সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে ছোট ছোট দলকে এক হতে হবে

‘গণতন্ত্র ও গণমানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা কোন পথে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা।
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে ছোট ছোট সব দলকে এক হতে হবে। তা ছাড়া শুধু একটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে না। নির্বাচন ব্যবস্থার একটি স্থায়ী রূপান্তরের কর্মসূচি তৈরি করতে পারলেই মানুষের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ তৈরি হবে, মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী আবদুস সালামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেজর হায়দার মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র ও গণমানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা কোন পথে?’ শীর্ষক এই  আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান এই অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে ছোট ছোট সব দলকে মিলে এক হতে হবে। তাহলে মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। প্রয়োজনে নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রেখেই একত্র হতে পারেন।’ তিনি বলেন, আবদুস সালাম রাজনীতির জন্য বা জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে জীবন দিয়েছেন। এ রকম জীবন দেওয়ার জন্য ১০০ কর্মী এগিয়ে এলে আজকের অবস্থার পরিবর্তন হবে। এই নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে। প্রয়োজনে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে একটি তহবিল গঠন করতে হবে, যেখান থেকে হামলা-মামলা, চিকিৎসা ও পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া যায়।

জাফরুল্লাহ বলেন, মন্ত্রীর মায়ের মৃত্যুতে মন্ত্রণালয়ের তহবিল ব্যবহার করে সব জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেওয়া একটি দুর্নীতি। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা দরকার।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গণতন্ত্রের লেবাসে ফ্যাসিবাদী শাসন শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে না, সারা দুনিয়াতে এ রকম নজির খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, সন্দেহ আছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গত ১০ বছরে প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে ক্রস ফায়ারে হত্যা করা হয়েছে, এক হাজারের অধিক মানুষকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে অত্যাচার করা হয়েছে এবং প্রায় ৬০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। এর কোনো জবাবদিহি নাই। তিনি বলেন, একটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে না। নির্বাচন ব্যবস্থার একটি স্থায়ী রূপান্তরের কর্মসূচি তৈরি করতে পারলেই মানুষের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ তৈরি হবে, মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকারকে আন্দোলনে পরাজিত করতে না পারলে ক্ষমতা অর্জন তো দূরের কথা, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়াও সম্ভব নয়। এই সময়ে যদি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারা যায়, তাহলে আগামী নির্বাচনে বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকার আরও বেশি গণবিরোধী রূপ ধারণ করে দুঃশাসন কায়েম করবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য হাসনাত কাইয়ুম, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক আহমেদ এবং গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান। আলোচনা সভায় আবদুস সালামের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ ও সভা পরিচালনা করেন দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহানাইন বাবু। সভায় আবদুস সালামের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।