বন্যায় আ.লীগ ছাড়া অন্য দলের কেউ পাশে নেই: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, সিলেটসহ দেশের কয়েকটি এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় প্রশাসনের পাশাপাশি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। অন্য কোনো দলের নেতা–কর্মীরা বন্যার্তদের পাশে নেই।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটরিয়ামে উপজেলার স্কুল ও কলেজশিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় বসে বসে কেউ টক শোতে বক্তৃতা দিচ্ছেন। আর ঢাকায় নয়া পল্টনে কিংবা প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে অনেকে বিষোদ্‌গার করছেন। কিন্তু বন্যার্তদের সাহায্য করার জন্য কেউ ঝাঁপিয়ে পড়েনি। ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা।’

পদ্মা সেতু নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ ভাবেনি কখনো নিজের টাকায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে। পরে যখন আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করে দিয়েছি, বিশ্বব্যাংক কানাডা আদালতে হেরে যায়। কানাডার আদালতে তাদের যে অভিযোগ সেটি ভুয়া, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল—কানাডার আদালতে সেটি প্রমাণিত হলো। কানাডার আদালতে আমাদের সরকার যায়নি, গিয়েছে বিশ্বব্যাংক। কানাডার আদালত রায় দিলেন, কোনো দুর্নীতি হয়নি, দুর্নীতির চেষ্টাও হয়নি। তাদের দায়ের করা মামলায় তারা হেরে গেছে। এরপর তারা প্রস্তাব দিয়েছিল পদ্মা সেতুতে তারা অর্থায়ন করতে চায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “আমার বিশ্বব্যাংকের অর্থ দরকার নেই।” আজ তিনি বিশ্বমোড়লদের দেখিয়ে দিয়েছেন নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে। আমাদের দেশের কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী, এমনকি একটি বড় পত্রিকায় হেডিং হয়েছিল, পদ্মা সেতু আর হচ্ছে না। তখন বুদ্ধিজীবীরা বলেছিলেন, এই সরকারের আমলে আর পদ্মা সেতু হচ্ছে না। ড. ইউনূসও বলেছিলেন। আমি ওনার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে বলতে চাই, সত্যটা হচ্ছে বিশ্বব্যাংক যাতে পদ্মা সেতু থেকে সরে যায়, সে ষড়যন্ত্রের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। একইভাবে টিআইবি, সিপিডিসহ আরও অনেকে বলেছিল, পদ্মা সেতু হবে না। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু হয়।’

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ অনন্য উচ্চতায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যে মানুষের সামনে কোনো লক্ষ্য থাকে না, সে মানুষ বেশি দূর এগোতে পারে না। যার লক্ষ্য নেই, তার স্বপ্নও নেই। জাতীয় জীবনেও এটি সত্য। তাই আমাদের নেত্রীও আজকে জাতিকে আশাবাদী করে তুলেছেন। জাতির সামনে একটি লক্ষ্য তিনি দিয়েছেন। ২০২১ সাল নাগাদ লক্ষ্য দিয়েছেন একটি মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার। সেটি আমরা হয়েছি। ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের লক্ষ্য একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়া। সেই লক্ষ্য নিয়েই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে।’

শিক্ষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে উন্নত করা নয়। আমরা চাই, মেধা, মূল্যবোধ দেশাত্মবোধ মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটিয়ে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে চাই। মেধার সঙ্গে মূল্যবোধের সমন্বয় ঘটিয়ে, মানবিকতার বিকাশ ঘটিয়ে যদি একটি উন্নত জাতি গঠন করতে পারি, তবে তা পৃথিবীর সামনে একটি উদাহারণ হবে।’

রাঙ্গুনিয়াবাসীর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সাড়ে ১৩ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার সবার জন্য আমার দরজা খোলা রেখেছি। কে আমাকে ভোট দিয়েছে কিংবা দেয়নি, তা কখনো দেখিনি। কে আওয়ামী লীগ করেছে বা করেনি, তা কখনো জিজ্ঞেস করিনি। আমার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করেছে, এমন অনেকের চাকরি আমার হাত ধরে হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি সব মানুষের কথা রাখতে। তাই আমি যদি আপনাদের দরজায় যাই, আপনাদের দরজাটিও আমার জন্য খোলা রাখবেন।’

রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ আবদুল মাবুদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মুহাম্মদ রফিকুল আলম প্রমুখ।

এর আগে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের বিশেষ সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।