জ্বালানি তেল ও বাসভাড়া বৃদ্ধি অমানবিক: ১৪ দল

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, এরপর বাসের ভাড়া বাড়ানো এবং যাত্রীদের হয়রানির কঠোর সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোট। একই সঙ্গে ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় উদ্বেগ জানিয়ে জোটের নেতারা সহিংসতা বন্ধের দাবি জানান।

মঙ্গলবার বিকেলে জোটের বৈঠকে নেতারা এসব সমালোচনা ও উদ্বেগের কথা জানান। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও জোটের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয়তা এবং পাওয়া-না পাওয়া নিয়েও অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু আশ্বাস দেন, জোটের প্রধান শেখ হাসিনাকে বিষয়গুলো অবহিত করা হবে।

ইস্কাটনে আমির হোসেন আমুর বাসায় এই বৈঠক হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে এর আগে জোটের যে কটি বৈঠক হয়েছে, তা মূলত দিবসভিত্তিক কিছু ভার্চ্যুয়াল আলোচনা। বেশ কিছুদিন ধরেই জোটের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটা বৈঠক করার আগ্রহ দেখিয়ে আসছিলেন। বৈঠকে কী কী বিষয়ে কথা বলা যায়, এর প্রস্তুতি হিসেবে মঙ্গলবারের বৈঠক ডাকা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বৈঠক শেষে আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, ডিজেলের দাম একসঙ্গে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করা ঠিক হয়নি। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির আগে বাসমালিক ও জনগণের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘বাসভাড়া বাড়ায় জনগণের যে দুর্ভোগ হয়েছে, তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা মনে করি, বাসভাড়া বৃদ্ধির পদক্ষেপ অমানবিক। অত্যন্ত বেশি ভাড়া হয়েছে। আমরা জানি, অধিকাংশ বাসই গ্যাসে চালিত। কিন্তু গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি না হওয়ার পরেও সব বাসের ভাড়া বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ ১৪ দল পায় না।’

এ সময় পাশে থাকা জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘রাজস্ব কমিয়ে দিলেই হতো। ভারত তো তাই করেছে।’

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় ১৪–দলীয় জোট উদ্বিগ্ন—এ কথা জানিয়ে আমু বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যাতে সহিংসতা বন্ধ হয়। নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে যাতে জনগণ ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারে।’ তিনি বলেন, দেশে সরবরাহ ও উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও অহেতুক দফায় দফায় যে পণ্যের দাম বাড়ছে, সেদিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় সারা দেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা মনে করি, সরকারকে তদন্ত করে এর বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে।’

রাশেদ খান মেনন বৈঠকে বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি জাতীয়-আন্তর্জাতিক মণ্ডলের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উসকানি দিয়েছে। সরকারকে এই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা কঠোরভাবে দমন করতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের পত্র-পত্রিকায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টিকে গণহত্যা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে এর জবাব দেওয়া উচিত ছিল।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৪ দলের প্রয়োজন আছে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আওয়ামী লীগকে। আওয়ামী লীগ যদি মনে করে যে ১৪ দলের দরকার নেই, অসুবিধা নেই।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগে দক্ষিণপন্থীদের পাল্লা ভারী হয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়ে ভাবতে হবে। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করেন, কিশোরগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অন্যায়ভাবে তাদের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।