ইসি নিয়োগে এত অল্প সময়ে আইন করা বাস্তবিকভাবে সম্ভব নয়: আইনমন্ত্রী

‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২১’ শিরোনামে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করেছে সুজন। আইনমন্ত্রীর গুলশানের কার্যালয়ে গিয়ে এটি তাঁর হাতে তুলে দেয় সুজনের প্রতিনিধিদল
ছবি: সংগৃহীত

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগে তাড়াহুড়া করে আইন করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। সংসদের পরবর্তী অধিবেশন জানুয়ারির শেষ দিকে। এত অল্প সময়ের মধ্যে আইন করা বাস্তবিকভাবে সম্ভব নয়। তাই আগামী ইসি নিয়োগ পুরোনো নিয়মেই হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) পক্ষ থেকে ইসি নিয়োগ আইনের খসড়া হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইসি নিয়োগে আইন তৈরির চিন্তা সরকার করছে। সুজনের খসড়া বিবেচনায় নেওয়া হবে।

এ সময় সুজনের প্রতিনিধিদলের সদস্য শাহদীন মালিক বলেন, তাঁরাও তাড়াহুড়া করে আইন তৈরির পক্ষে নন। তবে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে আইন তৈরি করতে পারেন। এতে নতুন ইসির প্রতি সবার আস্থা তৈরি হবে।

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এখন অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইন করে পরবর্তী সময়ে সংসদে অনুমোদন করে নেওয়া যেতে পারে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী বলেন, জরুরি বিবেচনায় সরকার অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইন করে, এটা ঠিক। কিন্তু ইসি নিয়োগের মতো আইন অন্তত সংসদকে পাস কাটিয়ে করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, আইন করা নিয়ে ভিন্নমত নেই, তবে এ সময়ের মধ্যে করা সম্ভব নয়।

সুজন বিশেষজ্ঞ ও চিন্তাশীল নাগরিকদের মতামত নিয়ে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২১’ শিরোনামে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করে। সেটি সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে গতকাল আইনমন্ত্রীর কাছে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে পৌঁছে দেয় সুজনের প্রতিনিধিদল।

এ সময় বদিউল আলম মজুমদার বলেন, শামসুল হুদা কমিশন ইসি নিয়োগ আইনের একটি খসড়া করেছিল। সুজন সরকারকে সহায়তা করতে খসড়া তৈরি করে দিয়েছে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সঠিক ব্যক্তি নিয়োগের প্রক্রিয়া খসড়ায় বলা হয়েছে। চাইলে তিন মাসের কম সময়ের মধ্যেই আইন অনুমোদন করতে পারে সরকার।

বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, এটা বিরাট কঠিন কোনো আইন নয়। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ইসি তৈরি করতে হলে আইনের মাধ্যমে নিয়োগ দরকার। তাহলে আর সরকারের নির্দেশে সার্চ কমিটি দিয়ে ইসি গঠন করার বিষয় আসবে না।

তখন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আইনি কাঠামোর মধ্যেই সার্চ কমিটি করে ইসি নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। কমিটির সুপারিশে ইসি গঠনের এখতিয়ারও রাষ্ট্রপতির।
এর আগে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২১’ আইনের চূড়ান্ত খসড়া আইনমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করে সুজন। রাত নয়টায় আইনমন্ত্রী তাঁর গুলশান কার্যালয়ে খসড়াটি গ্রহণ করেন।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য শাহদীন মালিক ও রোবায়েত ফেরদৌস, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ এবং সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার খসড়াটি আইনমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করবেন।

সুজন বলছে, দেশের চিন্তাশীল ও বিশেষজ্ঞ নাগরিকদের মতামত নিয়ে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২১’ শিরোনামে এ খসড়া আইন প্রণয়ন করেছে নাগরিক সংগঠন সুজন।