‘রাজাকার’ অভিযোগের স্তূপ এখন আ.লীগ অফিসে: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরাই এখন একে অপরের দিকে ‘রাজাকার’–এর তকমা লাগানোর চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে তাঁদেরকে এসব অভিযোগ শুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেল এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টিকে ‘দুর্বিষহ’ আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যার সঙ্গে তার বনবে না, তাকে বলবে রাজাকারের ছেলে। অথবা বলবে রাজাকারের নাতি বা শান্তি কমিটির সদস্য ছিল তারা। এসব অভিযোগ করে একজন আরেকজনের প্রতিপক্ষকে (আওয়ামী লীগের এক মনোনয়নপ্রত্যাশী আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশীকে)। এসব অভিযোগের স্তূপ হয়ে গেছে পার্টি অফিসে।’
‘করোনাকালে শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে শেখ হাসিনার ভূমিকা’ শিরোনামে সভাটির আয়োজন করে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীদের রাজনীতি করার বিরুদ্ধে নই। কিন্তু রাজনীতিকে যখন ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেটাকে আমি ঘৃণা করি। এ দেশে অনেকে ব্যবসা না করেও রাজনীতিতে নেতা হয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন।’

বাংলাদেশে আবার ককটেল, পেট্রোল বোমা ব্যবহারের ছক কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি’। আগের দিন মঙ্গলবার বিএনপির সমাবেশ শেষে মিছিল বের করার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের মহাসচিব নিষেধ করার পর মিছিল বের হয়, এটা কেমন দল?

ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের চেয়ে বেশি মুসলমান ভারতে বসবাস করে। আমরা যদি বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি হিন্দুর জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলি, ভারতে ২০ কোটি মুসলমানের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এটা কিন্তু ভাবতে হবে।’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যবসা–বাণিজ্য করতে চাইলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা হলো উন্নয়নের মূল। বিভিন্নভাবে দেশকে উত্তপ্ত করার জন্য চেষ্টা করছে পরাজিত শক্তি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এখানে থাকলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের যে গতি, তা ধরে রাখা সম্ভব হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘করোনার সময় যখন পোশাক কারখানা বন্ধ করার কথা হচ্ছিল, তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, পোশাকশিল্পের বাজার একবার হারালে তা ফিরে পেতে কষ্ট হবে। অনেক সমালোচনা সহ্য করে পরিস্থিতি খুব খারাপ না হলে প্রধানমন্ত্রী পোশাকশিল্প খোলা রাখার পক্ষে ছিলেন। আজকে পোশাকশিল্পের বাজার সর্বকালের রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে। এসব কিছু তারই দৃষ্টিভঙ্গি।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসীম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ এবং আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান।