পারিবারিক ভাবমূর্তি ও দলীয় কোন্দলই সীমার জন্য চ্যালেঞ্জ

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার জন্য পারিবারিক ভাবমূর্তি ও দলীয় কোন্দল বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের অতীত কর্মকাণ্ড, মামলা এবং স্থানীয় সাংসদের অনুসারী ও সমর্থকদের ভোট পাওয়া নিয়েও ‘অবিশ্বাস’ রয়েছে।

গত কয়েক দিনে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আঞ্জুম সুলতানা নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। ভোটাররাও তাঁকে গ্রহণ করেছেন। এরপরও সাধারণ ভোটার ও দলের একটা অংশের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। যদিও এ পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনটিতেই জয়লাভ করেছেন আঞ্জুম সুলতানা। নগরের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত দুই ডজন ভোটারের সঙ্গে আলাপ করে এমন ধারণা পাওয়া গেছে। আঞ্জুম সুলতানা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আলোচিত প্রবীণ নেতা আফজল খানের একমাত্র মেয়ে। নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু।

মামলা ও পরিবারের অতীত কর্মকাণ্ড

২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল সকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মারা যান কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। ওই মামলায় আঞ্জুম সুলতানার দুই ভাই মাসুদ পারভেজ খান ইমরান ও নাসরুল্লাহ খান আরমানকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়। ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট নগরের দক্ষিণ ঠাকুরপাড়া বড় মসজিদ এলাকার প্রবাসী মো. ইসমাইল মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌর যুবলীগের সহসভাপতি তারিকুল হাসান টিটুর কঙ্কাল ও মাথার খুলি উদ্ধার করে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ মামলায় আঞ্জুম সুলতানার ছোট ভাই নাসরুল্লাহ খান আরমানকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুমিল্লা-ছাড়া।

এ প্রসঙ্গে আঞ্জুম সুলতানা বলেন, ‘আমার ভাইদের বিরুদ্ধে যে দুটি হত্যা মামলা হয়েছে, সেগুলো রাজনৈতিক কারণে হয়েছে। সাইফুল হত্যাকাণ্ডের দিন আমার কোনো ভাই ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। নির্বাচন এলে এ রকম বহু কথা আসে।’

স্থানীয় সাংসদ-সমর্থকদের ভূমিকা

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১৮ জন আওয়ামী লীগদলীয় সাধারণ কাউন্সিলর ও ছয়জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারীরা নৌকার পক্ষে মন্থর গতিতে কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছেও দলীয় কর্মীরা কেউ কেউ ওই অভিযোগ তোলেন। এ অবস্থায় নগরের পুরোনো ১৮টি ওয়ার্ডে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ডে কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিনের পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর নিজস্ব দলবল রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার এবং দলের মধ্যে কোনো বিভেদ তৈরি করবেন না। নৌকা স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আমার মার্কা। আগামী ৩০ মার্চ সবাইকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী এখন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। নির্বাচন এলে অনেকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু দিন শেষে নৌকার জয় হবে।’