খালেদা জিয়ার ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ পুরস্কার, সাড়ে ৩ বছর পর জানাল বিএনপি

কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও) নামের একটি সংগঠন খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ সম্মাননা দিয়েছে। এ পুরস্কার পাওয়ার সাড়ে তিন বছর পর আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে বিএনপি।

এ বিষয়ে দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেন।

বিএনপি মহাসচিব জানান, বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনও সম্মাননা প্রদানকারী সিএইচআরআইওকে গ্রহণযোগ্য সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাতে চাই, কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও), তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদান এবং তিনি যে এখনো গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য কারাবরণ করছেন, অসুস্থাবস্থায় গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। এসব কারণে এই প্রতিষ্ঠান দেশনেত্রীকে মাদার অব ডেমোক্রেসি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে।’

সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদে দেখা যায়, ‘ডেমোক্রেসি হিরো’ ক্যাটাগরিতে খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ পুরস্কার দেওয়া হয়। তাতে উল্লেখ আছে, বাংলাদেশে ও বহির্বিশ্বে অনগ্রসর জনগণের জন্য গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য খালেদা জিয়াকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। ক্রেস্টে এর তারিখ উল্লেখ রয়েছে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই।

এত দিন পর এ পুরস্কারপ্রাপ্তির কারণ কী, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর কারণটা হচ্ছে, এই সম্মাননা যখন দেওয়া হয় তখন ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) জেলে ছিলেন দুই বছর। তারপর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন কয়েকবার। এখন উনি বাসায় এসেছেন। আমরা তাঁকে এই সম্মাননার কথা জানিয়েছি। আপনাদেরও জানলাম।’

এ বিষয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তো পাবলিসিট করার পার্টি না। অনেকে হাউস অব কমন্সের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলে প্রচার করে, হাউস অব কমন্সে মিটিং করেছি। আমাদের এ অভ্যাস নেই। করোনা পরিস্থিতি, ম্যাডামের অসুস্থতা, নানা কারণে হয়তো এত দিন জানানো হয়নি।’

আমীর খসরু আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ট্র্যাক রেকর্ড আছে গণতন্ত্রের জন্য। অনেকে আছেন ট্র্যাক রেকর্ড নেই, তবু নানা পুরস্কার পান। বেগম জিয়া এখনো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য নিজের জীবন দিয়ে লড়াই করছেন। তিনি যে সম্মাননা পেয়েছেন, এটা তাঁর অবদানের তুলনায় কিছুই না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে থেকে বিএনপির নেতারা বক্তৃতা-বিবৃতিতে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে মাদার অব ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্রের মাতা বলে সম্বোধন করছেন। এর শুরু হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১০ মার্চ খুলনা মহানগরে এক সমাবেশে প্রথম খালেদা জিয়াকে মাদার অব ডেমোক্রেসি বলে সম্বোধন করেন। তিনি বলেছিলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছেন, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এ জন্য তাঁকে আজ থেকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ উপাধি দেওয়া হলো।