নিউমোনিয়া বা মারাত্মক সংক্রমণ হলে তাদের চিকিৎসায় অক্সিজেন লাগে। আবার বৃদ্ধরা নিউমোনিয়ায় বা মারাত্মক অ্যাজমায় আক্রান্ত হলে অক্সিজেন লাগে। অন্যদিকে আইসিইউর রোগীদেরও অক্সিজেন দরকার হয়।

প্রশ্ন:

বাংলাদেশে অক্সিজেন উৎপাদন-সরবরাহের পরিস্থিতি কী? হাসপাতালগুলো অক্সিজেন পায় কোথা থেকে?

এহসানূর রহমান: বাংলাদেশে মেডিকেল অক্সিজেন তৈরি করে দুটি বড় প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রো ও লিন্ডে। জিপিএইচ ও আবুল খায়ের গ্রুপ বিপুল পরিমাণে শিল্প অক্সিজেন উৎপাদন করে। কোভিডের সময় তাদের উৎপাদিত অক্সিজেনও বিশুদ্ধ করে মেডিকেল অক্সিজেন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান—যেমন মেঘনা গ্রুপ, কেএসআরএম গ্রুপের অক্সিজেন প্ল্যান্ট আছে, যা থেকে মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন সম্ভব।

কিছু হাসপাতালে অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট আছে, যা থেকে সরাসরি অক্সিজেন উৎপাদিত হয়। অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট দুই পদ্ধতিতে কাজ করে—প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে বাতাস থেকে অক্সিজেন আলাদা করা যায়। আবার বাতাসকে প্রসারিত করে অক্সিজেন আলাদা করা যায়। একটি পিএসএ, অন্যটি ভিএসএ। বাংলাদেশে দুই পদ্ধতির প্রায় ১০০ প্ল্যান্ট আছে, যার বেশির ভাগ হয়েছে মহামারিকালে। দুটি পদ্ধতির কারিগরি বিষয় সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশে একই ধরনের প্রযুক্তি হলে ভালো হতো। কারণ, এসব যন্ত্রপাতি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগরিভাবে দক্ষ কর্মী লাগে। বাংলাদেশে এর ব্যাপক ঘাটতি আছে।

হাসপাতালে দুইভাবে রোগীর কাছে অক্সিজেন পৌঁছায়। সিলিন্ডারে করে আর কেন্দ্রীয় পদ্ধতি, যাতে একটি উৎস থেকে অক্সিজেন নলের মাধ্যমে হাসপাতালের নির্দিষ্ট কক্ষে বা ওয়ার্ডে নেওয়া হয়।

দেশের জেলা পর্যায়ের প্রায় সব হাসপাতালে ও বিশেষায়িত হাসপাতালে এখন কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা আছে। উপজেলা হাসপাতালে অক্সিজেন আসে সিলিন্ডারের মাধ্যমে। কিছু হাসপাতালে অক্সিজেন জেনারেটর আছে।

প্রশ্ন:

দেশে অক্সিজেনের চাহিদা কত, তার কি কোনো হিসাব আছে? চাহিদার কতটা অক্সিজেন উৎপাদিত আছে, কতটুকু পূরণ হচ্ছে?

এহসানূর রহমান: দেশে চাহিদার কোনো হিসাব নেই। করোনাকালে আমরা জানলাম, কোন রোগীর কী পরিমাণ অক্সিজেন দরকার। কারও প্রচুর অক্সিজেন লাগত, কারও দীর্ঘদিন ধরে অক্সিজেন লাগত। ওই সময়ের চাহিদা স্বাভাবিক নয়। অক্সিজেনের চাহিদার হিসাব পাওয়া কঠিন।

বিশ্বের অনেক দেশই অক্সিজেনের চাহিদার কথা জানে না। কিছু সমস্যার কথা বিবেচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চলতি বছরের মে মাসে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলিতে অক্সিজেন বিষয়ে ২০ দফা প্রস্তাব পাস করে। এতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। সিদ্ধান্তে বলা আছে—প্রতিটি দেশ অক্সিজেন চাহিদা নিরূপণ ও অক্সিজেন প্রাপ্যতার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে।

চাহিদা নিরূপণের জন্য তিনটি তথ্য দরকার হয়। কোন রোগে কত মানুষ ভুগছে, তাদের মধ্যে কত মানুষের অক্সিজেন দরকার, কোন রোগের জন্য কত অক্সিজেন দরকার।

বর্তমানে হাসপাতালগুলো চলতি বছরের অক্সিজেনের চাহিদার ভিত্তিতে পরের বছরের চাহিদার হিসাব দেয়।

প্রশ্ন:

অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে বা সরবরাহ বাড়াতে সরকার অর্থাৎ স্বাস্থ্য বিভাগ কী করছে?

এহসানূর রহমান: কোভিডের আগে ৯৪টি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহব্যবস্থা ছিল। কোভিডকালে গ্লোবাল ফান্ড, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইউএসএআইডি এবং ইউনিসেফ অক্সিজেনব্যবস্থা উন্নতিতে সহায়তা করে। এখন প্রায় সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালে নলের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। অধিকাংশ উপজেলা হাসপাতালেও অক্সিজেনের কোনো না কোনো ব্যবস্থা আছে।

প্রশ্ন:

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অক্সিজেন পরিস্থিতির উন্নতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কী করছে?

এহসানূর রহমান: আমি আগেই বলেছি, ২০২৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যুগান্তকারী ২০ দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশেও বাস্তবায়ন হবে।

২০২৬, ২০২৮ ও ২০৩০ সালে অক্সিজেন পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিটি দেশকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় প্রতিবেদন দিতে হবে। প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্রকে একটি অক্সিজেন রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। কীভাবে তা বাস্তবায়ন করবে, তা–ও স্পষ্ট করতে হবে। বাজেট তৈরির সময় বলতে হবে সরকার কত দেবে, বেসরকারি খাত থেকে কত এবং দাতাদের কাছ থেকে কত অংশ আসবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল লাগবে। এই কমিটি বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে অক্সিজেন সুরক্ষায় অর্থ বিনিয়োগের আহ্বান জানাবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আগে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারলে প্রস্তাবিত তহবিল থেকে সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবে দুই ধরনের গবেষণার কথাও বলা হয়েছে। চাহিদা ও প্রাপ্যতার মধ্যে পার্থক্য বের করতে হবে। দ্বিতীয়ত, উদ্ভাবন বিষয়ে গবেষণা করতে হবে। অক্সিজেন প্রস্তুতি, অক্সিজেন–স্বল্পতা নিরূপণ, অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা, অক্সিজেন ব্যবহার বিষয়ে নানাবিধ উদ্ভাবন হতে পারে। কোভিডের সময় আমরা আইসিডিডিআরবি ও বুয়েটের বিভিন্ন উদ্ভাবন দেখেছি। আইসিডিডিআরবির বাবল সিপাপ অনেক কার্যকর ও  সাশ্রয়ী।

ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ কমিশন মেডিকেল অক্সিজেন সুরক্ষা নিয়ে বিশেষ কাজ করছে। সেই কাজের সঙ্গে আমি ও আইসিডিডিআরবি শুরু থেকে যুক্ত। কমিশনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন তৈরি হবে, তাতে মেডিকেল অক্সিজেনের মোট চাহিদা আর কোথায় কী ঘাটতি আছে, তার উল্লেখ থাকবে। বৈশ্বিকভাবে অক্সিজেন বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উপায় কমিশন ঠিক করবে। এ ছাড়া প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়ে একটি মঞ্চ তৈরি করবে।

এ ছাড়া নতুন মানদণ্ড নির্ধারণে গবেষণা চলছে। এখন যেসব অক্সিমিটার ব্যবহার হয়, সেসবের ট্রায়াল হয়েছে শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর। কালো বা গাঢ় বাদামি ত্বকের মানুষের অক্সিজেন পরিমাপে এসব অক্সিমিটার সঠিক তথ্য দেয় না। অক্সিমিটারের এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে কাজ চলছে।

মেডিকেল অক্সিজেনের ৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধতা প্রয়োজন, নাকি আরও কিছুটা কম হলেও মানুষ একই সুফল পাবে, তা নিয়েও গবেষণা হচ্ছে।

প্রশ্ন:

অক্সিজেন সম্পর্কে মানুষ কতটা সচেতন, এটা নিয়ে আপনাদের কি কোনো পর্যবেক্ষণ আছে?

এহসানূর রহমান: অক্সিজেন জীবনদায়ী ওষুধ। এটিকে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় রাখার কথা উঠছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তাতে সায় আছে। বাংলাদেশেও অক্সিজেনকে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে তা শুধু অ্যানেসথেসিয়ার ওষুধ হিসেবে তালিকাভুক্ত। অথচ নবজাতক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ—সবার নানা জটিল রোগের চিকিৎসায় অক্সিজেনের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই অক্সিজেনকে শুধু অ্যানেসথেসিয়ার ওষুধ হিসেবে না ভেবে নতুন করে ভাবতে হবে।

কারও অক্সিজেন লাগবে শুনলে অনেকে মনে করে, মানুষ মরতে বসেছে। অক্সিজেনকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে কত মানুষকে বাঁচানো যায়, তা আমরা কোভিডকালে দেখলাম। মানুষ এ সময় অক্সিমিটার বা পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করেছে। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ মাপতে শিখেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, অক্সিজেন ও অক্সিমেট্রি বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে হবে।

প্রশ্ন:

স্বাস্থ্য বিভাগ অক্সিজেন বিষয়ে কী উদ্যোগ নিচ্ছে?

এহসানূর রহমান: সরকার অক্সিজেন খাতে বিনিয়োগ করছে। তবে বায়ো-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তেমন বিনিয়োগ দেখা যাচ্ছে না।

সরকার ইতিমধ্যে একটি রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে। এক মাস আগে অক্সিজেনের ব্যবহার নিয়ে একটি গাইড লাইন বানিয়েছে। রোগভিত্তিক অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে গাইড লাইন হচ্ছে। কিন্তু আগামী স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাত কর্মসূচিতে অক্সিজেনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, অক্সিজেন নিয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মকাণ্ড থাকতে হবে।

প্রশ্ন:

প্রয়োজনের অতিরিক্ত অক্সিজেন কি ক্ষতিকর?

এহসানূর রহমান: অক্সিজেন হচ্ছে ওষুধ। যেকোনো ওষুধের ডোজ বেশি হলে যেমন ক্ষতিকর, অক্সিজেনের ক্ষেত্রেও তা–ই। প্রয়োজনের বেশি অক্সিজেন হলে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন—ফুসফুস ও স্নায়ুতন্ত্র স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অক্সিজেন চোখের ক্ষতি করে। তাই অক্সিজেন পরিমাণমতো দিতে হয়। সময়মতো অক্সিজেন দেওয়া যেমন জীবন রক্ষাকারী পদক্ষেপ, সময়মতো বন্ধ করাটাও তা–ই। এ জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও তদারকি দরকার।