ছবিটি দেখো। কোথাও আছে ব্যাটারি, কোথাও বাতি, আবার একটা সুইচও দেখা যাচ্ছে। আর সবকিছু জুড়ে দেওয়া হয়েছে লাল-নীল-হলুদ তার দিয়ে। এটা হলো বর্তনী। অবশ্য ইংরেজি ‘সার্কিট’ নামটি বোধ হয় বেশি শোনা যায়। বিদ্যুতে চলে এমন যেকোনো কিছু তারের মাধ্যমে বিদ্যুতের সঙ্গে যুক্ত করলে সেটিকে আমরা বর্তনী বলি। আমাদের ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি, ফ্যান, টিভি, কম্পিউটার—সব যন্ত্রই কিন্তু এই বর্তনীর মাধ্যমে বিদ্যুতে যুক্ত হয়ে চলছে। এই সার্কিটের সারাংশ নিয়ে হাজির হয়েছেন মেহেদী হাসান
বর্তনী কীভাবে কাজ করে
বর্তনীতে যদি কোনো ফাঁক না থাকে, তাহলে বিদ্যুতের উৎস থেকে বর্তনীর সব অংশে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। বর্তনীর অংশগুলোকে আমরা বিভিন্ন চিহ্নের সাহায্যে এঁকে দেখাতে পারি।
ধাতব তারের মতো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।
সুইচ
সুইচের কাজ হলো বিদ্যুৎপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা। দেখবে, সুইচ চাপলেই বাতি জ্বলে। অর্থাৎ বিদ্যুতের উৎস থেকে বাতিতে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হলো। আবার বাতি বন্ধ করতে আমরা যখন সুইচ চাপি, তখন বাতি থেকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এতে বর্তনীও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
ব্যাটারি
এই বর্তনীর বিদ্যুতের উৎস হলো ব্যাটারি। ব্যাটারির দুই প্রান্ত বর্তনীর সঙ্গে যুক্ত
করে দিলে বর্তনীর উপাদানগুলোতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে যার যার কাজ করতে থাকে
লাইট বাল্ব
লাইট বাল্বে বিদ্যুতের সংযোগ দিলে সেটি জ্বলে ওঠে, আলো ছড়ায়। বাল্বের মতো বিদ্যুতে চলে এমন আরও উপাদান সার্কিটে থাকতে পারে।
লাল-নীল রঙের প্লাস্টিকে ধাতব তার মুড়ে দেওয়া হয়। এতে একসঙ্গে অনেক তার থাকলেও একটির সঙ্গে আরেকটি লেগে যায় না। আবার তড়িতাহত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। এগুলোকে বলে ক্রোকোডাইল ক্লিপ। দেখতে কুমিরের মুখের মতো বলেই এমন নাম। বর্তনীর এক অংশের সঙ্গে তারের মাধ্যমে আরেক অংশ জুড়ে দিতে এই ক্লিপগুলো ব্যবহার করা হয়।
কারেন্ট বলতে আমরা সাধারণত বিদ্যুৎই বুঝিয়ে থাকি। তবে কারেন্ট হলো বর্তনীর নানা অংশে বিদ্যুতের প্রবাহ।
সার্কিট বোর্ড
সাধারণ কম্পিউটারগুলোও একসময় অনেক বড়সড় হতো। কারণ, তখন যন্ত্রাংশগুলো তো বড় ছিলই, সেগুলোর সঙ্গে তারের সংযোগও দেওয়া হতো ওপরের ছবির মতো আলাদা করে। এরপর ছোট্ট এক টুকরো বোর্ডে খুদে খুদে সব যন্ত্রাংশ জুড়ে দিয়ে সার্কিট বোর্ড (ছবিতে যেমন) তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করলেন বিজ্ঞানীরা। আর এখন শুধু কম্পিউটার নয়, মোটামুটি সব ইলেকট্রনিকস পণে্যে এমন সার্কিট বোর্ড থাকে।
সূত্র: ডি কে চিলড্রেনস এনসাইক্লোপিডিয়া