আওয়ামী লুটেরাদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়ছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় প্রেসক্লাব
ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী দুর্বৃত্ত, চোর ও লুটেরাদের কারসাজির কারণে চালের দামটা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা কারসাজি করছে। সেখান থেকে আবার মুনাফা লুটবে এবং সাধারণ মানুষের পকেট কেটে টাকা নিয়ে যাবে। এটাই হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য।

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী সভাকক্ষে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের কৃষিবিপ্লব শহীদ জিয়ার নীতি ও কর্মসূচি’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করা হয়।

বোরো ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম আরও বেশি বাড়ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন চালের দাম কমে আসার কথা। সেই জায়গায় চালের দাম বাড়ছে। কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে গেলে নানান অজুহাতে তাঁদের কাছ থেকে ধান না কিনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাইরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মী অপেক্ষায় থাকেন। এরপর তাঁরা কিছুটা কম দামে কৃষকের কাছ থেকে ওই ধান কিনে নিয়ে সরকার নির্ধারিত দামে মিলমালিকদের কাছে বিক্রি করে দেন। এভাবে কৃষকেরা ধানের সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষও দুর্নীতির কারণেই হয়েছিল। ওই বছর দেশে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, সেটা যতটুকু না খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতির কারণে, তার চেয়ে অনেক বেশি ছিল তৎকালীন সরকারের দুর্নীতির কারণে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা দুর্নীতিকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যে তাদেন দুঃশাসনে, অব্যবস্থাপনায় ও দুর্নীতির কারণে তখন লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। তবে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনায় এসে মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন। কারণ, জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ছিল মানুষের কল্যাণ করা। যে কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে, মাত্র চার বছরের মধ্যে তিনি মানুষের মধ্যে একটা আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করতে পেরেছিলেন।

কৃষির উন্নয়নে জিয়াউর রহমান বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান বীজ অধ্যাদেশ, পল্লী বিদ্যুৎ, সার বিতরণ, খাল খননসহ নানান কর্মসূচি নেন। এসব কর্মসূচির মধ্যেই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ভিশন ছিল। সঙ্গে কৃষকের অবস্থার উন্নতি করা এবং মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা কখনোই তাদের নেতাদের ছোট করে কথা বলি না। যাঁর যা অবদান আছে, সেটা আমরা স্বীকার করি। আর তারা প্রতিনিয়ত আমাদের নেতাদের, দেশের নেতাদের, যাঁরা এ দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাঁদের অবজ্ঞা করেন, তাঁদের নিয়ে খারাপ কথা বলে। আমি তাঁদের বলতে চাই, ভাষার পরিবর্তন করেন। গতকাল যেভাবে ওবায়দুল কাদের হুমকি দিয়েছেন, এটা কোনো রাজনীতির ভাষা নয়। আপনারা মুখে মিথ্যা কথা বলেন কেন, যে গণতন্ত্র করতে চান। আপনারা তো গণতন্ত্র বিশ্বাসই করেন না।’

সরকার জিয়াউর রহমানকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকালও তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, জিয়াউর রহমান নাকি বিশ্বাসঘাতক ছিলেন আর খুনি ছিলেন। তখন তাঁর জন্ম হয়েছিল কি না সে সময়, আমি জানি না। তিনি কত দিন দেখেছেন না দেখেছেন, তা-ও আমি জানি না। কিন্তু তাঁর এমন বক্তব্য থেকে তাঁর সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যায়।’

সেমিনারে কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এম ফারুকসহ অন্য নেতারা।