তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি দাঁড়াতে পারছে না

দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ মহলে তারেক রহমানের ব্যাপারে অগ্রহণযোগ্যতা কাটেনি। ফলে ক্ষমতার রাজনীতিতে বিএনপি আগের জায়গাতেই রয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি

খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা দলের শীর্ষ নেতার পদে আছেন তারেক রহমান। কিন্তু দলে এখনো তাঁর নেতৃত্ব দৃঢ় হয়নি। দলের বড় একটি অংশে তারেক রহমানের একক কর্তৃত্ব এবং অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি রয়েছে। বিদেশি একাধিক মহলেও তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে বলে আলোচনা আছে।

বিএনপির রাজনীতির বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন—এমন ব্যক্তিরা বলছেন, মা খালেদা জিয়ার অবর্তমানে রাজনীতিতে তারেক রহমানের সামনে চ্যালেঞ্জ দুটি। তা হলো নিজ দল বিএনপিতে এবং ক্ষমতার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ দেশি-বিদেশি মহলে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি। এ দুটি চ্যালেঞ্জে সফল বা বিফলের মধ্যেই বিএনপির ভাগ্য জড়িয়ে আছে। যদিও বিএনপির নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী মহল দলের ভেতরের চেয়ে বাইরের চ্যালেঞ্জকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ, দেশি–বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ মহলে তারেক রহমানের ব্যাপারে অগ্রহণযোগ্যতা কাটেনি। ফলে ক্ষমতার রাজনীতিতে বিএনপি আগের জায়গাতেই রয়ে গেছে।

এ পরিস্থিতিতে দিনে দিনে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। যদিও গত সাড়ে তিন বছরে তারেক রহমান দলে অনেকটাই নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইতিমধ্যে নিজের পছন্দমতো অনেক জেলা কমিটি গঠন করেছেন। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিও দিয়েছেন।

‘লোকাল কমান্ডার’

তারেক রহমানের উপস্থিতিতে এক ভার্চ্যুয়াল সভায় দল পরিচালনায় ‘লোকাল কমান্ডার’ ঠিক করার প্রস্তাব করেছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। কারণ, দলের এই পুরোনো নেতার মনে হয়েছে, লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দল পরিচালনা করায় কিছু অসুবিধা হচ্ছে। এটা কাটাতে দেশে একজন জ্যেষ্ঠ নেতা দরকার।

দলীয় সূত্র জানায়, মুন্সীর ‘লোকাল কমান্ডার’ ঠিক করার প্রস্তাবের ফল ভালো হয়নি। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে এলাকার রাজনীতিতে। মুন্সীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দ্রুত তুলে আনা হয় অপেক্ষাকৃত তরুণ আবদুল আউয়ালকে (সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান)। তাঁকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদকও করা হয়েছিল।

এ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় পটুয়াখালীতে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নোয়াখালী–১ আসনে (চাটখিল–সোনাইমুড়ী) দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, ভোলায় কেন্দ্রীয় নেতা নাজিমউদ্দিন আলমসহ অনেক নেতা চাপে আছেন। কোথাও ছাত্রদল, কোথাও যুবদলের নেতাদের দিয়ে এলাকায় বিকল্প নেতৃত্ব দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। আবার দলের জ্যেষ্ঠ ও পুরোনো নেতাদের অনেককে তারেক রহমান পছন্দ করেন না। কারণ, তিনি তাঁদের নিজের লোক মনে করেন না।

অবশ্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমানের মতের অমিল সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা বেগম জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন বা তারও আগে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করেছেন, স্বাভাবিকভাবেই প্রথম দিকে তারেক রহমানের নেতৃত্বটাকে চট করে মেনে নিতে তাঁদের হয়তো একটু দ্বিধা হয়েছে। এখন নেতৃত্ব নিয়ে কোনো মতপার্থক্য নেই। বরং এখন আমরা দলে একটা যৌথ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি।’

এগুলো বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পিত প্রচারণা, যাতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি

১২ ছাত্রদল নেতার ভাগ্য

২০১৯ সালে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির ১২ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয় বিএনপির এক দাপ্তরিক আদেশে। তারেক রহমান নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন বিলুপ্ত কমিটির এই নেতারা। তাঁরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তালা ঝুলিয়ে, বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। কারণ, এ সিদ্ধান্তে বয়সের কারণে তাঁদের ছাত্রদলের কমিটিতে আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

এই নেতারা পরে অবশ্য তারেক রহমানের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁদের অন্য কোনো অঙ্গসংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছেন।

বিএনপির মধ্যম সারির একজন নেতা আক্ষেপ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, এই ১২ জনের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ার জন্য দলের স্থায়ী কমিটির সভা থেকে তারেক রহমানকে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়নি, তাঁদের দলের কোথাও অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি। এ ঘটনায় জ্যেষ্ঠ নেতারা বিরক্ত হন।

মনোনয়ন ও দল পুনর্গঠন–বিতর্ক

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন নিয়ে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এমন ক্ষোভের রেশ ধরেই বিএনপি ছাড়েন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান। অনেক অনুরোধের পরও তাঁকে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেখানে মনোনয়ন পান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গতবার বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল বিতর্কিতদের মনোনয়ন না দেওয়ার। কিন্তু রফিকুল ইসলাম (বকুল), মিয়া নুরুদ্দিন (অপু), সাইফুল আলমকে (নীরব) ও এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে (উপনির্বাচনে) মনোনয়ন দেওয়া হয়। প্রায় অর্ধশত আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়। এসব তারেক রহমান এককভাবে করেছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপি অযৌক্তিক ধারণা নিয়ে বসে আছে। তারা না আছে মাঠে, না আছে তাদের কোনো কৌশল। ওদের মস্তিষ্ক স্থবির হয়ে গেছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র

বর্তমানে মাঠপর্যায়ে দল পুনর্গঠনেও একই রকম ঘটনা ঘটছে বলে নেতা-কর্মীদের অনেকের অভিযোগ। তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ ছাড়া বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো কমিটিই হয় না। কমিটি করার আগে তিনি নিজস্ব লোকদের দিয়ে নেতা বাছাই করেন। এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যোগ্যতার চেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অনুগতরা প্রাধান্য পাচ্ছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে আলোচনাকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত মওদুদ আহমদের নির্বাচনী (নোয়াখালী-৫) এলাকার দুটি উপজেলায় দলের কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করেন একজন নেতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় কমিটি করার আগে মওদুদ আহমদের মতামত নেওয়া হয়নি। পরে স্থায়ী কমিটির এক ভার্চ্যুয়াল সভায় মওদুদ আহমদ বিষয়টি তোলেন। এ সময় তারেক রহমান বলেন, ‘আপনি মনোনয়ন পাবেন, এমপি হলে মন্ত্রী হবেন—এ বিষয়ে আপনার মাথা ঘামানোর দরকার নেই।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এলাকার জ্যেষ্ঠ নেতা, এমনকি সংসদ সদস্য পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মতামত না দিয়ে জেলা-উপজেলা কমিটি করা হচ্ছে। এতে অধিকাংশ কমিটিতেই না মিটছে তৃণমূলের চাহিদা, না পাচ্ছে স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতামত। ফলে দলে বিভক্তি ও কোন্দল বাড়ছে।

তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতে, এগুলো বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পিত প্রচারণা, যাতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্য একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।

বিতর্কে অনেক সিদ্ধান্ত

বিএনপির সূত্রগুলো জানায়, দলের স্থায়ী কমিটিতে সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদকে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে দলে। অনেকে মনে করেন, এই দুজনের পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির শূন্য পদে আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা যেত।

সম্প্রতি বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়ে দলের কোনো পর্যায়ে আলোচনা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া কারাগারে থাকা অবস্থায় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হয় তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে। আবার নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান এবং পরে সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তও দেন তিনি। নির্বাচনের আগে ‘বিএনপি-জামায়াত’ জোটের নেতিবাচক পরিচিতি ঢাকতে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনেও তারেক রহমানের সম্মতি ছিল। সেই নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টকেও ‘ধানের শীষ’ প্রতীক দেওয়া হয়, জামায়াতকেও ‘ধানের শীষ’ দেওয়া হয়।

রাজনীতির হিসাব-নিকাশ

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেকে মনে করেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের উচিত ছিল এই সময়ে দলের নতুন-পুরোনো সবাইকে এক করে দলকে সংগঠিত করা। কিন্তু এত দিনেও তা করা যায়নি। উপরন্তু তারেক রহমানের অনেক সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ড নেতা-কর্মীদের হতাশ ও বিভক্ত করছে। এর বাইরে ক্ষমতার রাজনীতিতে দেশি-বিদেশি বন্ধুসুলভ শক্তিগুলোর সঙ্গে তাঁর যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, সেটির এখনো পরিবর্তন হয়নি। এ ব্যাপারে দলের কৌশলগত পরিকল্পনাও দৃশ্যমান নয়।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী মনে করেন, রাজনীতিতে এখন জনমত, জনপ্রিয়তার কোনো মূল্য নেই। কারণ, বাংলাদেশের রাজনীতি বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। ফলে দল নিয়ে ও নেতৃত্ব নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।

বিএনপির নেতাদের দাবি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন থেকেই আওয়ামী লীগসহ একটি গোষ্ঠী অপপ্রচারের মাধ্যমে তারেক রহমান সম্পর্কে এমন একটা ধারণা তৈরি করেছে যে তিনি একজন বড় দুর্নীতিবাজ। বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এ অপপ্রচার চালানো হয়। বিএনপির মহাসচিবের ভাষ্য, ‘এটাকে আমরা চক্রান্ত মনে করি। এখন পর্যন্ত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এক টাকার দুর্নীতিও প্রমাণ করতে পারেনি।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা, গণস্বাস্থ্য

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মূল্যায়ন হচ্ছে, গত কয়েক বছরে বিশ্বরাজনীতিতে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। আর তা হচ্ছে প্রায় বিশ্বজুড়েই উদারপন্থী গণতান্ত্রিক ধারা দুর্বল হয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসন সামনে চলে এসেছে। এর মূল কারণ বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের লড়াই। অন্যদিকে কথিত জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ দমনে আন্তর্জাতিক জোট। বিএনপি সেই নেতিবাচক প্রচারে পড়ে গেছে, কারণ তাদের সঙ্গে জোটে অনেক ইসলামিক দল রয়েছে। এ কারণে বিএনপির ওপর আক্রমণ হলেও কর্তৃত্ববাদী শাসনের দাপটের মুখে সেটা আলোচনায় আসছে না।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন গোটা পৃথিবীতেই একটা প্রবণতা আছে কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোকে সহযোগিতা করার। পশ্চিমা বিশ্ব বলেন, অথবা চীন নিয়ে তৃতীয় বিশ্ব—এরা সবাই বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যকে বড় করে দেখে। এখানে যেহেতু ৯৫ ভাগ মুসলিম, সে কারণে এখানে তারা ইসলামি জঙ্গিবাদের আশঙ্কা করে। আর ওইটাকে অজুহাত দেখিয়ে বিরোধী দলগুলোকে দমন করার চেষ্টা করে। আমরা মনে করি, পৃথিবীর কোনো দেশেই এভাবে ফ্যাসিবাদ বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না, পারবে না।’

বর্তমানে দলে তারেক রহমানের যে অবস্থান, তা বাবা জিয়াউর রহমান ও মা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া। দলের নেতা–কর্মীদের অনেকে মনে করেন, চাপের মধ্যেও এ অঞ্চলের পারিবারিক উত্তরাধিকার রাজনীতির বাস্তবতায় তারেক রহমান দলে নিজের অবস্থান অনেকটা সংহত করেছেন। কিন্তু সব সামলে তিনি ভবিষ্যৎ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনেকে সন্দিহান। কারণ, বিএনপির নেতৃত্ব এখনো পুরোনো ধারণাতেই রয়ে গেছে; অর্থাৎ ক্ষমতাসীনদের অপশাসন যত বাড়বে, জনগণ ততটাই বিএনপির প্রতি ঝুঁকবে।

এ বিষয়ে বিএনপির শুভাকাঙক্ষী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি অযৌক্তিক ধারণা নিয়ে বসে আছে। তারা না আছে মাঠে, না আছে তাদের কোনো কৌশল। ওদের মস্তিষ্ক স্থবির হয়ে গেছে। এরা কোনো চেষ্টাই করছে না। এমনকি তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নেও। তারেক রহমান মনে করেন, কেউ না কেউ তাঁকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে।