আমি না চাইলেও সরকারের দায়িত্ব খুনের বিচার করা

  • বাংলাদেশে ৫০ বছরে অভিপ্রেতের চেয়ে অনভিপ্রেত ঘটনা বেশি ঘটেছে।

  • জাতি এমনভাবে বিভক্ত যে জাতীয় চেতনাই আর নেই।

  • অর্থনৈতিক উন্নতি দরকার, সঙ্গে দরকার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতি।

  • হুজুগে আন্দোলন দিয়ে রাষ্ট্র, জাতি ও জনগণের কল্যাণ হয় না।

  • উদার গণতন্ত্রের বদলে দরকার সর্বজনীন গণতন্ত্র।

  • দরকার শুভবুদ্ধির উত্থান ও প্রতিষ্ঠা। চাই শুভবুদ্ধির নেতৃত্ব।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক
আবুল কাসেম ফজলুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আহমদ শরীফ অধ্যাপক। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ধারা নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা কতটা এগোলাম?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: গত ৫০ বছরে ভালো–মন্দ নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়েছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এই ৫০ বছরে কী অগ্রগতি হয়েছে, উন্নততর নতুন ভবিষ্যৎ সৃষ্টির জন্য তা সবার বোঝা দরকার। ভবিষ্যতের একটা কল্পচিত্র দরকার, সেই সঙ্গে দরকার অতীত সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলোকে নতুন ভবিষ্যতের অনুকূলে পুনর্গঠিত করা। বাংলাদেশে ৫০ বছরে অভিপ্রেতের চেয়ে অনভিপ্রেত ঘটনাই বেশি ঘটেছে। নানাভাবে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে। জাতিকে এমনভাবে বিভক্ত করা হয়েছে যে জাতীয় চেতনাই এখন আর নেই।

প্রশ্ন :

তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: রাষ্ট্র, জাতি ও জনজীবনের কল্যাণে দরকার জাতীয়তাবোধ, দরকার বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য, দরকার বহুত্বমূলক ঐক্য। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের জন্য বৈচিত্র্যে যেমন গুরুত্ব দিতে হয়, তেমনি গুরুত্ব দিতে হয় ঐক্যে। ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলোর ন্যায় স্বার্থকে পরিপূর্ণ গুরুত্ব দিতে হয়, সেই সঙ্গে সব জনগোষ্ঠীর ঐক্যকেও সমান গুরুত্ব দিতে হয়। জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় ঐক্য সম্পর্কে সব জনগোষ্ঠীকেই সচেতন থেকে কাজ করতে হয়। অর্থনৈতিক উন্নতি দরকার, সেই সঙ্গে দরকার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতি। উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক দল অপরিহার্য। বহুত্ববাদ মানে কী? বহুত্ববাদ দিয়ে জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করা হয়। তা করা হয় সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে। বহুত্বমূলক ঐক্য কথাটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে। ঐক্য বাদ দিয়ে কেবল বৈচিত্র্যে কিংবা বহুত্বে জোর দিলে জাতীয় ঐক্য বা রাষ্ট্র টেকে না। বাংলাদেশকে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা দরকার। তার জন্য জাতীয়তাবাদ এবং তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদ আর সর্বজনীন গণতন্ত্রের আদর্শ অবলম্বন করতে হবে। উদার গণতন্ত্রের নামে যে নির্বাচনতন্ত্র চালানো হচ্ছে, তা জনজীবন, জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়। সর্বজনীন গণতন্ত্রের আদর্শ উদ্ভাবন করে নিতে হবে। সুবর্ণজয়ন্তীতে এ রকম অনেক বিষয় নিয়ে চিন্তার ও কাজের সংকল্প দরকার।

প্রশ্ন :

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে স্বাধীন চিন্তাশীলতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে কি? যদি না থাকে, আপনারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না কেন?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: বাংলাদেশে স্বাধীন চিন্তাশীলতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অল্পই আছে। তার চেয়েও বড় কথা, গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা ও মত তো খুঁজেও পাওয়া যায় না। ১৯৮০-র দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মর্মে কোনো মহৎ চিন্তা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ মত কি খুঁজে পাওয়া যায়? তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হতে জনগণ রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। হুজুগ সৃষ্টির নানা প্রচেষ্টা আছে। হুজুগে আন্দোলন দিয়ে রাষ্ট্র, জাতি ও জনগণের কল্যাণ হয় না। গণজাগরণের জন্য কাজ করা এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন।

প্রশ্ন :

রাজনৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধে যে ধস নেমেছে, তা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: এর জন্য দরকার সমাজসংস্কার আন্দোলন। দরকার নতুন গণজাগরণ। পথ তৈরি নেই, তৈরি করে করে এগোতে হবে। গতানুগতিকতার মধ্য দিয়ে অল্পই সুফল পাওয়া যাবে। সুশীল সমাজ, সংগঠন ও এনজিওগুলো ৪০ বছর ধরে যেসব কাজ করছে, তার মূল্য বিচার দরকার। তাদের রাজনৈতিক ভূমিকার ফল বিচার করে দেখা দরকার। নৈতিক চেতনার জাগরণের জন্য আন্দোলন দরকার। বিবেকবান চিন্তাশীলদের সামনে আসার সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার। ঘুমন্ত জনসাধারণকে জাগানো দরকার।

প্রশ্ন :

জাতি হিসেবে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দীনতা কি আপনাকে পীড়িত করে?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: দারুণভাবে পীড়িত করে। রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, বেগম রোকেয়া, এস ওয়াজেদ আলি, কাজী আবদুল ওদুদ, মোতাহের হোসেন চৌধুরী প্রমুখের সৃষ্ট বৌদ্ধিক ভূমিকার ঐতিহ্য থেকে বাংলাদেশ বিচ্যুত হয়ে পড়েছে। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র পাল, চিত্তরঞ্জন দাশ, সুভাষ বসু, শেরেবাংলা, ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর সৃষ্ট ঐতিহ্য বাংলাদেশ বহন করছে না। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদকে অর্থহীন করে ফেলা হয়েছে। এটা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। শুভবুদ্ধির উত্থান ও বিজয় কাম্য।

প্রশ্ন :

দেশে যে রাজনৈতিক সংকট চলছে, তা কি কেবল নির্বাচনসংক্রান্ত, না আরও কিছু?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: দেশে যে রাজনৈতিক সংকট চলছে, তা অত্যন্ত গভীর। কেবল সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আন্দোলন দিয়ে কোনো সুফল হচ্ছে না। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদ পরিহার করে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে দাবি তোলা হচ্ছে এবং আন্দোলন চালানো হচ্ছে, তার মূল্য বিচারে গেলে দেখা যায় ফল উল্টো হচ্ছে। গভীর রাজনৈতিক চিন্তা দরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক চরিত্র উন্নত করা দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে রাজনৈতিক চিন্তাকে সীমাবদ্ধ রাখার ফল খারাপ হচ্ছে। গভীরে যেতে হবে। নতুন চিন্তার ও নতুন কর্মের ধারা সৃষ্টি করা দরকার।

প্রশ্ন :

আপনি বলছেন প্রচলিত রাজনীতি সংকট দূর করতে পারবে না। তাহলে কোন রাজনীতি পারবে?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: এখানে বলতে পারি, উদার গণতন্ত্রের বদলে দরকার সর্বজনীন গণতন্ত্র বা শতভাগ মানুষের গণতন্ত্র, দলভিত্তিক আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সরকার, পর্যায়ক্রমে সমাধানযোগ্য সব সমস্যার সমাধান, প্রাকৃতিক অসাম্যের অতিরিক্ত মানুষের সৃষ্ট অসাম্য বিলুপ্ত করা, আর্থসামাজিক ও রাষ্ট্রিক উন্নতির স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি অবলম্বন করে জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাজ করা। আমি আমার এক পুস্তিকায় বলেছি, সর্বজনীন গণতন্ত্রের আদর্শ উদ্ভাবন করে নিতে হবে। রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের অনুরাগ সৃষ্টি করতে হবে। রাজনীতি করার জন্য যে যোগ্যতা দরকার, শিক্ষা দরকার, রাজনৈতিক দলের মধ্যে তার ব্যবস্থা রাখা অপরিহার্য। নৈতিক শিক্ষা ও নৈতিক অনুশীলনের ব্যবস্থাও রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে করা দরকার।

প্রশ্ন :

শিক্ষার অধোগতির জন্য দায়ী কে?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: শিক্ষানীতি, শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার অধোগতির জন্য দায়ী যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই সরকার; প্রায় সব রাজনৈতিক দল, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ ও সর্বস্তরের শিক্ষকেরা। এদের সবার দায়িত্ব সমান নয়। যারা যত বেশি ক্ষমতাবান, তাদের দায়িত্ব তত বেশি। পাঠ্যসূচি, পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তককে খারাপ রেখে শিক্ষার উন্নতি সম্ভব নয়। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোরও ভূমিকা আছে। বিশ্বব্যাংক পালন করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কায়েমি স্বার্থবাদীরা জনসাধারণকে শিক্ষা দিতে চায় না, কেবল সার্টিফিকেট দিয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবককে সন্তুষ্ট রাখতে চায়। জ্ঞানেই শক্তি—এ কথাটা সাম্রাজ্যবাদীরা, শাসকেরা ও কায়েমি স্বার্থবাদীরা ভালো বোঝে। এই শক্তিকে তারা নিজেদের হাতে রাখতে চায়, সর্বসাধারণের মধ্যে বিস্তৃত করতে চায় না।

প্রশ্ন :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে আহমদ শরীফ অধ্যাপক করেছেন। আহমদ শরীফ যে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে গেছেন, তা সমাজ গ্রহণ করতে কতটা প্রস্তুত?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: আহমদ শরীফ অধ্যাপক করার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞ। অধ্যাপক আহমদ শরীফ তাঁর জীবনের শেষ সাত–আট বছর ধর্ম সম্পর্কে যেসব কথা বলেছেন, সেগুলো সাধারণ মানুষের ধর্মবোধকে আঘাত করেছে। এটা আমার কাছে ভুল মনে হয়েছে। তখন বিবিসি রেডিওর বাংলা প্রোগ্রাম সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা অনুযায়ী নানা রকম উসকানি দিয়েছে। অধ্যাপক আহমদ শরীফ ছিলেন মানবতাবাদী ও গণতন্ত্রী। সমাজতন্ত্রেও তাঁর আস্থা ছিল। সর্বোপরি তিনি ছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদী, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিকতাবাদী। বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য এবং বাংলা ভাষার দেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে, জনজীবনের জন্য কল্যাণকর সবকিছু নিয়েই তিনি চিন্তা করেছেন, গবেষণা করেছেন, মতপ্রকাশ করেছেন। তাঁর অধিকাংশ মতই রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাঁর স্বাধীন চিন্তাশীলতাকে দলের জন্য ক্ষতিকর মনে করেছে। তিনিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেছেন। ফলে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সমাজও অধ্যাপক আহমদ শরীফের মতামতকে যথেষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করেনি। তবে আহমদ শরীফের চিন্তাধারার অনুরাগী অনেক লোক বাংলাদেশে ও পশ্চিমবঙ্গে আছেন। বাংলা ভাষার দেশে আহমদ শরীফ তাঁর গবেষণা ও মানবতাবাদী চিন্তাধারার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আহমদ শরীফ বিশ শতকের শ্রেষ্ঠ বাঙালিদের একজন।

প্রশ্ন :

জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে দীপনের নিহত হওয়ার পর আপনি বলেছিলেন, আমি বিচার চাই না। কিন্তু দীপন হত্যার বিচার তো এগিয়েছে।

আবুল কাসেম ফজলুল হক: আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই না, এ কথা খুব স্পষ্টভাবেই বলেছিলাম। দীপনকে আর কোনোভাবেই ফিরে পাওয়া যাবে না—এই বোধ আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছিল। আমি আমার সারা জীবনের সাধনার ধারাবাহিকতায় এ–ও বলেছিলাম যে আমি প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করি না। মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহ ও অহিংসার চিন্তা দ্বারা আমি ১৯৮০-র দশক থেকে প্রভাবিত। আমি সেই মুহূর্তে এ কথাও বলেছিলাম যে আমি বিচার না চাইলেও সরকারের কর্তব্য বিচার করা। আমি দীপনের লাশ পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে বলেছিলাম, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দীপন হত্যার বিচার অবশ্যই সরকারের করা উচিত। ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি’ কথাটা তখন অজস্র কণ্ঠে অজস্রবার
ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশ এবং আরও কয়েকটি দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান কেন হলো, তা তলিয়ে দেখতে হবে। শুভবুদ্ধির অভাব ঘটে গেছে সব মহলে। দরকার শুভবুদ্ধির উত্থান ও প্রতিষ্ঠা। চাই শুভবুদ্ধির নেতৃত্ব। আমার এসব কথায় ক্ষমতাসীন দলের উগ্রবাদীরা অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। দীপন হত্যা সংঘটিত হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় ঘোষিত হতে চলেছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বিচারকাজ সম্পন্ন করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট পুলিশ, আদালত ও কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার ধারণা, সরকার সদয় না হলে বিচার হতো না। তবে বিচার শেষ হয়নি, সামনে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ আছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতার কথা বলছেন। তিনমুখী শিক্ষাকে একমুখী করার কোনো উপায় আছে বলে মনে করেন?

আবুল কাসেম ফজলুল হক: বাংলাদেশের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখী করা উচিত। একমুখী শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য থেকেও নানামুখী চিন্তা ও নানামুখী কাজ দেখা যাবে। গত চল্লিশ বছরের মধ্যে শিল্পনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকে এত জটিল করে ফেলা হয়েছে যে এর সংস্কার সাধন কঠিন কাজ। কঠিন মানে অসম্ভব নয়। শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখী করা যাবে এবং করতে হবে। রাষ্ট্রীয় সব ব্যবস্থাকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে রেখে কেবল শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নত করা যাবে না। রাজনীতিকে দুর্নীতিমুক্ত ও উন্নত করতে হবে, সেই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা এবং অন্য সব ব্যবস্থাকেও উন্নত করতে হবে।