বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ অনুসারে, দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষকেরা সহকারী প্রধান শিক্ষক (ক্যাডার পদ-৯ম গ্রেড) হয়ে যেতেন পাঁচ বছর পর। সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক (ক্যাডার-ষষ্ঠ গ্রেড) হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অর্থাৎ আগে পদ ছিল তিনটি। সহকারী শিক্ষক (নন-ক্যাডার), সহকারী প্রধান শিক্ষক (ক্যাডার) ও প্রধান শিক্ষক (ক্যাডার)।
কিন্তু আবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা-২০২১ অনুযায়ী, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটা নতুন পদ ‘সিনিয়র শিক্ষক’ পদ সৃষ্টি করা হয়, যাতে উল্লেখ করা হয় সহকারী শিক্ষকেরা সাত বছর পর সিনিয়র শিক্ষক (৯ম গ্রেড, নন–ক্যাডার) হবেন। এবং এই বিধির আলোকে ওই সময় অনেক শিক্ষককে সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
কিন্তু ২০২১ সালের সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের বিধিতে উল্লেখ নেই যে ‘সিনিয়র শিক্ষক’ পদোন্নতিতে কোথায় যাবেন। অর্থাৎ কোনো সুস্পষ্ট বিধি নেই যে কীভাবে সিনিয়র শিক্ষক থেকে সহকারী প্রধান বা প্রধান শিক্ষক হবেন। যে কারণে সিনিয়র শিক্ষকেরা এখনো সহকারী প্রধান বা প্রধান শিক্ষক পদে যেতে পারছেন না।
পরিকল্পিতভাবে এই সমস্যা হওয়ায় বাংলাদেশের যত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, প্রায় সব কটিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের পদ খালি। স্কুলগুলো চলছে বছরের পর চলতি দায়িত্ব বা ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান ও প্রধান শিক্ষক দিয়ে। প্রশাসনিক পদগুলো ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলায় দেশের সব কটি সরকারি মাধ্যমিক স্কুল চলছে এক অরাজকতা তথা বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে।
আবার সহকারী শিক্ষকদের ও সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রায় বন্ধ।
এখন আমাদের সমস্যাগুলো আরও তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে এই বিধির বেড়াজালে পড়ে। একটি স্থায়ী বিধি হতে পারে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের মুক্তি, যেখানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রি পদ ‘৯ম গ্রেড’ ধরে কীভাবে সিনিয়র শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক অর্থাৎ চার স্তরবিশিষ্ট পদসোপান উল্লেখ থাকবে।
বেনজীর আহমেদ সহকারী শিক্ষক (ভৌত বিজ্ঞান), রাজার বাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়