সেচের জন‍্য খাল খননে আজীবন বাধা, দেখার কেউ নেই?

প্রথম আলো পত্রিকার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩–এর ৬ নম্বর পাতায় ‘চলনবিলের খাল কেনাবেচা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে। প্রতিবেদনটি একাধিক কারণে আমার মনোযোগ আকৃষ্ট করেছে। খাল কাটা হয় না, এমনটা বাংলাদেশের কোথাও নেই। কাদামাটিতে খালের তলদেশ ভরে গেলেই সরকারি–বেসরকারি উদ্যোগে খাল কাটার প্রচলন বহুদিন আগে থেকেই। কৃষকদের জমি চাষাবাদের জন্য এটি করতে হয়।

কিন্তু খাল কাটতে গিয়ে যত ফ‍্যাসাদ! চলন বিলে হচ্ছে কী! বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের কাটা খাল জবর দখলে নিচ্ছেন প্রভাবশালী মানুষেরা। পানি শুকিয়ে পরে লিজ দিচ্ছেন অন‍্যদের। ফলে খাল কাটার মূল উদ্দেশ্য হলো ব‍্যাহত, অর্থাৎ সেচের পানি থেকে বঞ্চিত কৃষকেরা। সেচকাজ ব্যাহত হওয়ায় উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে।

সবাই জানে এটা অবিচার। তবে এটা একপ্রকার মাস্তানি। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান একটা প্রকল্পে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার একটা খাল কাটাই সম্ভব হয়নি। সমস্যার প্রকৃতি একই। অবৈধভাবে দখলে রাখা। অবৈধভাবে নামজারি করিয়ে সরকারি জমি ব‍্যক্তিমালিকানাভুক্ত করা। কী দাঁড়াল? ঠিকাদারের খননযন্ত্র তছনছ করে ফেলে দিল। কী করবে ঠিকাদার? প্রয়োজনীয় বরাদ্দ হাতে আছে। তারপরও কাজ বন্ধ রাখতে হলো। হায় রে দেশের শাসনব‍্যবস্থা!

পানি উন্নয়ন বোর্ড কার বিরুদ্ধে মামলা দেবে এখন? জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে? কী ফল তাতে? শেষ পর্যন্ত খাল কাটা আর হলো না। ভুক্তভোগী কৃষকেরা হলেন সেচ–সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে সেচের পানির অভাবে ফসল উৎপাদনও ব‍্যাহত হলো।

আবদুল জলিল
চাখার, বানারীপাড়া, বরিশাল
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,
পানি উন্নয়ন বোর্ড