বিশেষ সাক্ষাৎকার: চার্লস হোয়াইটলি

সুষ্ঠু নির্বাচন হবে ইউরোপে জিএসপি প্লাস অর্জনে সহায়ক

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, ইইউ সবার স্বার্থে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর ইইউর অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা জিএসপি প্লাস পেতে হলে বাংলাদেশকে যেসব শর্ত পূরণ করতে হবে, তার মধ্যে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার অন্যতম। আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে জিএসপি প্লাস পাওয়ায় তা সহায়ক হবে। গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনসহ বাংলাদেশ-ইউরোপের সম্পর্ক, বিনিয়োগ পরিস্থিতি, শ্রম অধিকার ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাহীদ এজাজ

চার্লস হোয়াইটলি

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: এ বছর বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি। প্রায় দেড় দশকের বিরতির পর এবার এসেছেন ভিন্ন পদে কাজ করতে। গত অর্ধশতক আর ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপটে এই সম্পর্ককে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

চার্লস হোয়াইটলি: এক যুগ আগেও আমাদের সম্পর্ক ছিল অনেকটাই উন্নয়ন সহায়তাকেন্দ্রিক। সেটা পেরিয়ে আমরা এখন নতুন পর্বের দিকে এগোচ্ছি। গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ–ইইউ রাজনৈতিক সংলাপ শুরু হয়েছে। নতুন প্রজন্মের সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরমাণু, সন্ত্রাসবাদ দমন, জনগণের মেলবন্ধনসহ নানা বিষয়ে অংশীদারত্বের কথা সেখানে বলা হচ্ছে। আমাদের সহযোগিতার মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সুশাসন আর মানব উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো এখনো আছে। ইইউর বৈশ্বিক উদ্যোগে বা গ্লোবাল গেটওয়েতে সংযুক্তি ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশকে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে ৪৫ কোটি ইউরো দেওয়া হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক একটি রোমাঞ্চকর পর্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই ইইউর সদস্যদেশগুলো থেকে আরও বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এসে বাংলাদেশে বেশি বেশি বিনিয়োগ করুক।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনি বললেন, নানা ক্ষেত্রে এ সম্পর্ক এখন উন্নয়ন সহায়তা থেকে অংশীদারত্বে উন্নীত হওয়ার পথে। এই উত্তরণের পথে চ্যালেঞ্জগুলো কী?

চার্লস হোয়াইটলি: অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে কৌশলগত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাইছি। দ্বিপক্ষীয় ইস্যুর বাইরে গিয়ে আঞ্চলিক বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশ তার ভারত মহাসাগরীয় দৃষ্টিভঙ্গি (আইপিও) ঘোষণা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও ভারত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) রয়েছে। বিদ্যমান ও উদীয়মান শক্তিগুলো প্রতিযোগিতায় চলে আসায় বিশ্ব প্রতিনিয়ত জটিল হয়ে উঠছে। এই বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশেরও সম্পর্ক আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপ সম্পর্ক ভিন্নমাত্রার। আঞ্চলিক বিষয়ে আমাদের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন থাকায় আমরা এ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশের আইপিওতে জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে সমুদ্র ও আকাশপথে অবাধ চলাচলের কথা বলা হয়েছে। বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার প্রতি অভিন্ন মূল্যবোধ আমাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনি বলতে চাইছেন বাংলাদেশের আইপিওর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইপিএসের সাযুজ্য আছে?

চার্লস হোয়াইটলি: বাংলাদেশের আইপিও এ দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রতিফলন। ভারত মহাসাগরীয় মূল্যবোধে এর প্রতিফলন আছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা বড় কোনো পক্ষ নই। একে আমরা বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দেখি। ইইউ বাণিজ্যে বৃহত্তম জোট। আমাদের ব্যবসার বড় সঞ্চরণক্ষেত্র ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর। আমরা চাই আন্তর্জাতিক আইন মেনে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হোক।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ব্যবসার পরিবেশে বড় বিনিয়োগ আনার বিচারে ইউরোপের পরিমাণ সন্তোষজনক নয়। ইউরোপের আরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার কথা বলছেন। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশটা কেমন?

চার্লস হোয়াইটলি: ব্যবসা আর বিনিয়োগের পরিবেশে চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে আমি আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক দুই ক্ষেত্রেই দৃষ্টি দিতে বলব। আনুষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে আমি বিদেশি মালিকানার ওপর বিধিনিষেধের বিষয়টি সামনে আনতে চাই। আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কের যে হার ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের ওপর আরোপ করা হয়, তা–ও বিবেচনায় নিতে হবে। কেউ কেউ আমাকে অনানুষ্ঠানিক বাধার কথাও জানিয়েছেন। সম্প্রতি একজন ব্যবসায়ী ইউরোপ থেকে একটি বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছিলেন। এ জন্য ওই পণ্যের মূল্যের ১০ শতাংশ অর্থ অতিরিক্ত দিতে হয়েছিল, যা তাঁর দেওয়ার কথা নয়। এখানে ইউরোপীয় ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের অভিজ্ঞতা ভালো হলে তা অন্যদের উৎসাহিত করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক দুই ধরনের বাধা অপসারণই জরুরি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশের প্রসঙ্গ এলে আপনারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) এবং প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের (ডিপিএ) কথা বলেন। এ বিষয়গুলোকে কীভাবে দেখছেন?

চার্লস হোয়াইটলি: এ নিয়ে অনেকে বলছেন। সুখের বিষয় হলো, সরকার আমাদের মতামত দিতে বলছে। ডিপিএ নিয়ে আমরা ১৬ পৃষ্ঠার মতামত দিয়েছি। ইউরোপের উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়ে আমরা গর্ব করি। এতে উপাত্ত ও অধিকার দুটোরই ভারসাম্য আনা হয়েছে। সারা বিশ্ব সেটি অনুসরণ করেছে। সরকার আমাদের স্পষ্টভাবেই জানিয়েছে যে সেপ্টেম্বরের আগে তারা ডিএসএতে সংশোধনী আনবে। এ প্রতিশ্রুতিতে আমরা আশ্বস্ত থাকতে চাই। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। কিন্তু এ ধরনের আইনে জনগণের সুরক্ষা ও মানবাধিকারের মধ্যে ভারসাম্য রাখা জরুরি। আমরা একে অন্যের কাছ থেকে শিখতে পারি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: শ্রমিক অধিকারের কথা এলে ন্যূনতম মজুরির প্রসঙ্গটিও এসে যায়। শ্রমিকনেতাদের অভিযোগ, তাঁদের মতামত অগ্রাহ্য করে ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

চার্লস হোয়াইটলি: ন্যূনতম মজুরির পর্যালোচনা দরকার। বিষয়টি ইউরোপের ক্রেতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা যে উৎস থেকে পণ্য নেন, সেখানে ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত হচ্ছে কি না তা দেখা হয়। ন্যায্য মজুরি বলতে দৈনন্দিন ব্যয়নির্বাহের খরচ বোঝায়। গত চার-পাঁচ বছরে তা বাড়েনি। সব পক্ষ বসে বিষয়টি পর্যালোচনা করা দরকার। ইউরোপীয় ক্রেতাদের দিক থেকে ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: রানা প্লাজা ধসের পর কারখানার উন্নয়নে ব্যবসায়ীরা প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন। আপনি বলছেন, মজুরির বৃদ্ধি যৌক্তিক হয়নি। কিন্তু মূল্যস্ফীতি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর ইউরোপের ক্রেতারা কি বাংলাদেশ থেকে কেনা পণ্যের মূল্য যৌক্তিকভাবে বাড়িয়েছেন? এ দুটোরও তো একটি অনিবার্য সম্পর্ক আছে।

চার্লস হোয়াইটলি: বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হবে। প্রতিযোগিতার সময় সামাজিক মানের উন্নতি খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। বাংলাদেশের বহু কারখানার এখন প্লাটিনাম সনদ রয়েছে। মজুরির বিষয়টিকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। আপনি সামাজিক ও পরিবেশগত শর্ত পূরণ করছেন; কিন্তু যাঁদের মাধ্যমে আয় করছেন, তাঁদের ন্যায্য মজুরি দেওয়ার বিষয়টিরও সুরাহা হওয়া বাঞ্ছনীয়। ক্রেতারা বিষয়টা জানেন। মালিক ও ক্রেতাদের একত্রে বসে সেটা করতে হবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: জিএসপি প্লাস পেতে হলে শ্রম অধিকারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে নিশ্চয়?

চার্লস হোয়াইটলি: শ্রম অধিকার জিএসপি প্লাসের অন্যতম প্রধান শর্ত। শ্রম অধিকারের ওপর ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং ইইউর দেশগুলোর দৃষ্টি থাকে। এ জন্যই শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার কথা বলছি। আমরা এতে উৎসাহ বোধ করছি। কারণ, এটা দিয়ে সুস্পষ্ট একটা উত্তরণরেখা পাওয়া যায়। আমরা পরিস্থিতির ধারাবাহিক উত্তরণ চাই।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছেন?

চার্লস হোয়াইটলি: প্রতিটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনার সুযোগ আছে। মানবাধিকার নিয়ে আমাদের যোগসূত্র দীর্ঘদিনের, বিশেষ করে ২০০১ সালের অংশীদারত্ব চুক্তির ধারাবাহিকতায় এর সূত্রপাত। আমরা খোলা মন নিয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা করি। জাতিসংঘের বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ারদের আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বার্তা দিচ্ছে যে খোলা মনে সংবেদনশীল বিষয়ে আলোচনার জন্য তারা তৈরি। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের দিক থেকে এটি ভালো সংকেত।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: জুলাই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য তথ্যানুসন্ধানী দলের বাংলাদেশে আসার কথা। নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরের মতপার্থক্য থাকায় অনেকে মনে করে বিদেশিরা মধ্যস্থতার ভূমিকা নিতে পারে।

চার্লস হোয়াইটলি: ইউরোপ দিবসের সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছি যে আমরা হস্তক্ষেপ বা মধ্যস্থতা করব না। বিদেশি বন্ধু হিসেবে আমাদের বার্তা খুব স্পষ্ট। সরকারসহ প্রত্যেকেই বলে আসছে যে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন একটি লিটমাস টেস্ট।

ইউরোপের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন স্বাধীন। আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করি না। ওরা বাংলাদেশে যে আসবে, তা হবে আস্থা স্থাপনের একটি প্রয়াস। তথ্যানুসন্ধানী মিশন আসবে জুলাইয়ে। প্রায় দেড় শ জনের পূর্ণাঙ্গ মিশন আসাটা ফলপ্রসূ হবে কি না, তারা তার সুপারিশ করবে। আমি আশা করি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই আগ্রহ ও সম্পৃক্ততা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ করতে উৎসাহ দেবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাঁটবে কি না, তা নিয়ে মানুষের কৌতূহল আছে।

চার্লস হোয়াইটলি: আমরা তেমন কিছু ভাবছি না। বাংলাদেশে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষক আসার কথা, এর মাধ্যমেই আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছি। নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকে সহায়তার জন্য আমাদের প্রকল্প আছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে উৎসাহিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নীতি আছে। সুখের বিষয় হলো, বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। আমরাও সবার স্বার্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনি বলছিলেন, শ্রম অধিকার জিএসপি প্লাস পাওয়ার প্রধান শর্ত। জিএসপি প্লাস পেতে হলে বাংলাদেশকে ৩২টি আন্তর্জাতিক সনদ মেনে চলতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের সঙ্গে জিএসপি প্লাসের কোনো সম্পর্ক আছে?

চার্লস হোয়াইটলি: জিএসপি প্লাস পেতে হলে ৩২টি আন্তর্জাতিক সনদ মেনে চলতে হবে। এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। আন্তর্জাতিক এসব সনদ ব্যাপকতর বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আইসিসিপিআর বা নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদটি তার অন্যতম। সেখানে ভোট, নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার কথা আছে। আগামী নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও অবাধ হয়, তাহলে তা বাংলাদেশেকে জিএসপি প্লাস অর্জনের দিকে এগিয়ে দেবে। তবে নির্বাচনই একমাত্র পূর্বশর্ত নয়।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: কেবল সুষ্ঠু নির্বাচনই জিএসপি প্লাস নিশ্চিত করবে না?

চার্লস হোয়াইটলি: না, জিএসপি প্লাসের জন্য অনেকগুলো বিষয় জড়িত। মনে রাখতে হবে, এটি একটি বিশেষ প্রণোদনা প্রক্রিয়া, কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নয়। এ অঞ্চলের কয়েকটিসহ বিশ্বের বহু দেশ এটা পেয়েছে। জিএসপি প্লাসের মাধ্যমে একটি দেশ ইউরোপের বাজারে দুই–তৃতীয়াংশ পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ২০০৭ সালে বাংলাদেশের এক রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে আপনি ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। এবারও আরেক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে ভিন্ন দায়িত্বে এসেছেন। আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

চার্লস হোয়াইটলি: এই সন্ধিক্ষণে আমাদের প্রত্যাশা একটি ভালো নির্বাচন। আমাদের সম্পর্ক ক্রমাগত নিবিড় হচ্ছে। সম্পর্কের বেশ আনন্দময় ও উত্তেজনাকর পর্বে আমরা আছি। রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল। শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

চার্লস হোয়াইটলি: আপনাকেও ধন্যবাদ।