বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্রুদের রুখে দেওয়াই হোক একুশের প্রতিজ্ঞা: মৎস্যমন্ত্রী

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।ফাইল ছবি

বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্রুদের রুখে দেওয়া মহান একুশের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। গতকাল সোমবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২ উপলক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘যারা আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, আমাদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখতে চেয়েছিল, যারা শাসনের নামে শোষণ করেছিল, সেই পাকিস্তানিদের প্রেতাত্মা এখনো বিভিন্ন সময় দেশে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কখনো জামায়াতে ইসলামীর নামে, কখনো হেফাজতের নামে, কখনো জঙ্গি হিসেবে তাদের উত্থান হয়। তারা বলে, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ থাকতে পারবে না, তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করে। তারা দেশ ও দেশের বাইরে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। যে বাংলা ভাষার ভিত্তিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হয়েছে, যে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ঘিরে বাংলাদেশে স্বাধিকার আন্দোলন এবং পরিণতিতে জনগণের রায় নিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে, সেই বাংলাদেশ যেন আবার স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের খপ্পরে না পড়ে, এ জন্য মাতৃভাষা দিবসের প্রতিজ্ঞা নিতে হবে।’

আলোচনা সভায় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলা ভাষার বিজয় না হলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হতো না। আমাদের জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হয়েছিল বাংলা ভাষার ভিত্তিতে। সে জাতীয়তাবাদ ঘিরেই আমাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, যে সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আপাদমস্তক বাঙালিত্ব ধারণ করা বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ আমাদের অনিবার্য। অর্ধেক বাংলা, অর্ধেক ইংরেজি অথবা বাংলাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে উচ্চারণ বন্ধ করতে হবে। সন্তানদের পরিমার্জিত ও পরিশীলিত বাংলা শেখাতে হবে। আমাদের বাঙালিত্ব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি ধরে রাখতে হবে। তবেই আমাদের ভাষাশহীদদের ত্যাগ স্বীকার ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন সার্থক হবে।’

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার। এ ছাড়া পিরোজপুরের সিভিল সার্জন হাসনাত ইউসুফ জাকি, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খান, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী, পিরোজপুর জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসুসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি