ঢাবি ক্লাবে রিজভীর যাওয়াকে ‘ষড়যন্ত্রের বৈঠক’ বলা অপপ্রচার: সাদা দল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি ঘরোয়া সামাজিক অনুষ্ঠানকে ‘তথাকথিত গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মানহানির অপচেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তারা বলেছে, একটি ছোট অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সস্ত্রীক অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ আখ্যা দিয়ে যে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সভাপতি ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকনেতা এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের আমন্ত্রণে শনিবার দিবাগত রাত একটা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে অবস্থান করেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় রিজভীর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীসহ কয়েকজন ছিলেন। রিজভীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আওয়ামী লীগপন্থী কিছু শিক্ষক ও ছাত্রলীগ। এমন পরিস্থিতিতে ‘প্রকৃত ঘটনা’ জানতে গত সোমবার ক্লাবের পক্ষ থেকে একটি তথ্যানুসন্ধান (ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং) কমিটি করা হয়েছে। তবে ওবায়দুল ইসলাম বলেছেন, তাঁর আমন্ত্রণে ক্লাবে শুধু খাবার খেতে এসেছিলেন রুহুল কবির রিজভী।

এ ঘটনা নিয়ে বুধবার সাদা দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন সংগঠনের আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমান। এতে বলা হয়, ‘শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি ঘরোয়া সামাজিক অনুষ্ঠানকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন বানচালের উদ্দেশে “গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক” হিসেবে আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সভাপতি ও সিনেট সদস্য এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে অসম্মানজনক বক্তব্য দিয়ে তাঁদের হেয়প্রতিপন্ন এবং শাস্তি দাবির ঘটনায় আমরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব একটি উন্মুক্ত স্থানে অবস্থিত। এটি সম্পূর্ণরূপে সিসিটিভির আওতাভুক্ত। এমন একটি ক্লাবে অংশগ্রহণকারীরা সস্ত্রীক এসে গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক করবেন, তা সুস্থ মস্তিস্কের কারও কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
ছবি: সংগৃহীত

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের একটি মিলনস্থল। দল-মতনির্বিশেষে ক্লাবের সদস্য শিক্ষক ও কর্মকতারা এই ক্লাবকে তাঁদের অবসর বিনোদনের একটি কেন্দ্রস্থল হিসেবে ব্যবহার করেন। এখানে ক্লাবের সদস্যরা তাঁদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবও নিয়ে আসেন। এমনকি এই ক্লাবে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের আগমনের ঘটনাও নজিরবিহীন নয়। এখনো প্রতিনিয়ত এই ক্লাবে যাঁরা আসেন, তাঁদের মধ্যে রাজনীতিবিদদের দেখা যায়। এ নিয়ে শিক্ষক বা ক্লাব কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি বা বিরোধিতা অতীতে আমরা কখনো দেখিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইতিমধ্যেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। এখানে ভিন্নমতের উপস্থিতি সহ্য করার মতো ন্যূনতম সৌজন্যতাবোধও আমরা লক্ষ করি না। শনিবারের ঘটনাটি এমন কর্তৃত্ববাদী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। আমরা এ ধরনের হীন মানসিকতাসম্পন্ন কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

এতে আরও বলা হয়, ‘এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, রুহুল কবির রিজভীসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের সম্পর্কে যে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দিয়ে তাঁদের শাস্তি দাবি করা হচ্ছে, এ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সর্বজনীন বৈশিষ্ট্য যাতে ক্ষুণ্ন না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করছি।’