টিকফা ও যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী কৌশল

noname
noname

টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের হাত মোচড়ানো ক্রমশই বাড়িয়ে চলেছিল মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই। তখন ওই চুক্তির নাম ছিল টিফা (TIFA—Trade and Investment Framework Agreement)। বাংলাদেশকে টিফা চুক্তি গেলানোর প্রয়াস শুরু হয়েছিল আরও কয়েক বছর আগে থেকে। একই সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি চাপানো হয়েছে আরও বহু উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের ওপর। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দোহা ডেভেলপমেন্ট রাউন্ড ২০০২ সালে চালু হওয়া সত্ত্বেও ১১ বছর ধরে তর্ক-বিতর্ক-ঝগড়া-বিরোধের জটাজালে আটকে থাকায় সদস্যদেশগুলো ‘গ্যাট ১৯৯৪’ চুক্তির অনেকগুলো একতরফা বিধিবিধান বাস্তবায়নের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারছে না।
আর ওই একতরফা বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও শিল্পোন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলো অন্যায়ভাবে সুবিধা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তৃতীয় বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে দোহা রাউন্ডের সাম্প্রতিক মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিটি আলোচনা অধিবেশনে। তাই যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের অন্যায় সুবিধাগুলো দ্বিপক্ষীয় চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে কূটকৌশল হিসেবে টিফা চুক্তি স্বাক্ষরের এজেন্ডা গ্রহণ করেছে। মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২০০৩ সালে টিফা চুক্তির খসড়া বাংলাদেশের বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ধরিয়ে দিলেও ওই খসড়ার বিভিন্ন ধারা অগ্রহণযোগ্য মনে হওয়ায় তারা কালক্ষেপণের কৌশল নিয়েছিল। ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারও ওই চুক্তি স্বাক্ষর পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে দেয়।
অতএব বর্তমান সরকারের ঘাড়েই বর্তেছে এই মার্কিন বোঝাটা। শুরু হলো খসড়া নিয়ে চিঠি চালাচালি। একপর্যায়ে দুই পক্ষ একমত হলো, টিফার পরিবর্তে টিকফা নাম দিলে তিক্ত বড়িটায় কিছুটা ‘সুগার-কোটিং’ দেওয়া হবে। টিকফার পুরো নাম Trade and Investment Co-operation Framework Agreement। ‘সহযোগিতা কাঠামো চুক্তি’ নামের মধ্যে দুই পক্ষের আলাপ-আলোচনায় সমমর্যাদা ও সম-অধিকারের আবহটা ফুটিয়ে তোলাই উদ্দেশ্য, কিন্তু চুক্তিটা ‘সুগার-কোটেড’ তিক্ত বড়িই রয়ে গেছে বাংলাদেশের জন্য।
কেন, তা বোঝার চেষ্টা করা যাক:

এক
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য টিকফা স্বাক্ষরের বড় আগ্রহের কারণ নিহিত রয়েছে ‘গ্যাট ১৯৯৪’-এর অন্তর্ভুক্ত ট্রিপস চুক্তির বাস্তবায়নের আগাম বাধ্যবাধকতা সৃষ্টির মধ্যে। স্বল্পোন্নত দেশ বলে বাংলাদেশের জন্য ট্রিপস চুক্তি বাস্তবায়ন ২০২১ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একচেটিয়া সুবিধাজনক, তাই ট্রিপস চুক্তিটা তারা ‘গ্যাট ১৯৯৪’ চুক্তিসমূহের মধ্যে জোরজবরদস্তি করে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এমনকি ১৯৮৬ সালে যখন উরুগুয়েতে গ্যাট-সম্পর্কিত অষ্টম রাউন্ডের আলোচনা শুরু হয়েছিল, তখন আলোচ্যসূচিতে এ বিষয়টির উল্লেখও ছিল না। নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্র ‘ডাঙ্কেল ড্রাফট’ সম্প্রসারিত করে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের সামনে বাণিজ্য-সম্পর্কিত বা ট্রেড রিলেটেড কথাটি যোগ করে অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্রেড-রিলেটেড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (টিপস) গ্যাট ১৯৯৪ চুক্তির চূড়ান্ত দলিলে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য করে, যেটাকে তখনকার রাজনৈতিক বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের একাধিপত্য বলা চলে। কারণ, ১৯৮৬ সাল থেকেই প্যারিসে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশন বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব পালন করে আসছিল এবং ট্রিপস চুক্তিটি প্রধানত মার্কিন স্বার্থে গৃহীত একটি একতরফা চুক্তি। যাবতীয় আবিষ্কার, উদ্ভাবন, প্রকাশনা, রচনা, গান, সিনেমা, টিভি ইত্যাদির মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ করার জন্য পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক, এক্সক্লুসিভ ব্যবহার-অধিকার ইত্যাদির আইনি কাঠামোকে আরও শক্ত করা এবং এগুলোর লঙ্ঘনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে ট্রিপস চুক্তিতে। অথচ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি নকল করা, পাইরেসি, কাউন্টার ফিটিং, রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি প্রক্রিয়া বহুল প্রচলিত। খোদ যুক্তরাষ্ট্র ঊনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ব্রিটেন ও জার্মানি থেকে প্রচুর প্রযুক্তিজ্ঞান চুরি করেছে। জাপান, চীন, কোরিয়া, রাশিয়া—সবাই এই মহাজনি পন্থা অনুসরণ করেছে প্রযোজনমাফিক। অথচ প্রযুক্তিজ্ঞান বিস্তারকে নিজেদের একক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য এখন যুক্তরাষ্ট্র ট্রিপস চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলোকে ২০২১ সালের আট বছর আগেই বাংলাদেশে প্রয়োগের উদ্দেশ্যে টিকফা চুক্তিকে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। এটা বাংলাদেশের জন্য স্বার্থহানিকর হবেই বলা বাহুল্য। সময় থাকতে সাবধান!

দুই
টিকফা চুক্তিতে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বিপদ লুকিয়ে রয়েছে সেবা খাতসমূহে। গ্যাট ১৯৯৪-এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত গ্যাটস বা জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অব ট্রেড ইন সার্ভিস বাস্তবায়নও আটকে রয়েছে দোহা রাউন্ডের গ্যাঁড়াকলে। তাই গ্যাটসের ১২টি সেবা খাতে সহজে এ দেশে ঢুকতে পারছে না শিল্পোন্নত দেশগুলো। এই ১২টি সেবা খাত হলো ব্যবসায় সেবাসমূহ (পেশাগত ও কম্পিউটারসহ), যোগাযোগ সেবাসমূহ, নির্মাণ ও প্রকৌশল সেবাসমূহ, বণ্টন ও বিতরণ সেবাসমূহ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ-সম্পর্কিত সেবাসমূহ, আর্থিক খাত (ব্যাংকিং ও বিমা), পর্যটন ও ভ্রমণ-সম্পর্কিত সেবাসমূহ, বিনোদন, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া-সম্পর্কিত সেবাসমূহ, পরিবহন সেবাসমূহ এবং অন্যত্র অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন অন্য সেবাসমূহ। টিকফা স্বাক্ষরিত হলে উল্লিখিত সেবা খাতসমূহে মার্কিন কোম্পানিগুলো সহজ শর্তে পুঁজি বিনিয়োগে বাংলাদেশকে রাজি করানোয় চাপ প্রয়োগ করতে পারবে।

তিন
টিকফার নামের মধ্যেই ‘বিনিয়োগ সহযোগিতা’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেটা আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মার্কিন বহুজাতিক তেল ও গ্যাস কিংবা কয়লাখনি উন্নয়ন কোম্পানিগুলোর পক্ষে দর-কষাকষির জন্য টিকফাকে অপব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশের সদ্য লব্ধ সমুদ্রসীমায় খনিজ অনুসন্ধান ব্লকগুলোর ওপর মার্কিনদের বিশেষ নজর রয়েছে।

চার
টিকফাতে নন-ট্যারিফ বা অশুল্ক বাধাসমূহ অপসারণের জন্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ব্যবস্থা থাকবে বলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ নিহিত রয়েছে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে শুল্ক-বাধা অপসারণের বিষয়টিতে। টিকফাতে শুল্ক-বাধা অপসারণকে ইস্যু হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেকেরই জানা নেই, প্রতিবছর বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক পরিশোধ করতে হয়, যা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মোট রপ্তানির প্রায় ১৬ শতাংশ। অথচ ফ্রান্স বা জার্মানি শুল্ক দিচ্ছে ৪ শতাংশের কম। সম্প্রতি শ্রমিকের নিরাপত্তা ও ট্রেড ইউনিয়ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে দেওয়া জিএসপি-সুবিধা স্থগিত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন থাকার খবর পেয়েই বাংলাদেশ সরকার তড়িঘড়ি করে মন্ত্রিসভায় টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আরও অনেকগুলো ইস্যুতে মার্কিন কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের মনোমালিন্য চরমে পৌঁছানোয় ওই কৌশল ব্যর্থ হয়। টিকফা এখন বাংলাদেশকে গলাধঃকরণ করতেই হবে, তবে বিনিময়ে তেমন ফায়দা সরকার আর আদায় করতে পারবে না আগামী চার মাসে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ভরাডুবি-বিপর্যয় ঠেকাতে না পারলেও যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করার দায়টা তাদেরই নিতে হচ্ছে।

পাঁচ
শ্রমমান উন্নয়ন, শ্রমিকের নিরাপত্তা বিধান, ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার সুনিশ্চিত করা কিংবা মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর ইস্যুগুলো আমাদের স্বার্থেই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হওয়া উচিত এবং এগুলোর আশু সমাধান নিজস্ব রাজনৈতিক আলোচনা-সমঝোতার মাধ্যমেই অর্জন করতে হবে। কিন্তু এ ধরনের ইস্যুগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের দাদাগিরির অধিকার স্বীকারের ব্যবস্থাই পাকাপোক্ত টিকফার মতো চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে। অতীতের সোফা ও হানা চুক্তিও বাংলাদেশের জনগণের অজ্ঞাতসারে নাজিল হয়েছিল। সোফা চুক্তিটি নাকি তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অগোচরেই স্বাক্ষরিত হয়ে গিয়েছিল! টিকফা চুক্তিতে কী রয়েছে, তা কিন্তু আজও সরকারিভাবে জনগণকে জানানো হচ্ছে না, কিন্তু কেন?

ছয়
টিকফাতে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিও পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশদূষণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তাদের কারণে কিয়োটো প্রটোকল ২০১২ সালের মধ্যে অনুমোদন না পেয়ে ভন্ডুল হয়ে গেছে। টিকফাতে নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ নিয়ে আলোচনা হবে না, বাংলাদেশের পরিবেশদূষণ নিয়ে মার্কিন বিশেষজ্ঞ ও কূটনীতিকদের উপদেশ বর্ষিত হবে। এই একতরফা খবরদারি করার সুযোগ আমরা কত দিন দেব?
ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান টিকফার মতো চুক্তি সই করেছে। পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ-অনুদাননির্ভরতা এবং শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাপী হইচই করে দুটি দেশকে যুক্তরাষ্ট্র ব্ল্যাকমেইল করেছে বলে অভিযোগ। বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ওই চুক্তিগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেই একতরফা সুবিধা এনে দিয়েছে; পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কোনো ফায়দা হয়নি। বাংলাদেশের মার্কিন ঋণ/অনুদান বর্তমানে নেহাতই অকিঞ্চিৎকর এবং তাও ক্রমহ্রাসমান। কিন্তু তৎসত্ত্বেও বাংলাদেশের পোশাক ও নিটওয়্যার রপ্তানি আয়ের ২২ শতাংশ আসছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে। মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি ও পোশাক ক্রেতারা নিশ্চয়ই বাংলাদেশকে করুণা করে এ দেশ থেকে পোশাক আমদানি করেন না। মুনাফার সিংহভাগটাই লুটে নিচ্ছেন তাঁরা এ দেশের শ্রমিকদের রক্তে ও ঘামে উৎপাদিত পণ্য থেকে।
কিন্তু ‘আধিপত্য ও পরনির্ভরতা সিনড্রোমের’ ওপর গড়ে তোলা নয়া সাম্রাজ্যবাদের চারিত্র্যই হলো স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শ্রমিকদের অমানবিক শোষণের জাঁতাকলে পিষ্ট করে উন্নত দেশের পুঁজিপতিদের মুনাফা সর্বোচ্চকরণকে যেনতেনভাবে নিশ্চিত করা। এ দেশ থেকে সাড়ে চার ডলারে যে শার্টটি জাহাজে চড়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে, ওই শার্টটি একজন মার্কিন খুচরা ক্রেতা কিনবেন ১২ ডলারে। আর ওই শার্ট বাবদ এ দেশের পোশাক শ্রমিক পাচ্ছেন মাত্র ২১ থেকে ২৫ সেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রে শার্টটি বানানো হলে শ্রমের মজুরি হিসেবে খরচ হতো ৪ দশমিক ৩৬ ডলার। অর্থাৎ সস্তা শ্রমের লোভেই মার্কিন পুঁজিপতি বাংলাদেশের পোশাকের বাজারে অর্ডার দিচ্ছে দান-দক্ষিণার জন্য বা দয়াপরবশ হয়ে নয়। কিন্তু এ দেশের ৪০ লাখ শ্রমিকের জীবন-জীবিকা যেহেতু পোশাকশিল্পের অস্তিত্ব ও সুস্বাস্থ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাই বাংলাদেশ মার্কিন ও ইউরোপীয় ক্রেতাদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হতে বাধ্য হচ্ছে। কৃষি খাতে খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা, ৮০ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স খাতের সাফল্য বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্রমেই দান-খয়রাতনির্ভরতা থেকে মুক্তি এনে দিচ্ছে। ফলে মার্কিন অধিপতিদের দাদাগিরির সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে শায়েস্তা করার অজুহাত তারা খুঁজবেই। তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন, রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩০ জনের প্রাণহানি এবং শ্রমিকনেতা আমিনুল হত্যা তাদের হাতে হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। টিকফা স্বাক্ষর করে কি তাদের মন গলানো যাবে?
ড. মইনুল ইসলাম: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।