সঙ্গী পেল না রোমিও

বলিভিয়ার কোচাবামবায় ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে নিঃসঙ্গ রোমিও
বলিভিয়ার কোচাবামবায় ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে নিঃসঙ্গ রোমিও

রোমিওর জন্য সঙ্গী খুঁজে পাওয়া গেলই না। তার জন্য জুলিয়েট খুঁজে পেতে কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চলছে। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হওয়ার পথে।

রোমিও হলো টেলমাটোবিয়াস ইউরাকেয়ার প্রজাতির ব্যাঙের সর্বশেষ সদস্য। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ার কোচাবামবা শহরের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছে এটি।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বা প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে আর্দ্র পার্বত্য বনভূমি, নদী এবং মিঠাপানির জলাশয়ে জলজ এই ব্যাঙের জন্য আদর্শ স্থান। বলিভিয়ার কোচাবামবা ও সান্তা ক্রুজ তেমনই দুটি জায়গা। নয় বছর আগে কোচাবামবাতে পাওয়া যায় রোমিওকে।

টেলমাটোবিয়াস ইউরাকেয়ার প্রজাতির ব্যাঙের গড় আয়ু ১৪ বছর। প্রজাতিটিকে রক্ষায় তার সঙ্গে স্থানীয় অন্য প্রজাতির ব্যাঙের মিলন ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর শেষ চেষ্টা হিসেবে শুরু হয় তহবিল সংগ্রহ অভিযান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা।

গত ফেব্রুয়ারিতে ভালোবাসা দিবস সামনে রেখে ওই তহবিল সংগ্রহ অভিযান ও প্রচারণার লক্ষ্য ছিল ১৫ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বহু মানুষ রোমিওর জন্য ভালোবাসা জানাতে থাকে। সংগ্রহ হয় লাখের চেয়ে বেশি অর্থ, ২৫ হাজার ডলার। ওই অর্থ খরচ করে নানা জায়গায় রোমিওর জন্য জুলিয়েটকে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হয়।

কোচাবামবার ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের তেরেসা কামাচো বাদানি সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমরা জরুরি মুহূর্তে পৌঁছে গেছি। আমাদের অবশ্যই এই প্রজাতির আরও সদস্যকে খুঁজে পেতে হবে। না হলে প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’ তিনি জানান, বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা টেলমাটোবিয়াস ইউরাকেয়ার প্রজাতির ব্যাঙ সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৫০ মিটার থেকে ৩ হাজার ৬০০ মিটার গভীরে অবস্থান করে।

তেরেসা কামাচো বাদানি জানান, আগে ইকুয়েডরেও টেলমাটোবিয়াস ইউরাকেয়ার প্রজাতির ব্যাঙের বাস ছিল। কিন্তু দেশটিতে এই প্রজাতির সব সদস্য বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

গত দশকেই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছিলেন, রোমিওর প্রজাতি বিপদের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু এটি যে এত দ্রুত বিলুপ্তির ঝুঁকির কিনারে এসে দাঁড়াবে, তা তখন বোঝা যায়নি। জলবায়ু পরিবর্তন, বাসস্থান হারানোসহ নানা কারণে ব্যাঙের টেলমাটোবিয়াস ইউরাকেয়ার প্রজাতির মতো বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অনেক প্রাণী।