বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণমানুষের সমর্থন নিয়ে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পেরেছে। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হবে না, কারও কাছে হাত পেতে চলবে না।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ঐতিহ্য, আন্দোলন–সংগ্রাম ও দেশের উন্নয়নে দলটির ভূমিকা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলা ভাষায় কথা বলা, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির সাত মাসের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে একটি বৈরী মনোভাব দেখা যায়। বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা, আর্থসামাজিকভাবে শোষণ, নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করে। এ প্রেক্ষাপটে জাতির পিতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। সৃষ্টিলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছে।

আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শামসুল হকসহ আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণেরই সংগঠন। আওয়ামী লীগ সব সময়ই এ দেশের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে গেছে। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে স্বাধীনতা ও অধিকার জড়িত। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত করে সংবিধান দিয়েছিলেন জাতির পিতা। ১৯৭৫ সালেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা পায়। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশ কেবল জাতির পিতাকে হারায়নি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস–বিকৃতি হয়েছিল। জয়বাংলা স্লোগান নির্বাচিত হয়েছিল। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়। কিন্তু ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। পরে দ্বিতীয়বার সরকারে আসে। সরকারে আসার পর আজ বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারে থাক আর বিরোধী দলে, যখনই বাংলার মানুষ কোনো সমস্যায় পড়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটাই আওয়ামী লীগের আদর্শ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ইনশা আল্লাহ, জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে অবশ্যই ভবিষ্যতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।’