নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রের হস্তক্ষেপ এখন প্রকাশ্য: ওয়ার্কার্স পার্টি
দেশের নির্বাচন পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির নেতারা বলেছেন, নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রের হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ এখন আর গোপন নয়, প্রকাশ্য। নির্বাচন কমিশন তা পুরোপুরি জ্ঞাত থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয় না। জিয়া-এরশাদ আমলের ভোটারহীন হোন্ডা-গুন্ডা নির্বাচনের ঐতিহ্যও এখন ম্লান হয়ে গেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আজ শনিবার এমন আলোচনা হয়। পরে দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এটি জানানো হয়। এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরোধী দল, এমনকি ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জোটভুক্ত দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। আগামী ইউপি নির্বাচনে এর পুনরাবৃত্তি ঘটলে দেশের মানুষ নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে পুরোপুরি আস্থা হারিয়ে ফেলবে।
দলের সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল (জুম) মাধ্যমে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় নির্ধারিত আলোচ্য বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা প্রস্তাব উত্থাপন করলে কয়েকটি গৃহীত হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভোট বাক্স আগেই ভরে রাখা, জোর করে ব্যালটে সিল প্রদান, ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়া, ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার যেসব অনিয়ম রয়েছে তা দূর করার প্রতিশ্রুতি এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ইভিএমে কারচুপির সুযোগ রাখার জন্যই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরবর্তীকালে ভোটের ফলাফল নিরীক্ষার জন্য ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিএটি) রাখার কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশকেও উপেক্ষা করেছিল। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ফলাফলের অসংগতি নিয়ে অভিযোগ যে উঠেছে, তা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এখন যেমন রাউজান, ফেনীসহ কয়েকটি অঞ্চলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার অর্থই ‘নির্বাচন’ হয়ে যাওয়া, তারই বিস্তৃতি ঘটবে সারা দেশে।
২০০৮ সালে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয়েছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এর অধঃপতন ঘটেছে। এ থেকে নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার না করলে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ পরিপূর্ণ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
বর্তমান ক্ষমতাসীন দলসহ সব রাজনৈতিক দলই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে।
নির্বাচন কমিশনে আর্থিক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখা ও নির্বাচন কমিশনকে যথাযোগ্য আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। সভায় বক্তব্য দেন আনিসুর রহমান মল্লিক, সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরুল আহসান প্রমুখ।