হবিগঞ্জে পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ করেছে : মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, হবিগঞ্জে বিনা উসকানিতে পুলিশ শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা করেছে। তিনি দাবি করেন, পুলিশ গুলিবর্ষণও করেছে। তিনি বলেছেন, এভাবে দমন–পীড়ন করে কখনোই জনগণের ন্যায়সংগত দাবি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তাঁকে বিদেশে পাঠানোর আন্দোলনকে দমন করা যাবে না।

গতকাল বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশে পুলিশি হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি হবিগঞ্জে গুলিবর্ষণ করে নেতা-কর্মীদের আহত করার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার সিলেট বিভাগের সব উপজেলায় এবং শনিবার সব জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, হবিগঞ্জে যে গুলিবর্ষণ হয়েছে, এর মূল কারণটাই ছিল হবিগঞ্জে বিএনপির একটা শক্তিশালী জায়গা আছে। সেখানকার বিএনপির নেতারা বরাবরই প্রমাণ করেছেন, সেখানে শক্তিশালী একটা সংগঠন আছে। সে জন্য এ জায়গায় তারা আঘাত করেছে। পুলিশ বিনা উসকানিতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম জানান, পুলিশের নির্বিচারে লাঠিপেটায় বিএনপির ৩০০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে হবিগঞ্জের জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজীব আহসান, যুগ্ম সম্পাদক সাইদুর রহমান ছাড়াও আবদুল মতিন, শেখ রাসেল, গোলাম বাকী চৌধুরী, মানিক মিয়া, তৌহিদুর রহমা, বেলাল আহমেদ, আসিফুল ইসলাম, মুজাক্কির ইমন, গৌর চন্দ্র দাশ, মোশায়েদ আলম উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাইদুর রহমানের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।

এ ঘটনার জন্য জেলার পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী, ওসি মাসুক আলী ও নাজমুল হাসানকে দায়ী করেন মির্জা ফখরুল। তিনি অবিলম্বে তাঁদের অপসারণ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাঁকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ২২ তারিখ সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে ৭টি জেলায় আমাদের সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। ছয়টিতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করা গেছে। হবিগঞ্জে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। এসপি মুরাদ আলীর নির্দেশে ওসি নাজমুল হাসান, মাসুক আলী সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে শটগানে প্রায় ১ হাজার ২টি গুলি ছোড়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। আইনত সারা বিশ্বে শটগানের গুলি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ কর্মসূচিগুলো একেবারেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। এখন পর্যন্ত এ সব কর্মসূচিতে শান্তি ব্যাহত হয়নি। অথচ তারা পরিকল্পিতভাবে এ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে আজকে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে সংকুচিত করে ফেলেছে। প্রতিটি কর্মসূচিতে আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে সরকারের প্রতি মানুষ অনাস্থা জ্ঞাপন করছে।’

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জের সমাবেশে অংশ নেওয়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবেদিন, মুক্তাদির চৌধুরী ও সহস্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আখতার হামলার বর্ণনা দেন। তাঁদের দাবি, পুলিশ গুলিবর্ষণ করেছে। এ হামলার উদ্দেশ্য একটাই, সমাবেশ বানচাল করা। যেভাবে পুলিশ সেখানে গুলিবর্ষণ করেছে, এর ফলাফল আরও ভয়াবহ হতে পারত।