সরকারের নীতি হলো ‘ঋণ করে ঘি খাও’ আর জনগণের ওপর দায় চাপাও

বাজেট নিয়ে শনিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সরকারের নীতি হলো ‘ঋণ করে ঘি খাও’ আর জনগণের ওপর এর দায় চাপাও। ফলে ঋণ পরিশোধের জন্য জনগণের ওপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ নানা নিপীড়নমূলক করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে বৈধ করার মাধ্যমে কালো টাকার দাপট আরও বাড়ছে এবং বিদেশে সম্পদ পাচারের ধারাও অব্যাহত থাকছে। তাই বরাবরের মতো এবারের বাজেটও সাধারণ মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে নয়; বরং ধনী, সম্পদশালী, ক্ষমতাবান ও লুটেরাদের প্রতি পক্ষপাত করে প্রণয়ন করা হচ্ছে।

আসন্ন বাজেট নিয়ে শনিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘আগামী বাজেট: বৈষম্য ও দুঃশাসনের পুঁজিবাদ’ শীর্ষক এই বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ্ আলম।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)। শুরুতেই প্রারম্ভিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ। আলোচনায় অংশ নেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান, অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শারমিন্দ নীলোর্মি। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান।

এম এম আকাশ অতীতে বাজেটে আয়ের জন্য প্রত্যক্ষ কর আদায়ের ক্ষেত্রে ধনীদের ছাড় দেওয়া এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বদলে ধনীদের জন্য বেশির ভাগ বরাদ্দ রাখার বৈষম্যটি তুলে ধরেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, যে পুঁজিবাদী বিকাশের ধারায় জিডিপি বেড়েছে, তার পরিণতিতে দেশে ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ-প্রকৃতি বিনাশের মেগা প্রকল্পে ঋণও বেড়েছে। অন্যদিকে ঋণ ও করখেলাপি চোরাই টাকার মালিকদের সম্পদ বেড়েছে।

শারমিন্দ নীলোর্মি বলেন, মধ্যম আয়ের দেশের মানুষেরা কম মজুরিতে কাজ করে শ্রম নির্ভর রপ্তানীমুখী শিল্পে ভর্তুকি দিতে থাকবে,এমনটা আশা করা ঠিক হবে না।

সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, বাজেটে বৈষম্য নিরসনে সরকারের ইচ্ছা ও জবাবদিহি প্রয়োজন। তাঁর মতে, প্রয়োজনীয় খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন, যা বর্তমানে অনুপস্থিত।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহ্ আলম বলেন, প্রতিবছর সরকার একটি গতানুগতিক বাজেট উপস্থাপন করে। এই বাজেটে সাধারণ মানুষ উপেক্ষিত থেকে যায়। বরাবরের মতোই বাজেট বৈষম্যমূলক দলিল হিসেবেই সামনে আসে। রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা পরিবর্তন সম্ভব নয়।