অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে ৯ মাসে আমরা দুজন শিক্ষা উপদেষ্টা পেলাম। তাতে শিক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্গতি কতটা কাটল?
মনজুর আহমদ: দুর্গতি কাটেনি। আসলে শিক্ষা কখনোই রাজনৈতিক অগ্রাধিকারে স্থান পায়নি। কথায়-কথায় হয়তো হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। আমাদের অনেক আশা ছিল যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন কিছু উদ্যোগ দেখব, কিন্তু সেটা আমরা দেখিনি। বলতে হবে, হতাশ। শিক্ষার দুই উপদেষ্টা (একজন সাবেক) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা তিনজনই সদিচ্ছাসম্পন্ন লোক, ভালো কিছু করতে চান। কিন্তু সেই উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না। কেন, সেটা বলা মুশকিল। তবে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের একটা অভাব দেখতে পাচ্ছি।
■ আমলাতন্ত্রের ধরনই হলো তাঁরা স্থিতাবস্থায় খুশি। নতুন কিছু হোক, একটা বড় রকমের পরিবর্তন হোক, সেটা হয়তো তাঁরা চান না।
■ আগে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি যাঁরা করতেন, তাঁরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একধরনের নিয়ন্ত্রণ করতেন। এখন তা মবে রূপান্তর হয়েছে।
তাহলে আপনার কি মনে হয়, তাঁরা চান কিন্তু আমলাতন্ত্র বা সংশ্লিষ্টরা সেভাবে সহযোগিতা করছেন না?
মনজুর আহমদ: আমলাতন্ত্রের ধরনই হলো তাঁরা স্থিতাবস্থায় খুশি। নতুন কিছু হোক, একটা বড় রকমের পরিবর্তন হোক, সেটা হয়তো তাঁরা চান না। আবার শিক্ষা নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের যুক্ত করেও শিক্ষার সামগ্রিক বিষয়ে একটা আলাপ-আলোচনার সুযোগ তৈরি করা হয়নি।
নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে হঠাৎ ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে যাওয়া হলো। তাৎক্ষণিকভাবে হয়তো সরকার সেটাই ভালো মনে করেছে। কিন্তু যেহেতু শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে এখনো সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। কী করা হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে কী বলবেন?
মনজুর আহমদ: শিক্ষাক্রম নিয়ে একটা বিভ্রম আছে। সাধারণ একটা ধারণা হলো, নতুন করে শিক্ষাক্রম করলে, সংস্কার করলে শিক্ষার সংস্কার হয়ে যাবে। কিন্তু বড় যে বিষয়টি, সেটি হলো যে শিক্ষাক্রমই থাকুক, সেটির সঠিক বাস্তবায়ন; অর্থাৎ কাজে লাগোনাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেই আমাদের সব সময় ব্যর্থতা। এখনো সেই বিষয়টিই দেখা যাচ্ছে।
কোচিং, প্রাইভেট, নোট-গাইডের প্রভাব তো বেড়েই চলছে। আপনার কী মনে হয়?
মনজুর আহমদ: আসলে স্কুলে ঠিকমতো পড়াশোনা হয় না। অনেকটা বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা গাইড ও কোচিংমুখী। অনেক শিক্ষকেরও এটি একধরনের ব্যবসা হয়ে গেছে। অবশ্য জীবন-জীবিকার কারণেও অনেককে সেখানে যেতে হয়, অতিরিক্ত উপার্জন করতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে এ রকম একটি ব্যবস্থা হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা সমস্যার গোড়ায় যাচ্ছি না, শুধু বলে দেওয়া হয়, কোচিং সেন্টার বন্ধ করো, গাইড বই বন্ধ করো। কিন্তু এটা করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। অনেকে তো নিরুপায় হয়েও এখানে যায়। তাই সমস্যার গোড়ায় যেতে হবে।
বর্তমানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনসহ বিভিন্ন কারণে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। আপনার কাছে এসবের কারণ কী মনে হয়?
মনজুর আহমদ: অস্থিরতা-উদ্বেগ আগেও ছিল। এই যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানটি হলো, এর শুরুটা কিন্তু হয়েছিল শিক্ষা ও চাকরির সমস্যা (চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে) থেকেই। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে কোথায় যাবেন, চাকরি পাবেন কি না, জীবন-জীবিকার সমস্যা—সেটা থেকেই শুরু হয়েছিল। তারপর জনসাধারণের দুঃখ-ক্ষোভ একত্র হয়ে বিরাট আন্দোলন হলো, সরকারের পতন ঘটল। কিন্তু সেই শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েই চিন্তাভাবনা তেমন হচ্ছে না। শিক্ষার সমস্যার সমাধানে সামগ্রিক প্রচেষ্টা হয়নি। এ কারণে সেসব সমস্যা সামনে আসছে, কিন্তু সেসব সমস্যার কথা শোনার কেউ আছে বলে মনে হয় না। শিক্ষকদেরও অভিযোগ, উদ্বেগ, সমস্যা আছে। ফলে যেকোনো উপায়ে সমস্যার দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু কার্যকর সমাধানের দিকে যেতে পারছি না।
তাহলে সমাধানের উপায় কী?
মনজুর আহমদ: আগে তো সমস্যাগুলো বুঝতে হবে, স্বীকার করতে হবে। তারপর কার কী করণীয়, ঠিক করতে হবে। একসঙ্গে সব সমস্যার সমাধান করা যাবে না। ধাপে ধাপে কী করে সমস্যাগুলোর সমাধান করা যাবে, সে রকম সুযোগ বা প্রক্রিয়া তৈরি হয়নি। খণ্ডিতভাবে যাঁর যা সমস্যা, তুলে ধরছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলো, রাস্তায় নেমে না এলে তাঁদের দিকে কেউ দৃষ্টিও দেয় না। ফলে তাঁরা রাস্তায় নেমে আসছেন। তাতে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে, তাঁদের নিজেদেরও দুর্ভোগ হচ্ছে, লেখাপড়ার সমস্যা হচ্ছে। এ রকম অবস্থা অনির্দিষ্ট সময় ধরে চলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাসহ যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, তাঁদের পদক্ষেপ বা প্রতিক্রিয়া যা দেখছি, সেটা মনে হচ্ছে খণ্ডিত। সামগ্রিকভাবে চিন্তাভাবনা করে সম্মিলিত ও সমন্বিতভাবে কিছু করার চেষ্টাও দেখতে পাচ্ছি না।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ছাত্র-শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর একটি আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা হয়েছে। এটা শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করেছে সব সময়। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে আসার অঙ্গীকার এখনো দেখছি না। শিক্ষাকে দলীয় রাজনীতির বাইরে রাখার একটি অঙ্গীকার দরকার। এ জন্য যে কাজটা করা যেত, সেটা হলো সব কটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া যেত। সেটা কেন এত দিনেও হলো না? সেটা করে শিক্ষার্থীদের আলাপ-আলোচনার একটা ক্ষেত্র তৈরি করা যেত।
আপনার নেতৃত্বে তো একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করেছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়...
মনজুর আহমদ: কিন্তু সামগ্রিকভাবে শিক্ষা কমিশন হওয়া দরকার ছিল। শিক্ষা এত বড় একটি খাত এবং বহুমাত্রিক; সুতরাং একটি সামগ্রিক কমিশন হলে সেই কমিশনের আওতায় খাতভিত্তিক আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করা যেত।
আপনাদের কমিটি সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে প্রায় চার মাস হলো। বাস্তবায়ন পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
মনজুর আহমদ: বাস্তবায়নে তেমন উদ্যোগ দেখছি না। কিছু উদ্যোগের কথা গণমাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু সেটা ঠিক আমাদের সুপারিশের আলোকে সামগ্রিক চিন্তাভাবনা করে নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটা বুঝতে পারছি না। কারণ, আমরা কিছু স্ববিরোধিতা দেখছি। সেখানে আমাদের সুপারিশ পুরোপুরি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, সেটা বুঝতে পারছি না এবং সামগ্রিকভাবে বিচার-বিবেচনার প্রক্রিয়া দেখতে পাইনি। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে একটি পিইডিপি নামের একটি কর্মসূচি আছে। এখন পিইডিপি-৫ হবে। কিন্তু সেখানে সুপারিশগুলো কীভাবে প্রতিফলিত হবে, সেই বিষয় আলোচনার দরকার ছিল, কিন্তু তা দেখছি না।
অনেকেই বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখনো পরীক্ষাকেন্দ্রিক, শিখনকেন্দ্রিক নয়। আপনি কি একমত? যদি হন, তাহলে উত্তরণের পথ কী?
মনজুর আহমদ: আমাদের স্কুলগুলোয় ঠিকমতো লেখাপড়া হয় না। এখন কোচিং সেন্টার আর গাইড বই থেকে মুখস্থ করে পরীক্ষা দেওয়া হয়। পরীক্ষার ধরনও সে রকম হয়ে গেছে। মূল্যায়ন ব্যবস্থায় শেখার প্রমাণ দেওয়ার দরকার হয় না। শেখাটা গৌণ হয়ে গেছে।
এখন আবার ইতিমধ্যে বাদ দেওয়া প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা আবারও চালু করার পরিকল্পনা করছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। এটি কি খুব জরুরি? শিক্ষায় এই পরীক্ষা কতটা প্রভাব রাখে?
মনজুর আহমদ: মোটেই প্রভাব রাখে না। এখানে মনে হচ্ছে জনতোষণমূলক কিছু চিন্তাভাবনা আছে। কিন্তু এতে শিক্ষার মানে বা সমতা বিধানে বা শিক্ষার উন্নয়নে এই পরীক্ষা কোনো রকম ভূমিকা রাখে বলে মনে হয় না। কারণ, বৃত্তি পরীক্ষা কারা দেয়, ইতিমধ্যেই যারা একটু ভালো লেখাপড়া পারে, তারা। অর্থাৎ ভালো ছাত্ররা বৃত্তি পরীক্ষা দিয়ে বৃত্তি পাবে, তাতে শিক্ষার মান বা শিক্ষার সমতা বিধানে কী লাভ হলো? বরং আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ক্ষতি হয়।
সামনে আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বলা হচ্ছে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় কম বলেও অভিযোগ আছে। কেমন হলে বরাদ্দ বাস্তবসম্মত মনে করেন?
মনজুর আহমদ: আলোচনা শুনতে পাচ্ছি, এবার আনুপাতিক হারে আরও কমে যাবে। সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে কাটছাঁটের ক্ষেত্র হিসেবে ধরে নিয়েছে। এটা ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। বেশি না বাড়ুক, অন্তত প্রতীকী হলেও একটু বাড়ানো উচিত। শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য অনেক কিছু করতে হবে। এ জন্য শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানো দরকার।
শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা ও আর্থিক সম্মান—দুটো নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ আছে। এই পরিস্থিতির সমাধান, অর্থাৎ মেধাবীদের শিক্ষকতায় আনার জন্য এবং তাঁদের মান-মর্যাদার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে আপনি মনে করেন?
মনজুর আহমদ: এটি হঠাৎ করে করা যাবে না। আমাদের পরামর্শক কমিটি থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে দুই ধরনের সুপারিশ করেছি। একটি হলো, শিক্ষকদের বেতন গ্রেড অন্তত এক ধাপ বাড়িয়ে দেওয়া হোক। আমরা বলেছি, শিক্ষকদের সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবীর সঙ্গে তুলনা না করে আলাদা করে ভালো একটা অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করতে হবে। সেটির জন্য কাজ করতে হবে।
বিগত বেশ কয়েক মাস বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘মব–সন্ত্রাসের’ মতো ঘটনা দেখা গেছে। প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ‘মব–সন্ত্রাস’-এর ঘটনা ঘটেছে। কী বলবেন?
মনজুর আহমদ: আগে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি যাঁরা করতেন, তাঁরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একধরনের নিয়ন্ত্রণ করতেন। তখনো নানা রকমের অপরাধ হতো। এখন তা মবে রূপান্তর হয়েছে। সবাই মিলে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রথম দিকে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলো, সেটি আরেকটু সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চাই। তা হলো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য কমিশন গঠিত হলেও শিক্ষা খাতে কোনো কমিশন হয়নি। আপনার মতে, এর প্রয়োজনীয়তা কতটা?
মনজুর আহমদ: দৃষ্টিভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা দ্বিধায় আছেন। তাঁরা এটা নিয়ে বেশি কিছু বলতে বা করতে চান না বলে মনে হচ্ছে। এটা জটিল সমস্যা। কিন্তু তাই বলে কি একে কার্পেটের নিচে ঢুকিয়ে রাখব? এটাই তো চলে আসছে। এখন শিক্ষাবৈষম্য বাড়ানোর একটা অস্ত্র হয়ে গেছে। শিক্ষা দিয়ে বৈষম্য বাড়ছে। এই ধারায় কি চলব? এখনো সময় আছে সামগ্রিকভাবে শিক্ষা নিয়ে আলোচনার জন্য পরামর্শক দল তৈরি করা। তারা শিক্ষার উপখাত ধরে আলোচনা করবে। আর স্থায়ী শিক্ষা কমিশন দরকার। আর রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে অন্তত সবার জন্য একীভূত ও মানসম্মত বিদ্যালয় শিক্ষা দিতে হবে।
মানসম্মত বিদ্যালয় শিক্ষার জন্য কার্যকর বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থা করা দরকার। স্থানীয়ভাবে পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা ও অর্থায়নের ব্যবস্থা করা দরকার। একসঙ্গে হয়তো সারা দেশে করা যাবে না। কিন্তু শুরুটা করা দরকার। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় কমিউনিটি ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলোর যুক্ত করা দরকার।
দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আপনি অনেকগুলো বিষয় আলোচনা করলেন। তো দেশের সামগ্রিক শিক্ষা খাত নিয়ে যদি তিনটি অগ্রাধিকারভিত্তিক সুপারিশ করতে বলা হয়, আপনি কোন তিনটি বিষয় সামনে আনবেন?
মনজুর আহমদ: প্রথম কথা হলো, শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য তেমন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে না। এটা নিয়ে কিছু অবহেলা করা হচ্ছে। এতে তো আমাদের ভবিষ্যৎকে জিম্মি করে ফেলা হচ্ছে। তাই প্রথমত, সেই স্বীকৃতিটি দরকার যে এটি নিয়ে কিছু করতে হবে। এটা অবহেলা করা যাবে না।
দ্বিতীয়ত, সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শিক্ষাকে দেখতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ভিত্তি তৈরি না করলে কলেজ ও উচ্চশিক্ষায় ভালো করা যাবে না। প্রাথমিকে প্রসার হয়েছে কিন্তু মানের দিক ও সমতার দিক দিয়ে তেমন নজর নেই। মাধ্যমিক স্তর আরও অবহেলিত। বিদ্যালয় শিক্ষা হলো ভিত্তি। এখানে ভালো করতে হবে। না হলে অন্য স্তরে ভালো করতে পারব না।
তৃতীয়ত, শিক্ষকদের কথা ভাবতে হবে। মেধাবীদের শিক্ষায় নিয়ে আসতে হবে, বিশেষ করে বিদ্যালয় শিক্ষায়। শিক্ষকেরা মানুষ গড়ার কারিগর। তাই শিক্ষার্থীদের সামনে তাঁদের মডেল হিসেবে, আদর্শ চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। তার জন্য তাঁদের মান-মর্যাদা দিতে হবে এবং সেভাবে তাঁদের তৈরি করতে হবে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
মনজুর আহমদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।