খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষা করেন, রাজনীতি আনবেন না: প্রধানমন্ত্রীকে ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তাঁর জীবন রক্ষা করেন। এর সঙ্গে রাজনীতিকে নিয়ে আসবেন না।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, এমন ভয়াবহ দুঃসময় বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে আর আসেনি। আজ গণতন্ত্র পুরোপুরি হারিয়ে গেছে। স্বৈরাচারী সরকারের প্রচণ্ড রকমের দমন-পীড়নের কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সব দিক ধ্বংস হয়ে গেছে।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন গৃহবধূ ছিলেন। শুধু জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন। আজকে খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করছেন। তাঁর বিদেশে চিকিৎসা করা সবচেয়ে জরুরি। এ কথা বরবার বলা হয়েছে। এখানের সবচেয়ে ভালো হাসপাতালও বলছে, তাঁর অসুখগুলো সারিয়ে তুলতে তারা ইকুইপড নয়। খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে অন্য দলগুলোও বলছে। শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের নেত্রী সম্পূর্ণভাবে সেটাকে গ্রহণ করছেন না।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হতে পারলে গণরোষে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য একটি জাতীয় ঐক্য দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আজকে মাওলানা ভাসানী বেঁচে থাকলে এই ভয়াবহ লুটপাট, নির্যাতন, অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেন। তিনি বেঁচে থাকলে খালেদা জিয়াকে এত দিন জেলে থাকতে হতো না। এক হুংকারে খালেদা জিয়াকে তিনি বের করে আনতেন।’

বাংলাদেশের গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে আছে, এমন মন্তব্য করায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে ‘জাতীয় বীর’ উল্লেখ করে বিএনপির অপর ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দিতে পরিবারের আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বলে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি জাতির সামনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাঁর শপথ ভঙ্গ করেছেন। সংসদকে অপবিত্র করেছেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একটি গণ-অভ্যুত্থান দরকার বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ। এ সরকারের অধীন বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দৌহিত্র মাহমুদুল হক প্রমুখ।