জনপ্রিয় দাবির প্রতি সাড়া দিয়েছে সরকার

ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শাহবাগে আন্দোলন।ফাইল ছবি।
দেশে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন সমাজতাত্ত্বিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক
ড. জিয়া রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির মধ্যে কোনো নতুন বৈশিষ্ট্য দেখেন?

জিয়া রহমান: আপাতদৃষ্টিতে মনে হলেও নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নতুন প্রবণতা নয়। শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এটা লক্ষ করবেন। আমাদের মতো অনুন্নত বিশ্ব হচ্ছে সামাজিক সমস্যার পরীক্ষাগার। যখন একটা সামাজিক সমস্যার খবর গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আসে, এরপর থেকেই মনে হয় যে এটা হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে তা নয়। আগে হয়তো এ ধরনের খবর কম বের হতো। একটা ঘটনা যখন চাঞ্চল্য তৈরি করে, তখন খবরগুলো গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে আসতে থাকে, তা সেটা যত ছোটই হোক আর দেশের যে প্রান্তেই ঘটুক। কিছুদিন পর আবার নতুন ঘটনা আসে এবং সে বিষয় মানুষের দৃষ্টি কাড়ে।

এ ছাড়া যারা মনস্তাত্ত্বিকভাবে এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তারা একটা খবর জেনে উৎসাহিত বা প্রভাবিত হতে পারে। আরেকটি কারণ, আমরা হয়তো অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নত হচ্ছি, কিন্তু সেই তুলনায় সামাজিক জায়গায় পরিবর্তনটি আসেনি; সমাজকাঠামো এখনো সনাতনি পুরুষতান্ত্রিক রয়ে গেছে। আর সাধারণভাবে মানুষের মনস্তত্ত্ব উন্নত হচ্ছে না।

অধ্যাপক জিয়া রহমান

প্রশ্ন :

রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলোর মধ্যে যে বিভাজন এবং ন্যূনতম ঐক্যের অভাব, নৃশংস অপরাধ বৃদ্ধিতে তার কোনো যোগসূত্র দেখতে পান?

জিয়া রহমান: না। এটার যোগসূত্র আছে বলে আমি মনে করি না—বিষয়টি সামাজিক। এর ব্যাখ্যা সমাজতাত্ত্বিক, সমাজ-মনোবৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিক–অর্থনৈতিকভাবেই পাওয়া সম্ভব। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমাদের মতো সনাতনি সমাজকাঠামোর মধ্যেই এই অনাচার লুকিয়ে আছে। ক্ষমতার সম্পর্কের মধ্যে আঁতাত, বৈষম্য ও দ্বন্দ্ব সব সময় ছিল। এসব নতুন নয়। ধর্ষণ আগে কমে গিয়েছিল রাজনৈতিক দলের মধ্যে সুসম্পর্কে, এটা বলা যাবে না। সুতরাং এর মধ্যে কোনো সরাসরি সম্পর্ক আমি দেখি না। যদিও এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো গবেষণালব্ধ সমীক্ষা নেই।

অবশ্য কোভিড-১৯ এবারে একটা চাপ তৈরি করেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিভিন্ন দিকে ব্যস্ত থাকার কারণে অপরাধীরা এ সুযোগটি নিচ্ছে। ক্রিমিনোলজিতে একটা থিওরি আছে। যখন অনুকূল সুযোগ আসে, অপরাধীরা তখন তার সেই সুবিধা গ্রহণ করে। কিন্তু আপনি যে বৃহত্তর যোগসূত্রের কথা বলছেন, সেটা খুঁজে দেখা অনেকটা জোর করে দেখা।

প্রশ্ন :

নারী নির্যাতন দমন আইনে আগে সাতটি ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল। এখন ধর্ষণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হলো। এরপরও অপরাধের ব্যাপকতা কেন কমছে না?

জিয়া রহমান: ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার সংস্কার এবং সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বাহনসমূহ আধুনিকায়ন করে এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত বিভিন্ন দল, সংগঠনসহ সমাজের একটা বড় অংশ বুঝে না বুঝে মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলেছিল। এ ক্ষেত্রে তারা অ্যাসিড–সন্ত্রাস বন্ধ হওয়াকেও একটা উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছিল। সরকার জনমতের কথা চিন্তা করে দ্রুত কাজটি করে ফেলেছে।

ধর্ষণের প্রতিবাদে কালো কাপড়ে চোখ ঢেকে ও মুখে শিকল বেঁধে এক শিক্ষার্থীর প্রতিবাদ।
ফাইল ছবি।

প্রশ্ন :

রাষ্ট্রযন্ত্র অপরাধ দমনে অনেকটাই অপারগ। এ জন্য এক দশক ধরে যারা ক্ষমতায়, তারা কী করেছে, সেটা বিশেষভাবে মূল্যায়নের কি দাবি রাখে?

জিয়া রহমান: এটা একটা জনপ্রিয় ধারণা। আমি একজন সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে বলব, এসব নেতিবাচক উপাদান কিন্তু সমাজের মধ্যে রয়েছে। এই সংকট বা অপারগতা, সেটা যে শুধু ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সংকট, তা বলা যাবে না। অন্য দলে গণতন্ত্র থাকলে আমি বলতে পারতাম যে ক্ষমতাসীন দল বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। আমি যদি জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার রাজনীতি ও শাসন না দেখতাম, তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। আর সাধারণভাবে যেকোনো সমস্যাই সরকারকে আমলে নিয়ে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে, এটা ধ্রুব সত্য; এই দায় তাদের আছে। অন্যদিক থেকে বিচার করলে এটা মূলত আদর্শিক বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পৃথিবীর সব দেশেই দেখা যায় রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলের শাসনের সময় নারী, শিশু, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনিরাপদে থাকে। আওয়ামী লীগ তো একটা উদারনৈতিক দল, আর তারা তো নারীবান্ধব সরকার। তবে তাদের তথাকথিত নেতা–কর্মীদের ব্যাপারে কঠোর হতে হবে।

প্রশ্ন :

দুর্বল আইনি শাসনে নারী অপেক্ষাকৃত বেশি দুর্বল আর সবলের অত্যাচারটা বেশি। নারী নির্যাতন দমন আইনে দণ্ডিতের সংখ্যা ৩ শতাংশে তার ছাপ দেখতে পান?

জিয়া রহমান: অবশ্যই। এটা উদ্বেগজনক চিত্র এবং আমি পাঁচ বছর ধরেই বলছি, আমাদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে সেকেলে। সবাই ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার বহন করছে। ইউএনডিপি কিছু সংস্কারের কথা বলেছিল। বাস্তবে সেটা কতটা কী ঘটেছে? উন্নত বিশ্বে পুলিশ হলো একটা সেবার অংশ। আর আমাদের এখানে এখনো এটা রয়ে গেছে পুলিশ ফোর্স।

আমরা কিছু ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার খুলেছি বটে, কিন্তু প্রসিকিউশনের যেভাবে ভিকটিমের সমর্থনে দাঁড়ানোর কথা, সেটা একেবারেই অনুপস্থিত। অথচ এর প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের কথা ছিল। আমরা সেটা পারিনি। ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা, পুলিশ, প্রসিকিউশন ও কারাগারের ব্যাপক সংস্কার না আনলে এ থেকে উত্তরণ ঘটার সম্ভাবনা কম।

প্রশ্ন :

গত এক দশকের সংস্কারচেষ্টাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

জিয়া রহমান: এ বিষয়ে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজ উদাসীনই থাকছে। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কখনো এ বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। ঐতিহাসিকভাবেই দলীয়করণ সংস্কৃতির একটা বিস্তার ঘটেছে। নাগরিক সমাজ বিক্ষিপ্তভাবে কিছু কাজ করলেও তাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। ভুক্তভোগীরা যে ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না, সেটা মূলত তদন্ত ও বিচারব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে।

সমাজব্যবস্থা একটা যুগসন্ধিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং পুরোনো যে সংস্থাগুলো একটা সামাজিক নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করত, সেসব সেকেলে হয়ে পড়েছে। পারিবারিক মূল্যবোধে তথাকথিত শিল্পায়ন, নগরায়ণ ও আধুনিকায়নের প্রভাব পড়েছে। বিশ্বায়ন এবং প্রযুক্তির বিপ্লব মাদক ও পর্নোগ্রাফির মতো ভয়ংকর সমস্যার বিস্তার ঘটিয়েছে। সামাজিক আবেদন যে প্রতিরোধ গড়ত, সেটা এখন নিস্তেজ। তরুণ প্রজন্ম বিরাট সংকটে। সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলা, কমিউনিটি কার্যক্রম থেকে একেবারেই দূরে সরে গেছে। তরুণেরা জঙ্গিবাদ ও মাদকাসক্তির মতো পরিবেশে পড়েছে। তারা উপযুক্ত সংগঠন পাচ্ছে না। স্কুল-কলেজে তারা নৈতিক শিক্ষাও পাচ্ছে না। এসব জায়গায় আমরা খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি।

প্রশ্ন :

১৯৯৫ সালে সরকার ‘বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড’ বিধান করে (২০০০ সালে বাতিল) ‘ধর্ষণের মাধ্যমে হত্যা’ থামাতে পারেনি। এখন ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া কি রাষ্ট্রের পক্ষে চেনা পথে হাঁটা?

জিয়া রহমান: আমি আপনাকে হলফ করে বলতে পারি, আমাদের নাগরিক সমাজ কিন্তু এই জায়গায় আছে। এমনকি নারীবাদীদের একটা বড় অংশও এ রকমের দাবি তুলেছিল। একটা জনমত তৈরি হয়েছে। আপনাদের প্রথম আলোর অ্যাসিডবিরোধী কার্যক্রমের উদাহরণ দিয়ে অনেকে বলার চেষ্টা করেন যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়ার কারণে অ্যাসিড-সন্ত্রাস কমে গেছে। যদিও এই দুইয়ের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা আমার জানা নেই।

সে জন্য আমি বলেছি, এটা একটা সনাতনি সমাজ, মুখে যা–ই বলি, এর ভেতরে বড় পরিবর্তন আসেনি। অনেক বিখ্যাত লোকের টিভি ফুটেজ পাবেন। তাঁরা মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলেছেন। একটা আবেগের জায়গা সমাজের মধ্যে আছে। আবার দেখবেন, তাঁরা ভেবেছিলেন যে সরকারের ওপর তাঁরা একটা চাপ প্রয়োগ করবেন। এখন যে–ই সরকার দাবি মেনে নিয়েছে, তখন অনেকে এ বিষয় থেকে সরে এসেছেন। তবে আমি মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নই। আধুনিকতা, বিচারব্যবস্থা এবং মানুষের অধিকারের সঙ্গে এটা যায় না।

প্রশ্ন :

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

জিয়া রহমান: প্রথমত, এটা নাগরিক সমাজের নিরঙ্কুশ ব্যর্থতা। ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ বলে মার্টিন লুথার কিং শুরু করেছিলেন বলেই কিন্তু আমেরিকায় কালোদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে নারীর অধিকার, শিশুদের অধিকার, সংখ্যালঘুদের অধিকার, বাসযোগ্য পরিবেশের অধিকার—সবই কিন্তু সামাজিক আন্দোলনের কারণে হয়েছে। আর এগুলো কিন্তু বিশুদ্ধ সাংস্কৃতিক আন্দোলন, সেটা বুঝতে হবে। তাই নারী ভিকটিমের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। অন্যদিকে হারিয়ে যাওয়া শাশ্বত প্রতিষ্ঠানেরও বিকল্প তৈরি করতে হবে। যেমন এখন মা–বাবা দুজনই চাকরি করছেন, তাই দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিবারের বিকল্প হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে। হারিয়ে যাওয়া পারিবারিক মূল্যবোধ এই দিবাযত্নে লালন করা যেতে পারে। নৈতিক শিক্ষায় জোর দিতে সামাজিক নেতৃত্বকে সজাগ হতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান সরকারকে বলব, বিদ্যমান ফৌজদারি বিচারব্যবস্থাকে যদি আপনি আধুনিক না করতে পারেন, তাহলে সর্বোচ্চ শাস্তি করলেও দণ্ডিতের হার ২-৩ শতাংশই থেকে যাবে। অবস্থা বদলাবে না। ভিকটিম বিচার পাবে না। এক-এগারোতে আমরা কারাগার সংস্কারের কথা শুনেছিলাম, কিন্তু তারপর?

প্রশ্ন :

অপরাপর দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে কোনো পরামর্শ?

জিয়া রহমান: উন্নত বিশ্বে কারাগারকে বলা হচ্ছে কারেকশন সেন্টার বা সংশোধনকেন্দ্র। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা ধারণ করে তা শুরু করলেও বাস্তব অবস্থা ভয়াবহ; বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো জেল বা কারাগারই রয়ে গেছে।

শেষ করব সিজার বেকারিয়াকে (১৭৩৮-১৭৯৪) দিয়ে। ইতালীয় এই বিশেষজ্ঞকে বলা হয় ক্রিমিনোলজির জনক। সেই ১৭৬৩ সালে তিনি অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ও রিমান্ডের মতো প্রথাকে রদ করতে বলেছেন। সে কারণে আমরা দেখি, তাঁর পরামর্শ মেনে পাশ্চাত্যের দেশগুলো ধীরে ধীরে এ ধরনের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। এখন আমরা যদি আড়াই শ বছর পরে এসে মৃত্যুদণ্ড প্রথা আরোপ করি, তাহলে তার দায় সবাইকে নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ সমাবেশে গিয়েছি, দেখেছি, বহু বিশিষ্ট নারী শিক্ষক মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তির পক্ষে মুখর। টিভির টক শোগুলো শুনুন। শুনবেন, মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বলেই অ্যাসিড–সন্ত্রাস কমেছে। একটা সমাজে এভাবে আবেগপ্রবণ মন্তব্য করলে হবে না। আপনি গবেষণার কথা বলছেন। একটি রাষ্ট্রে এর প্রয়োজন অপরিসীম। আমি ২৮–২৯ বছর এই ক্ষেত্রে কাজ করছি, তাই একটা অভিজ্ঞতা ও বিশ্লেষণাত্মক জায়গা থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলাম। যদি স্বাধীন সংস্থাকে গবেষণা করতে দেওয়া হয়, তাহলে তার ফলাফলের ভিত্তিতে নীতি নির্ধারণ সহজ হয়। তখন আর সংকীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাদানুবাদের দরকার পড়ে না।

প্রশ্ন :

এখন সবে অধ্যাদেশ হয়েছে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবেন কি, যাতে তারা আইন না করে?

জিয়া রহমান: আমি সেটা জানাব না। কারণ, তারা তো একটা জনপ্রিয় দাবির প্রতি সাড়া দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমি তো সংখ্যালঘু। সরকারকে তো জনমত নিয়েই চলতে হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে এটা সামাজিক কাঠামোর মধ্যে আছে। ক্রসফায়ারও একই কারণে টিকে আছে। এটা একটা প্রহসন। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ, সমাজে সমীক্ষা চালালে একটি বড় অংশ ক্রসফায়ার সমর্থন করবে। একেই আমি বলি পরিহাস। আমার যুক্তি হলো, ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু মোটামুটি ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। যদি এমন শোনায় যে আমি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছি, তাহলে সেটা সঠিক বার্তা পৌঁছাবে না এবং সেটা একটা সাংস্কৃতিক আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক আন্দোলনের দিকে চলে যাবে। সমাজের ভেতরে এর পক্ষে জনমত আছে, সরকার একে একটা সাফল্য হিসেবে নিয়েছে।

আমার কথা হলো ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় আমূল সংস্কার লাগবে। ক্ষমতাসীন দলকেই এটা করতে হবে; কারণ তারা ক্ষমতায়। একই সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও এ বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

জিয়া রহমান: ধন্যবাদ।