মুকুল, রিনি ও মিনি

আঁকা: রামিসা আনজুম, তৃতীয় শ্রেণি, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমণ্ডি, ঢাকা
আঁকা: রামিসা আনজুম, তৃতীয় শ্রেণি, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমণ্ডি, ঢাকা

মুকুল নামের ছেলেটা থাকত অনেক দূরের এক গ্রামে। ওর বাড়িতে ছিল মা, বাবা আর ছোট বোন। মুকুল প্রতি বিকেলে ওর বোন রিনির সঙ্গে মাঠে খেলতে যেত। একদিন ওরা খেলছিল। হঠাৎ দেখল, একটা বিড়াল গাছের নিচে মিয়াও মিয়াও করছে। কিছুক্ষণ মিয়াও মিয়াও শোনার পর ওরা বুঝল, বিড়ালটি আসলে কাঁদছে। তাই ওরা গাছের নিচে গিয়ে ভালো করে দেখল। হঠাৎ আবিষ্কার করল, বিড়ালটির পায়ে একটা কাঁটা বিঁধেছে। মুকুল ও রিনি দেরি না করে বিড়ালটিকে কোলে তুলে নিল। তারপর ছুটে গেল ওদের মায়ের কাছে।

মুকুল বলল, ‘মা, দেখো না, বিড়ালটার পায়ে একটা কাঁটা লেগেছে।’ রিনি বলল, ‘কাঁটাটা একটু বের করে দাও না, মা।’

মুকুল–রিনির মা, ‘আরে, তাই তো!’ বলে বিড়ালের পায়ের কাঁটাটি বের করে দিলেন। তারপর একটু মাছের কাঁটাও খেতে দিলেন। বিড়ালটি দিব্যি সুস্থ হয়ে উঠল। তারপর মুকুল আর রিনি বিড়ালটিকে মাঠে ছেড়ে দিয়ে এল। বিড়াল আবার মিয়াও বলে বিদায় নিল।

তারপর অনেক দিন কেটে গেছে। ইঁদুর আগেও ছিল; তবে হঠাৎ করে মুকুলদের বাড়িতে ইঁদুরের প্রচণ্ড উৎপাত শুরু হলো। বইয়ের তাকে ইঁদুর, রান্নাঘরের হাঁড়িতে ইঁদুর, এমনকি বালিশেও ইঁদুর! ছোট্ট এই প্রাণীটিকে দেখলে আবার মুকুল–রিনি ভয়ে চিৎকার করে উঠত। একদিন ওরা ঘুমাতে যাওয়ার সময় বালিশের নিচে চারটি ইঁদুর দেখে ভয়েই আধমরা। দুজনই জুড়ে দিল ভীষণ চিৎকার, ‘মা! বাবা! ইঁদুর! ইঁদুর! বাঁচাও! বাঁচাও!’

মা এসে সব দেখে বললেন, ‘আরে আরে, এখানে এত ইঁদুর কোথা থেকে এল!’

বাবা বললেন, ‘কিন্তু ওদের তাড়াব কী করে! ওরা তো সংখ্যায় অনেক।’

এদিকে মুকুল আর রিনি যে বিড়ালটির পা থেকে কাঁটা বের করে দিয়েছিল, সেই বিড়াল ছিল ঘরের পাশেই। মুকুল আর রিনির চিৎকার শুনে ও ভাবল, ‘কী রে, ওরা চিৎকার করছে কেন? একবার দেখা যাক তো।’

তারপর বিড়ালটি ঘরে উঁকি দিল। যখন দেখল বাড়িতে এত ইঁদুর, তখন ও ঘরে ঢুকে গেল। ঘরে ঢুকেই এমনভাবে তেড়ে গেল যে সব ইঁদুর পড়িমরি করে দে ছুট। এক তাড়া খেয়েই ইঁদুরের দল মুকুলদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেল বহুদূরে।

বিড়ালের বীরত্বে মুকুল আর রিনি তো খুব খুশি। শেষমেশ বিড়ালটিকে ওরা ঘরেই রেখে দিল। আর ওর নাম দিল মিনি।

 তৃতীয় শ্রেণি, ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ, ঢাকা