পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উল্লাসকে অবদমিত করতে সীতাকুণ্ড নাশকতা কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোর দুর্ঘটনা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উল্লাসকে অবদমিত করতে নাশকতা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি দেশের ভাবমূর্তি ও রপ্তানি বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, সেটিও দেখা হচ্ছে।

আজ সোমবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে দগ্ধদের দেখতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ ও উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করার পর দেশে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশবাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনায় কোনো নাশকতা আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনটেইনার ডিপোটি একজন আওয়ামী লীগ নেতার। ‘আমি খোঁজখবর নিলাম। ডিপোতে আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমানের মালিকানা মাত্র ৫ শতাংশ। ৯৫ শতাংশের কথা না বলে ৫ শতাংশের মালিককে এটির মালিক দেখিয়ে যাঁরা এ কাজটি করেছেন, এটিকে আওয়ামী লীগ নেতার ডিপো বানানোর যাঁরা চেষ্টা করেছেন। সেই সাংবাদিকতাটা ঠিক হয়নি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই প্রশাসন ও দলের সব পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যা কিছু করা প্রয়োজন, সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে। সেই নির্দেশ মোতাবেক প্রশাসন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।

দলের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত থাকায় রক্তের কোনো অভাব হয়নি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে বডি ফ্লুইড দরকার সেটিরও কোনো অভাব হয়নি। এত বড় একটা ক্যাজুয়ালিটিতে এগুলো অভাব হতে পারত। কিন্তু সবাই এগিয়ে আসায় অভাবটি হয়নি।’

সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকার কোনো উন্নতি করতে পারেনি, সেটারই পরিণতি ঘটেছে সীতাকুণ্ডে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওনার ইদানীং কথাবার্তায় মনে হচ্ছে, ওনার একটু চিকিৎসার দরকার আছে।’

ফখরুলের কথার জবাব দিতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যদি ভালো না হতো তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১ নম্বর হতো না। এ দুর্ঘটনার পর স্বাস্থ্যকর্মীরা, ডাক্তাররা এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা যেভাবে এগিয়ে এসেছে, এটি অভাবনীয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব না দেখে ঠাকুরগাঁও বসে মুখস্থ বক্তব্য দিয়ে দিলেন। কই তাদের তো কোনো নেতা–কর্মী ছুটে আসেনি এখানে। এখানে রক্ত দেওয়ার জন্য কিংবা ফ্লুইড দেওয়ার জন্য তাদের কোনো নেতা–কর্মীকে দেখা যায় না। সব তো আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরাই ছুটে এসেছে।’

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।