বিশেষ সাক্ষাৎকার: অতুল কেশাপ

লভ্যাংশ ফেরত না পেলে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ কমবে

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অতুল কেশাপ। সম্প্রতি তিনি ঢাকা সফরে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী পরিষদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ঢাকা ছাড়ার আগে দুই দেশের বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ, সম্ভাবনা, ব্যবসার পরিবেশ ও পরিস্থিতি উত্তরণের নানা বিষয় নিয়ে তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাহীদ এজাজ

প্রথম আলো:

এবারের সফরে আপনি একটি উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের এসব আলোচনার পর ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাড়ানোর ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

অতুল কেশাপ: দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাড়ার সম্ভাবনা বেশ ভালো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। তিন বছর ধরে আমাদের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের একটি অত্যন্ত জোরালো ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে যেসব নীতি বিশেষভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয়েছে। তাই আমি মনে করি, এখানে যথেষ্ট সুযোগ আছে।

বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, এখানকার জনগণের মধ্যে অনেক প্রতিভা ও দক্ষতা রয়েছে। এ দেশে ডিজিটাল অর্থনীতি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, আর্থিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ক্ষেত্রের পাশাপাশি বিমাসহ নানা খাতে বিকাশের বিপুল সুযোগ রয়েছে। জ্বালানি খাতে এরই মধ্যে আমাদের মধ্যে জোরালো অংশীদারত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে একটি অন্যতম প্রধান শক্তি বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যবসার এমন সৃজনশীল ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বসেরা। এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে অনেক সম্ভাবনা দেখছেন। ফলে বাংলাদেশ সরকার যদি নীতিগত রূপরেখাগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারে, তবে তা বাংলাদেশের মানুষের প্রকৃতিপ্রদত্ত প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নের প্রক্রিয়া জোরদার করবে।

প্রথম আলো:

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওয়াশিংটন দুর্নীতি দমনসহ বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির বিষয়টি উত্থাপন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ ব্যবসায়ী পরিষদের কাজের অন্যতম বিষয় হচ্ছে ‘বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক এবং স্বচ্ছ ব্যবসায়িক পরিবেশ’ বিকশিত করা। সরকারি পর্যায়ের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির বিষয়টি তুলেছিলেন কি না?

অতুল কেশাপ: যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের নির্ধারিত নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুসরণ করে থাকে। যেকোনো ধরনের অসংগত ব্যবসায়িক কার্যকলাপের জন্য কঠোরতর অপরাধমূলক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়ে থাকে। অনৈতিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। ফলে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো নৈতিকতা, ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্তর মেনে চলে। আমরা মনে করি, এটা আমাদের সমাজের জন্য, প্রতিষ্ঠানের জন্য ও আমাদের সমৃদ্ধির জন্য ভালো। এটি সারা বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ভালো।

প্রতিটি দেশই আলাদা। প্রতিটি দেশ কীভাবে তাদের নিজেদের যাত্রাপথ ঠিক করবে, সেটা তাদের সার্বভৌম বিষয়। তবে নিজেদের ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি স্বচ্ছতার সঙ্গে বিষয়টি অনুসরণ করে থাকি। যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং আইনি বাধ্যবাদকতা নিয়ে আলোচনা করি। কারণ, এটি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এ ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রতিষ্ঠান এখানে আসবে এবং নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ করবে।

প্রথম আলো:

আপনি আরও বেশি বিনিয়োগ দ্রুত আকৃষ্ট করার স্বার্থে নীতিগত রূপরেখার যথাযথ প্রয়োগের কথা বলছেন। নীতিগত রূপরেখা বলতে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন, সেটা কি খুলে বলবেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়তি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কোথায়?

অতুল কেশাপ: বাংলাদেশের বেশ কিছু সম্ভাবনামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের আছে। এটি একটি ক্রমবর্ধমান বাজার ও একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ। এখানে দক্ষ কর্মীর সংখ্যাও বাড়ছে। ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশের সাত লাখ ফ্রিল্যান্স কর্মী রয়েছেন। বাংলাদেশের অনেকগুলো সুবিধা আছে, যা অনেক দেশ পেলে খুশি হতো। কিন্তু এ দেশে ব্যবসা পরিচালনার নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো সে দেশেই বিনিয়োগ করতে চায়, যেখানে ব্যবসা পরিচালনা ও নীতির বিষয়ে অনুমানযোগ্যতা ও স্থিতিশীলতা থাকবে। আমি যদি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী হয়ে থাকি, আমি আমার বিনিয়োগ কমিটির কাছে ফিরে গিয়ে বলব, বাংলাদেশে একটি সুযোগ আছে, যেখানে আমাদের ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা উচিত। মনে রাখতে হবে, এটা ১০ বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা। প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ কমিটি তখন জানতে চাইবে, ব্যবসা পরিচালনার ধরন, নীতি, ও করের পরিস্থিতি কার্যত স্থিতিশীল কি না। কারণ, বিনিয়োগের মৌলিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে ওই সময়কালে এই বিষয়গুলো মৌলিক শর্ত। কাজেই সামগ্রিকভাবে অনুমানযোগ্যতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যটি হলো, সবার জন্য সমান সুযোগের ক্ষেত্র তৈরি। মূলত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও যেন দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো সুযোগ দেওয়া হয়, যাতে তারা বাংলাদেশের জনগণের সমৃদ্ধির পথে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

তৃতীয়টি হচ্ছে ব্যবসা পরিচালনার গতি দ্রুত ও সহজলভ্য করা। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় ব্যবসা পরিচালনার গতি দ্রুততর হলে বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা যাবে। অনেক দেশের সরকারই বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে। কাজেই বাংলাদেশ যদি ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত দিতে পারে, যদি অনুমানযোগ্যতার ওপর কাজ করতে পারে এবং সবার জন্য সমান ক্ষেত্র তৈরিতে কাজ করতে পারে, তাহলে অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রথম আলো:

বাংলাদেশে ডলার-সংকটের কারণে অনেক মার্কিন কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে তাদের বিনিয়োগের লভ্যাংশ নিতে পারছে না। সাম্প্রতিক সফরে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সফরে আপনার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনার পর সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

অতুল কেশাপ: মহামারি থেকে শুরু করে ইউক্রেনের যুদ্ধ–পরবর্তী পরিস্থিতি এবং বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। এই পরিস্থিতির একটি অংশ হলো ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধি, যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ডলার ফিরিয়ে দিয়েছে আর অন্য দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে। আলোচনা থেকে এই ইঙ্গিতই আমি পেয়েছি যে বাংলাদেশ কঠিন সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে ত্রিমুখী ধাক্কা সামলে শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে। আমরা মনে করি, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। আমার ধারণা, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো এটা বুঝতে পারছে।

আমরা শুনেছি যে বিশেষজ্ঞরা এখন বৃহত্তর সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার এবং অন্যান্য নীতি উদ্ভাবনের পথে যাত্রা করেছেন। তাঁরা এমনভাবে চাপ কমিয়েছেন, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সামঞ্জস্য আনতে সাহায্য করতে পারে। আমি মনে করি, প্রতিষ্ঠানগুলো বুঝতে পারছে এ বিষয়গুলো সময়সাপেক্ষ।

 সংকট উত্তরণের যাত্রাপথটা ইতিবাচক ও স্পষ্ট। তবে এতে সময় লাগবে। আমি মনে করি, সবাই বুঝতে পারছে পরিস্থিতির উত্তরণে সময় লাগবে। অর্থনীতিতে ধাক্কাটা এসেছে বাইরে থেকে, যা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কেউ যখন বিনিয়োগের অংশীদার, যে অংশীদারত্বের শুরু ৩০ থেকে ৪০ বছর আগে, যেটা এখানে আলো জ্বালিয়ে রেখেছে, অর্থনীতিতে শক্তি প্রবাহিত করে চলেছে জ্বলছে, অর্থনীতির শক্তি প্রবাহিত হচ্ছে, তখন তারা পরিস্থিতিটা বুঝতে পারছে। তবে তাদের প্রত্যাশা রয়েছে যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পাল্টাবে, বাংলাদেশ সরকার তার দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে। আর এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে এখনো আস্থা রয়েছে। বর্তমান চ্যালেঞ্জের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা ওয়াকিবহাল রয়েছেন, তেমনি সরকার যে গুরুত্বের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন, তার প্রতিও তাঁদের শ্রদ্ধা রয়েছে।

প্রথম আলো:

লভ্যাংশ ফিরিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের আর কতটা সময় অপেক্ষায় থাকতে হবে?

অতুল কেশাপ: নিশ্চয় অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিনিয়োগ নিয়ে ভাবার আছে। তবে একধরনের বোঝাপড়াও তাঁদের আছে আর বাংলাদেশ সরকারও সঠিক পথে এগোচ্ছে। মূল বিষয়টি হচ্ছে, এখানে জ্বালানি খাতে দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা বিনিয়োগ করে আসছেন, তাঁদের আরও অনেক বিনিয়োগের পাশাপাশি একই খাতে নতুন বিনিয়োগকারী আসার অপেক্ষায় আছেন। শুধু গ্যাস নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আসার কথা যুক্তরাষ্ট্র থেকে। কিন্তু বিনিয়োগের লভ্যাংশ ফেরত নেওয়ার বিষয়টি সুরাহা না হলে বাংলাদেশে বাড়তি বিনিয়োগের প্রবাহ শ্লথ হয়ে পড়বে।

তাই আমি মনে করি, যত দ্রুত সম্ভব সরকারের এ সমস্যার সমাধান করা উচিত। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হলে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ আসবে, যা চূড়ান্তভাবে আরও বেশি কর্মসংস্থান ও সুযোগ তৈরি করে দেবে। অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার করবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা অর্থ লগ্নির জন্য তৈরি আছেন। কিন্তু বাংলাদেশে তাঁদের সামনে এ সমস্যা রয়েছে।

প্রথম আলো:

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার করার জন্য শ্রম অধিকার একটি প্রধান বিষয়। বাংলাদেশের বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?

অতুল কেশাপ: শ্রম অধিকার গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশেই এ নিয়ে সমস্যা আছে। আবার শ্রম অধিকারের বৈশ্বিক উদ্ভাবক যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তা পাওয়ার এবং তাঁদের মৌলিক চাহিদা সমুন্নত রাখার অধিকার রয়েছে। তবে সুরক্ষার বিষয়টি সরকারের সার্বভৌম সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। মূল বিষয়টি হচ্ছে আপনি কী পদক্ষেপ নিতে চাইছেন, যা আপনার দেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখে প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেবে আর বিশ্বজুড়ে প্রতিযোগিতামূলক পক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখবে?

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ৬০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের। সুতরাং বিশ্বজুড়ে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য প্রতিযোগিতামূলক হতে চাইলে বাংলাদেশকে জনগণ, বিনিয়োগকারী ও ব্যবসার চাহিদা কী, সেটা বুঝে পদক্ষেপ নিতে হবে। এই যে চাহিদার ক্ষেত্রে জনগণ, বিনিয়োগকারী আর ব্যবসা সব মিলিয়ে যুক্তিসংগতভাবে একটা ভারসাম্যমূলক অবস্থা রেখে এগোতে হবে। আর ভারসাম্য মানে মাঝামাঝি অবস্থানের কথা এলে সব পক্ষকেই ছাড় দিতে হয়, যাতে সবাই যৌক্তিকভাবে সবকিছু পায়।

কাজেই বাংলাদেশ যদি যুক্তিসংগত একটি মাঝামাঝি অবস্থানের জন্য পথ সৃষ্টি করে, তবে তা দেশের জন্য অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। তখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বলবে, বাংলাদেশে শ্রমের পরিবেশ ভালো, যেখানে বিনিয়োগ করা যায়। শিল্পের নীতিগত দিকগুলো সহায়ক, শ্রম, কর, প্রবিধান, আইন—সবকিছুই ঠিক আছে। সরকার যখন সক্রিয় অংশীদার হয়, তখন বিনিয়োগ নিয়ে এগোনো যায়।

প্রথম আলো:

আপনাকে ধন্যবাদ।

অতুল কেশাপ: আপনাকেও ধন্যবাদ