আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া হয়ে পড়েছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। তাদের কাছে মানুষকে দেওয়ার মতো কিছু নেই। তাই জিয়ার কবর নিয়ে তারা কথা তুলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কেন কবর নিয়ে কথা বলছে। কেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলছে। জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের যোগ দেওয়া নিয়ে কথা বলছে। কারণ, ওদের আর কিছু নেই তো। দেউলিয়া হয়ে পড়েছে রাজনৈতিকভাবে। কিছু দেওয়ার নেই। সে জন্য আজ এসব ইস্যু নিয়ে আসছে। আজ ইস্যু হচ্ছে টিকা। মানুষকে বাঁচাতে হলে টিকার দরকার। সেই টিকা আপনারা কতটুকু জোগাড় করেছেন?’

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টি (জাফর) আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘জ্যোতিষী মন্ত্রী’ করলে ভালো হয়, উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন বলছেন এই আসছে ১০ লাখ, এই আসছে ৫ লাখ, আগামী ডিসেম্বরে হবে—জ্যোতিষীর মতো বলছেন। প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা কী? ৪ শতাংশ লোককেও টিকা দেওয়া হয়নি। টিকা নেই, তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। ভারতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজের জন্য অ্যাডভান্স পেমেন্ট করে পেল ৭০ লাখ। কেন? একজন ব্যক্তিকে দুর্নীতিতে সাহায্য করার জন্য এই কাজ করা হলো।

আওয়ামী লীগ যত দিন থাকবে, তত দিন সংকট বাড়বে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিকেরাও লিখছেন না সেলফ সেন্সরশিপের কারণে। আর লিখবেন কীভাবে? একটি শব্দ এদিক-সেদিক হলেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের জামিন অযোগ্য মামলায় কারাগারে যেতে হচ্ছে। আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকার।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারত সীমান্তে গুলি করে মারে। কারণ কী, গরু চুরি করে, তাই মারে। আর আমাদের মন্ত্রীরা ডিফেন্স দেন, যদি কেউ অন্যায় করে, তার তো শাস্তি হবে। পৃথিবীর কোন দেশে, কোন সভ্যতায় বলা আছে, একজন লোক অন্যায় করলে প্রথমে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে। অন্যায় করলে তার আগে তদন্ত হবে, বিচার হবে। তারপর শাস্তি হবে। কিন্তু বর্ডার ক্রস করার জন্য গুলি করে মেরে ফেলতে হবে, এটা একমাত্র বাংলাদেশেই আছে। আমাদের সরকার এত বেশি দুর্বল, এত বেশি নতজানু। তারা এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পর্যন্ত সাহস পায় না।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও দেশে ফেরত পাঠাতে পারেনি। এটি যেভাবে আন্তর্জাতিকীকরণ করার প্রয়োজন ছিল, তারা সেটা করতেও ব্যর্থ হয়েছে।

মির্জা ফখরুল যুক্ত করেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর তিনি আমাদের বলেন, কখনো সাহস হারাবে না। কখনো হতাশ হবে না। মনের মধ্যে জোর রাখবে, মনোবল রাখবে। বিজয় তোমাদের হবেই।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবীব, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। সভায় কাজী জাফর আহমেদের ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।