তৌহিদের হৃদয়ে মুশফিকের ভালোবাসা

মা তাহমিনা আকতারের সঙ্গে ছেলে তৌহিদ হৃদয়। ছবি: সোয়েল রানা
মা তাহমিনা আকতারের সঙ্গে ছেলে তৌহিদ হৃদয়। ছবি: সোয়েল রানা

তৌহিদ হৃদয়ের ভালো কোনো ব্যাট ছিল না। ভালো খেলেন জেনে উৎসাহ দিয়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। শুধু উৎসাহ নয়, অনূর্ধ্ব–১৯ জাতীয় দলের সহ–অধিনায়ককে দামি একটি ব্যাটও উপহার দিয়েছিলেন তিনি। সেদিনই কি তৌহিদ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ‘বড় ভাই’য়ের ভালোবাসার মান রাখবেন!

হয়তো তা–ই। না হলে মুশফিকুর রহিমের সান্নিধ্যের কথা এভাবে স্মরণ করবেন কেন তৌহিদ হৃদয়ের বাবা এনামুল হক, ‘বগুড়ার ছোল মুশফিকুর রহিম আমার ছেলেকে ব্যাট উপহার দিয়ে ভালো খেলায় উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁর এ ঋণ কখনো শোধ দেওয়া সম্ভব নয়। এটা হৃদয়ের জন্য অনেক বড় প্রেরণা।’

বাবা এনামুল হক অকপটেই বললেন, ‘ওর নিজের চেষ্টা, পরিশ্রম, সাধনায় এ পর্যন্ত গেছে। ছেলেকে কখনো ক্রিকেট খেলতে দিতে চাইনি। হৃদয়ের এ সাফল্যে আমার কোনো অবদান নেই। ওর খেলার পেছনে উৎসাহ দিয়েছেন ওর মা। বিসিবির কোচ মোসলেম উদ্দিন ওকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলেছেন।’

বাবা এনামুল হক এবং মা তহমিনা আকতারের কাছে গিয়েছিলাম ছেলে তৌহিদের কথা শুনতে। তাঁরা শোনালেন, শৈশব থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ছেলের অন্য রকম ঝোঁকের কথা। বললেন, সারাক্ষণ ক্রিকেট নিয়ে মাঠে পড়ে থাকার কারণে বগুড়া জিলা স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি তৌহিদ। সরকারি স্কুলে চান্স না পাওয়ায় বেসরকারি পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করাতে হয়। কষ্ট ও সাধনা করে পড়াশোনা আর ক্রিকেট সমানতালে চালিয়েছে।

তৌহিদ হৃদয় বগুড়ার গাবতলী উপজেলার লাংলু পশ্চিমপাড়া গ্রামের ছেলে। তাঁর বাবা এনামুল হক দুপচাঁচিয়ার তালোড়া খাদ্যগুদামের কর্মচারী। মা তহমিনা আকতার গৃহিণী। বগুড়া শহরে থাকেন ভাড়া বাড়িতে। তহমিনা আকতার বলেন, একমাত্র ছেলে তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে বড় কোনো চাকরি করুক। কিন্তু শৈশব থেকেই হৃদয় ক্রিকেটপাগল।

তৌহিদের বাবা এনামুল হক পাশে থেকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে, ছেলের পরিশ্রম সফল হয়েছে। এখন একটাই স্বপ্ন, জাতীয় দলে নাম লিখিয়ে হৃদয় আরেকবার বিশ্বজয় করুক।’