সরকার যে কারও ব্যাংক হিসাব তলব করতে পারে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের প্রথম প্রকাশনা সাময়িকী ‘বিএসআরএফ বার্তা’ উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ২০ সেপ্টেম্বর, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার যে কারও ব্যাংক হিসাব তলব করতে পারে। কেউ স্বচ্ছ থাকলে এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। কারণ, এই ব্যাংক হিসাব থেকে যখন তাঁদের স্বচ্ছতা বেরিয়ে আসবে, তখন মানুষের সামনে তাঁদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

আজ সোমবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের প্রথম প্রকাশনা সাময়িকী ‘বিএসআরএফ বার্তা’ উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। তখন সাংবাদিকদের ব্যাংক হিসাব তলব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সাংবাদিকদের ব্যাংক হিসাব তলব প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যে কারও ব্যাংক হিসাব তলব করতে পারে। এমপি, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদেরও ব্যাংক হিসাব তলব হয়। তবে কেউ স্বচ্ছ থাকলে এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। কারণ, এই ব্যাংক হিসাব থেকে যখন তাঁদের স্বচ্ছতা বেরিয়ে আসবে, তখন মানুষের সামনে তাঁদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। তবে এটি কেন সংগঠনের নাম দিয়ে চাওয়া হলো এবং কেন এটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো, সেটিই প্রশ্ন—সে প্রশ্ন অনেকেই রেখেছেন।’

উল্লেখ্য, সরকারের একটি সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

ফাঁকা বুলি আউড়িয়ে লাভ হবে না

দেশের নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ও স্বাধীন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কারও সহযোগিতা দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ, ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে অনেক নির্বাচন করেছে।’

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য বিএনপির ডাকের বিষয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সাড়ে ১২ বছর ধরে এই দাবি করে আসছেন এবং জনগণকে আহ্বান জানিয়ে আসছেন কিন্তু জনগণ তো তাঁদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি এবং সাড়া দেওয়ার কোনো কারণও নেই। বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। বিএনপিকে বলব, এ ধরনের ফাঁকা বুলি আউড়িয়ে লাভ হবে না।’

সরকার যেকোনো সময় সাজা স্থগিতাদেশ বাতিল করতে পারে

বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘সরকার ভয়ে খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিচ্ছে না’—এর জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির বরং সরকারকে বহু আগে ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন ছিল। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাননি কিংবা আদালত কর্তৃক খালাসও পাননি। প্রধানমন্ত্রী আইনপ্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাঁর সাজা স্থগিত করেছেন। সেই কারণে তিনি কারাগারের বাইরে আছেন। এই জন্য বিএনপির শুকরিয়া আদায় করা প্রয়োজন, সরকারকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। সরকার যেকোনো সময় চাইলে ছয় মাসের সাজা স্থগিতাদেশ বাতিল করতে পারে। সে আদেশ যদি আগামীকাল বাতিল হয়, তাহলে তখনই খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফেরত যেতে হবে। এটিও বিএনপির মনে রাখা প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।’

ডোমেইন বরাদ্দ দেওয়ার আগে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে

সাংবাদিকেরা এ সময় বিটিআরসি থেকে আইপি টিভির ডোমেইন বন্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইপি টিভি রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার দায়িত্ব হচ্ছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু তারা ডোমেইন বরাদ্দ পায় বিটিআরসি থেকে। ডোমেইন বরাদ্দ দেওয়ার আগে এখন থেকে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। ২২ সেপ্টেম্বর আমরা টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসির সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় একটি বৈঠক করব।’