নষ্ট রাজনীতির সময়ে জ্ঞানী ব্যক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না: ফখরুল

বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপি নেতা ও আইনজীবী মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একজন জ্ঞানী-গুণী রাজনীতিককে হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন বিএনপির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকাল অবশ্য জ্ঞানের খুব বেশি একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। রাজনীতিতে জ্ঞানীকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বর্তমান সময় হচ্ছে একটা নষ্ট রাজনীতির সময়। এখানে কোনো জ্ঞানী লোককে সুযোগই দেওয়া হয় না। কাছেও আসতে দেওয়া হয় না। নামও উচ্চারণ করা হয় না। এই যে আজকে পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী। আমরাও কিন্তু তাঁকে স্মরণ করিনি। অথচ তিনি এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সরকার, এরা তো এক ব্যক্তিকে ছাড়া কাউকেই সম্মান দিতে জানে না। মওদুদ আহমদ এমন একটা সময়ে চলে গেলেন যখন দেশে গণতন্ত্র নেই। দুর্ভাগ্য, আমরা তাকে বড় করে স্মরণ করতে পারিনি। এই গণতন্ত্রের জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁকে বাসভবন থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

ফখরুল আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। সরকার সেটাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে। মন্ত্রীরা হেসে হেসে বলে দাম যেমন বেড়েছে, আয়ও বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? এরা জিডিপির শুভংকরের ফাঁকি দেখায়। তারপর আবার বলে পার ক্যাপিটা ইনকাম এত হয়েছে। আজকে দরিদ্র আরও ২ শতাংশ বেড়েছে। এরা অবলীলায় মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। আবারও নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, যাতে আরেকটা সেই ধরনের নির্বাচন করা যায়। এবার মানুষ আর সেটা শুনবে না, মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে, রুখে দাঁড়াবে।’

স্মরণসভায় পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের কন্যা ও প্রয়াত মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ বলেন, ‘আমার পিতা জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। কিন্তু আজ তাঁর স্মৃতি স্মরণ করা হয় না। আমি গতকাল একটি স্মরণসভায় বলেছিলাম যে মওদুদ আহমদকে হত্যা করা হয়েছে। মওদুদ আহমদের মৃত্যুর কারণ কোভিড বলা হলেও আমাদের কোনো দিন কোভিড হয় নাই। উনি অনেক নিয়ম মেনে চলতেন। একদিন প্রমাণ হবে তাঁকে কারা হত্যা করেছে। মওদুদ আহমদ ১৫টা বই লিখে গেলেও দুটি বই প্রকাশ করা হয়নি।’ দেশ বা বিদেশ থেকে এই দুটি বই প্রকাশ করা হবে বলে জানান হাসনা মওদুদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পল্লিকবি জসিমউদ্‌দীন ও মওদুদ আহমদের নামে দুটি চেয়ার ও ট্রাস্ট ফান্ড করার জন্য উপাচার্যের কাছে যাবেন বলে অনুষ্ঠানে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুকের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ।