আমি ফিটনেস আইকন হতে চাই

অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন কাপ হাতে নাসিফ রাহমান (বাঁ থেকে তৃতীয়)। ছবি: সংগৃহীত
অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন কাপ হাতে নাসিফ রাহমান (বাঁ থেকে তৃতীয়)। ছবি: সংগৃহীত
>বাংলাদেশি তরুণ নাসিফ রাহমান। গত ডিসেম্বর মাসে সুইডেনে অনুষ্ঠিত ‘ফিটনেস ফেস্টিভ্যাল-২০১৯’ নামে শরীর গঠন ও অঙ্গসৌষ্ঠব প্রদর্শন প্রতিযোগিতার একটি বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। মেসেঞ্জারে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সজীব মিয়া

ফিটনেস ফেস্টিভ্যাল-২০১৯ প্রতিযোগিতাটি সম্পর্কে কিছু বলুন। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন হলো?
এটি উত্তর ইউরোপের মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রতিযোগিতা। গত ৫ থেকে ৭ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ফিটনেস ফেস্টিভ্যালে বডিবিল্ডিং, বডি ফিটনেস, ক্ল্যাসিক এক্সট্রিম বক্স জাম্প চ্যালেঞ্জ, অ্যাথলেটিক ফিটনেস, বিকিনি ফিটনেস, উইমেন্স ফিজিকসহ বিভিন্ন বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আমি মেনস ফিজিক চ্যাম্পিয়ন (পুরুষদের শরীর গঠন) বিভাগে অংশ নিয়েছিলাম। ১৬ জনকে হারিয়ে আমি এই বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।

যখন চ্যাম্পিয়ন হলেন, তখনকার অনুভূতি?
এ ধরনের ফিটনেস ও শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় আমি আগেও অংশ নিয়েছি, পদক জিতেছি। তবে চ্যাম্পিয়ন হতে নিঃসন্দেহে সব সময়ই ভালো লাগে, অনুপ্রেরণা জোগায়। 

প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে কী ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন হয়?
প্রতিটি বিভাগে উচ্চতা, ওজন আর শারীরিক সক্ষমতা বিবেচনা করা হয়। প্রয়োজন হয় স্থানীয় স্পনসর, অ্যাথলেট সনদ। এসব বিষয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন আগ্রহীরা প্রয়োজনীয় ফি জমা দিয়ে অংশ নিতে পারেন। প্রোটিনবুটিকেন নামে সুইডিশ একটি প্রতিষ্ঠান আমাকে স্পনসর করেছিল।

নাসিফ রাহমান
নাসিফ রাহমান

সুইডেনে আপনি কী করছেন?
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে স্নাতক শেষে আমি সুইডেনে আসি, ২০১৭ সালে। এখন সুইডেনের ইয়াভলা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে মাস্টার্স করছি। এটি আমার দ্বিতীয় মাস্টার্স। এর আগে ট্যুরিজম ডেস্টিনেশন ডেভেলপমেন্ট বিষয়েও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছি।

শরীর গঠনে আগ্রহী হলেন কেন?
বডিবিল্ডিংয়ের স্বপ্ন আমার ছোটবেলার। টিভির পর্দায় বুঁদ হয়ে দেখতাম ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের বিভিন্ন আয়োজন, কার্টুন নেটওয়ার্কের অ্যানিমেশন কার্টুন ড্রাগন বল জেড। তখন থেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছি। একসময় নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করেছি। 

এ ধরনের প্রতিযোগিতায় আগেও তো অংশ নিয়েছেন।
২০১৩ সালে প্রথম বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিই। জাতীয় পর্যায়ের সেই প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছিলাম। এরপর ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত মাসলম্যানিয়া নামের একটি বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিলাম। ২০১৮ সালে সুইডেনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব বডিবিল্ডিং অ্যান্ড ফিটনেস (আইএফবিবি) আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জপদক জিতেছিলাম। এ ছাড়া ২০১৭ সালে সুপার মডেল বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিযোগিতায় জাতীয়ভাবে নির্বাচিত হয়ে থাইল্যান্ডের ‘মিস্টার গ্লোবাল’ পর্বে অংশ নিয়েছিলাম। সত্যি বলতে জয়ের শুরুটা দেশেই।

ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছেন?
তরুণদের স্বাস্থ্যসচেতন করতে আমি কিছু কাজ করি। নিজেকে সুস্থ রাখা, শরীর গঠন বা ব্যায়ামাগারে না গিয়ে নিজেকে ফিট রাখার মতো বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিও তৈরি করি। ভিডিওগুলো ইউটিউব চ্যানেলে হাজারো মানুষ দেখেছে। আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজেও স্বাস্থ্যবিষয়ক টিপস দিয়ে থাকি, অনেকের বাহবা পাই। এই কাজ আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাই আমি একজন ফিটনেস আইকন হতে চাই। আমাকে দেখে যেন তরুণেরা স্বাস্থ্যবান ও সুস্থ–সবল জীবনযাপনে আগ্রহী হয়।