সরকারের ব্যর্থতায় বন্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে: প্রকৌশলী ম ইনামুল হক

ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলনায়তনে সংলাপে বক্তব্য দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বন্যায় মানুষের মুখে হাসি নেই। নিরাপদ ত্রাণ ব্যবস্থাপনা করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বন্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া ত্রাণ নিতে গিয়ে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলনায়তনে বুধবার বেলা ১১টায় এক নাগরিক সংলাপে এসব কথা বলেন আলোচকেরা। বন্যায় সৃষ্ট মানবিক সংকট মোকাবিলায় সর্বোচ্চ অর্থ ও খাদ্য বরাদ্দের দাবিতে এবি পার্টি এ সংলাপের আয়োজন করে।

সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ এক কঠিন সমস্যায় নিমজ্জিত। মানুষের মুখে আজ হাসি নেই। বাংলাদেশকে না জানিয়ে গজলডোবা বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক অপরাধ করেছে। একদিকে বন্যা, অন্যদিকে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের লাগামহীন বক্তব্যে আমরা হতাশ হচ্ছি।’

দেশে সুশাসন ও গণতান্ত্রিক ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে অধিকার আদায় করতে এবি পার্টির কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধন সামনে রেখে সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে বন্যার ভয়াবহতা গণমাধ্যম সেভাবে তুলে ধরছে না। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে আমরা কিছুটা জানতে পারছি।’ তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারের অনেক প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সি আছে। কিন্তু তাদের কোনো কার্যকর ভূমিকা আমরা দেখছি না।’

সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে কোনো লাভ নেই বলে মন্তব্য করেন পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম ইনামুল হক। তিনি বলেন, যাঁরা দেশ নিয়ে ভাবেন, দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারেন, তাঁদের সরকার কাজে লাগাচ্ছে না, তাঁদের কথা আমলে নিচ্ছে না। তবু জনগণের জন্য কথা বলতে হবে।

হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণ নিক্ষেপ করে মানুষ হতাহতের ঘটনার নিন্দা জানান ম. ইনামুল হক। তিনি বলেন, নিরাপদ ত্রাণ ব্যবস্থাপনা করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতায় বন্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, লুটপাটের উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে পরিবেশের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হবে, যাতে প্রতিবছর বন্যা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বন্যা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য রাষ্ট্রের কাছে ১৪ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার বলেন, এবারের সিলেটের বন্যা ইতিহাস ছাড়িয়েছে। ৪০ লাখ পানিবন্দী মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, খেতের ফসলসহ জীবিকার সব মাধ্যম হারিয়ে পথের ফকির হয়ে গেছে। অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার থেকে শুরু করে কোনো সাহায্য পৌঁছায়নি। যদিও সেনাসদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন।

এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মহসীন রশিদ, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, মানবাধিকারকর্মী রুবী আমাতুল্লাহ প্রমুখ।