ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে সম্মেলন করার তাগিদ

বিভক্তি ও সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানায় সম্মেলন করার তাগিদ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। রোববার দিনভর সার্কিট হাউসে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নগরের তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাদের মতবিনিময় সভায় এই তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

সংসদীয় আসনভিত্তিক নগর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের এসব সভায় স্ব স্ব এলাকার সাংসদেরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। সবগুলো সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ আসনের সাংসদ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম-৪, ৫ ও ৮ সংসদীয় আসনের সঙ্গে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘সারা দেশে কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতা আমাদের চোখে পড়েছে। হয়তো টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের অনেকের মধ্যে একটা আয়েশি মনোভাব চলে এসেছে। অনেক জায়গায় দেখেছি যে, ১৫-২০ বছর ধরে সম্মেলন হচ্ছে না। একই কমিটির কোনো পরিবর্তন নেই। চট্টগ্রামের এই সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য অথবা আপনাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে যোগ্য নেতারা মূল্যায়িত হতে পারছেন না। আগামী ডিসেম্বরে জেলা পর্যায়ে কাউন্সিল করতে চাই। আর মহানগরে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলন আমরা করতে চাই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে।’

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি হয় ২০১৩ সালে। ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও ১৬ থানার সম্মেলনও হয় না অনেক দিন। নগর আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে বিভক্তি চলে আসছে। মহিউদ্দিন চৌধুরী পক্ষটি এখন তাঁর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরীকে সামনে রেখে এগোতে চায়।

সভায় যোগ দিতে আসা বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এ সময় অনেকে সম্মেলন না হওয়ার জন্য দলের বিভক্তির দিকে ইঙ্গিত করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি সম্মিলিতভাবে তৃণমূলের সম্মেলন প্রস্তুতির নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম-৪ আসনের সাংসদ দিদারুল আলম বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে সদস্য নবায়নসহ ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের সম্মেলন করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। আমার আওতাধীন উত্তর কাট্টলীতে কোনো সমস্যা নেই। তবে উত্তর পাহাড়তলীতে কিছুটা বিভক্তি আছে। আশা করি তাও মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।’

বেলা আড়াইটায় চট্টগ্রাম-১৩ আসনের আওতাধীন তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম-৯ ও ১১ আসনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত সভা চলে। তবে সাংসদ আফছারুল আমীন ও এম এ লতিফ সভায় যোগ দেননি বলে জানা গেছে। তাঁরা দুজনই কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন।