মুরাদের কথা কক্সবাজারের মানুষ কদিন আগেও জানত না

ফুলের মালা পরেই মা–বাবার কাছে ফিরেছেন মুরাদ
ফুলের মালা পরেই মা–বাবার কাছে ফিরেছেন মুরাদ

১৩ ফেব্রুয়ারি, বিকেল সাড়ে চারটা। ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে কক্সবাজার বিমানবন্দরে নামলেন এক তরুণ। তরুণকে দেখে দূর থেকে অপেক্ষমাণ লোকজনের হাঁকডাক—ওই যে কক্সবাজারের সূর্যসন্তান, আমাদের ভূমিপুত্র হাসান মুরাদ।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের এই শহরে কত হাসান মুরাদ পড়ে আছে।  কদিন আগেও হাসান মুরাদ নামে কক্সবাজারে একজন ক্রিকেটার আছেন—তা অনেকের জানাই ছিল না। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট বিজয়ী বাংলাদেশ দলের একজন বীরকে ঠিকই চিনে নিয়েছে কক্সবাজারের মানুষ। তাই তো মুরাদকে বরণ করতে বিমানবন্দর এলাকায় এত লোকজনের সমাগম।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে হাসান মুরাদ খেলেছেন দুই ম্যাচ—কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল। ওই দুই ম্যাচে তিনি পান তিন উইকেট। হাসান মুরাদ কক্সবাজার ক্রিকেট একাডেমির খেলোয়াড় ছিলেন। ছেলের কৃতিত্বে মহা খুশি বাবা নাজিম উদ্দিন ও মা রাশেদা বেগম। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় হাসান মুরাদ। শহরতলীতে আধাপাকা একটি বাড়ি আর চাষাবাদের কিছু জমি—এই সম্বল পরিবারটির।  নাজিম উদ্দিন জমির দেখভাল করেন, মাঝেমধ্যে টুকটাক ব্যবসা করেন। মুরাদের মা রাশেদা বেগম একজন গৃহিণী।

নাজিম উদ্দিন বললেন, ‘অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সব খেলা তাঁর দেখা হয়নি। তবে ছেলের খেলা যথারীতি দেখেছি।’ হাসান মুরাদের জন্ম ২০০১ সালের ১ জুলাই। কক্সবাজার সরকারি কলেজের পেছনে কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ। তারপর কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি থেকে ২০১২ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। সেখান থেকেই ২০১৭ সালে এসএসসি ও ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। এখন চলছে স্নাতক পর্ব।

কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা হিসেবে জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে অংশ নেওয়া প্রথম খেলোয়াড় হলেন মুমিনুল হক। জানালেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অনুপ বড়ুয়া। যোগ করলেন, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বজয়ী দলের হয়ে জেলার দ্বিতীয় খেলোয়াড় হাসান মুরাদ। দুই ক্রিকেটারের কাছে কক্সবাজারবাসীর প্রত্যাশা আরও অনেক।