আর্দ্রর পেঁপেগাছ

আর্দ্র আমার ভাই। গল্পটি তাকে নিয়েই। তবে গল্প হলেও সত্যি। ২০১৬ সালের কথা। ও তখন নার্সারিতে পড়ে। একদিন মা একটা পেঁপে কাটলেন। আমাকে দিলেন, আর্দ্রকেও দিলেন। আর্দ্র পেঁপে খেতে খেতে খেয়াল করল যে নিচে কতগুলো কালো কালো বীজ পড়ে আছে। ও কৌতূহলী হয়ে মাকে জিজ্ঞেস করল, ‘মা, এগুলো মাটিতে পুঁতে রাখলে কি গাছ হবে?’

‘হ্যাঁ, অবশ্যই হবে।’ মা আর্দ্রকে বললেন, ‘এগুলো নিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখো।’

তো যেমন কথা তেমন কাজ। আর্দ্র বাসার পাশের খালি জায়গায় গিয়ে বীজগুলো বপন করল। কদিন পরই ঘটল দারুণ ব্যাপার। বীজগুলো থেকে একটি চারা গজাল। আমাদের তো আনন্দ আর ধরে না!

আর্দ্র নিজেই চারাটার যত্ন নিতে লাগল। স্কুল থেকে বাসায় ফিরেই সে আগে চারাটা দেখত। হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখে, কে যেন ওর গাছটার পাতাগুলো বাজেভাবে ছিঁড়ে ফেলেছে। তা দেখে আর্দ্রর যে কী কান্না!

তাই আর্দ্র গাছটার আরও বেশি করে যত্ন নিল। আর ওর যত্নে পাতাগুলো আবার সুন্দর করে গজাতেও লাগল। গাছটা বড় হতে লাগল তরতর করে। মাঝে একবার গাছটাতে পোকাও ধরেছিল। বাবার কাছে বায়না করে ওষুধ এনে পোকাও তাড়িয়েছে আর্দ্র।

আর সবচেয়ে খুশির দিন ছিল সেদিন, যেদিন গাছটায় ফল ধরল! পেঁপে পাকার পর পেড়ে আনা হলো। আর্দ্র পেঁপে খেতে খেতে বলল, ‘কী মিষ্টি! কী মিষ্টি!’

আর্দ্রর পেঁপেগাছটা এখনো আমাদের বাসায় আছে। গাছটার উচ্চতা এখন প্রায় দুই তলার সমান। এখনো ফল দেয়। আর্দ্র পেঁপেগাছটাকে খুব ভালোবাসে।

অষ্টম শ্রেণি, ব্রাহ্মন্দী কেকেএম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, নরসিংদী