ঢাবির শতবর্ষের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা নুরুল হকের

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ দলমত-নির্বিশেষে দেশবরেণ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একত্র করা উচিত ছিল। তা না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শতবর্ষের অনুষ্ঠানকে একটি ‘সরকারদলীয় অনুষ্ঠানে’ পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। তাই সর্বশেষ নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েও নুরুল শতবর্ষের অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠান বর্জনের কথা জানান নুরুল।

নুরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। বর্তমানে তিনি গণ অধিকার পরিষদ নামের একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যসচিব। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ।
করোনা পরিস্থিতির কারণে পাঁচ মাস বিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই অনুষ্ঠান হচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নুরুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গর্ব দেশের সব মানুষের। শিক্ষার্থীদের ঘিরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মূল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী নির্বাচিত ডাকসু কমিটি নেই। এটি শতবর্ষের অনুষ্ঠানে বড় একটি অপূর্ণতা।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না করে শতবর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজন করা শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বহিঃপ্রকাশ৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা করে নুরুল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করতে বর্তমান প্রশাসন চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। শতবর্ষের অনুষ্ঠানে সরকারি দলের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কৃতী শিক্ষার্থীদের নিমন্ত্রণ না করা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সংকীর্ণ ও দলকানা মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সামরিক স্বৈরশাসনবিরোধী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ডাকসু নেতাদের নিমন্ত্রণ না করার মধ্য দিয়ে ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবজ্ঞা ও অবহেলা ফুটে উঠেছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মর্যাদাহানিকর।

বিজ্ঞপ্তিতে নুরুল আরও বলেন, ‘শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ দলমত-নির্বিশেষে দেশবরেণ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একত্র করা, বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে শতবর্ষের অনুষ্ঠানকে একটি সরকারদলীয় অনুষ্ঠানে পরিণত করেছে। তাই সর্বশেষ নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধি হিসেবে আমি এই অনুষ্ঠান বর্জন করছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দলনিরপেক্ষ চরিত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা ও দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

এই আয়োজন সামনে রেখে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হলগুলো। ক্যাম্পাস ও হলের বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে উৎসবের আবহ।