কুমিল্লার ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটানো হয়েছে: খন্দকার মোশাররফ

খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ফাইল ছবি

কুমিল্লার ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটানো হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। যারা এটি করেছে, খুঁজে বের করে তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ দাবি জানান। ‘মহানবী (সা.)–এর পবিত্র জীবনাদর্শ ও সমকালীন বাংলাদেশ’ বিষয়ে ওই আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কুমিল্লায় যে ঘটনাটি ঘটেছে, কে ঘটিয়েছে, তা জানি না। তবে যে ঘটিয়েছে, এটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটিয়েছে। ৯২ ভাগ মুসলমান বাংলাদেশের অধিবাসী হলেও বাংলাদেশ দাবি করে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দুরা এবং অন্য ধর্মের মানুষ বাংলাদেশে নির্ভয়ে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে। এখানে কোনো সময় এ ধরনের অপচেষ্টা বা বাধার সৃষ্টি করা হয়নি।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘যারা এটি করেছে, তাদের খুঁজে বের করে বিচার করতে হবে। কেননা, এই সম্প্রীতি নষ্ট করে এটাকে রাজনৈতিক একটা রূপ দিতে চায়। …বলতে চাই, যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের এটি দায়িত্ব, এই ষড়যন্ত্র উদঘাটন করা। এই বিষয়টি কিন্তু বাংলাদেশের জন্য একটি খারাপ ইঙ্গিত বহন করে। সুতরাং এখনই এ ধরনের ষড়যন্ত্রকে নির্মূল করা প্রয়োজন। সরকারের কাছে দাবি করি, যদি সরকার আন্তরিক হয়, আমার বিশ্বাস, কারা করেছে—এটা বের করতে পারবে। আশা করি, এ ব্যাপারে আমরা জানতে পারব, বিচার পাব।’

যদি আগামী দিনে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন না হয়, তাহলে কিন্তু দেশের মানুষ বসে থাকবে না উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মানুষের যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ, একদিন গণ–অভ্যুত্থানে রূপান্তরিত হবে। আশা করি, সরকার সে অবস্থায় না গিয়ে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দিকে যাবে, রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতির চেষ্টা করবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা একটি “ক্রিটিক্যাল পেশেন্টের” মতো। নিঃসন্দেহে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কিছু হয়েছে। কিন্তু এর ব্যতীত বাকি যা কিছু হয়েছে, এগুলো কোনোমতেই ডেভেলপমেন্ট না। সমকালীন বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যা, নির্বাচন হয়নি ১৪টি বছর ধরে। এমন পরিবেশ করা হয়েছে যেন কেউই ভোট দিতে না যায়। গত দুটি নির্বাচন দুই নিয়মে হয়েছে। আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে, আমি শিওর না।

আমাদের একটু সচেতন হয়ে চিন্তা করতে হবে। সুন্দর নৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত, আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত সংসদ এবং বিরোধী দল ব্যতীত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আগামী সংসদ নৈতিক ও আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন। সেখানে আইনানুগ শক্তিশালী বিরোধী দল প্রয়োজন।’

কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব (সমন্বয়) আবদুল্লাহ আল হাসানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আকরাম আলী, মাওলানা মোশারফ হোসেন, মাওলানা সালেহ উদ্দিন সিদ্দিকী, বায়তুল মাগফিরাত কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হুমায়ুন কবির মাজেদী ও সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব নাসির ইকবাল বিন শাফী বক্তব্য দেন।