নরেন্দ্র মোদি কেন আমন্ত্রিত, প্রশ্ন জাফরুল্লাহ চৌধুরীর

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ফাইল ছবি

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর তীব্র সমালোচনা করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘হিন্দু–মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে, এমন একজন মানুষকে কোন কারণে আমরা ডাকছি?’

রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই মন্তব্য করেন। ১৯৭১ সালের এদিনে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা, নতুন নেতৃত্বকে বরণ করাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কল্যাণ পার্টি। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা পান জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ। সম্মাননা দেওয়া হয় আসাফ উদ্দৌলা, সাদেক আহমেদ খান, শহীদুল ইসলাম, মো. শাজাহান খান, মো. ইলিয়াস ও শওকত আমিনকেও।

শওকত আমিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক, ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসীর।

অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজ একটি বড় সমস্যা ভারতের আধিপত্যবাদ। হিন্দু–মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে, এমন একজন মানুষকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে কেন আমরা ডাকছি? শেখ মুজিব কি শান্তি পাচ্ছেন!’ নরেন্দ্র মোদির সফরে মন্দির পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত থাকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, তিনি (মোদি) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমামের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। মুসলমানের মসজিদ, খ্রিষ্টানের গির্জা পরিদর্শন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি বিভাজন করছেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মওদুদ আহমদেরা মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ দিয়েছেন। আজ মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের কেউ সম্মান জানাতে যাননি।

সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর সমালোচনা করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় মোদির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অভিযোগ ছিল।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে আবার গণতন্ত্র উদ্ধার হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, যে গণতন্ত্র, সাম্য–মর্যাদার জন্য একাত্তরে মানুষ যুদ্ধ করেছিল, তা আজ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। স্বাধীন দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তিন বছর ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

দেশের গণতন্ত্র, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। তিনি বলেন, ১৭ থেকে ২৬ মার্চ সব মানুষের সভা–মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার নিজে প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠান করছে। সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে হলে দলমত–নির্বিশেষে পালন করতে হবে।