বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য জিয়াকে আসামি করা হয়েছে: অলি আহমদ

তেজগাঁওয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুক্রবার বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম
ছবি : সংগৃহীত

পঁচাত্তরের নভেম্বরে তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে করা মামলাকে ‘নির্বাচনের আগে জনদৃষ্টিকে অন্যত্র সরানোর’ ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। শুক্রবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

অলি আহমদ বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে শহীদ নাজমুল হুদার মেয়ের প্রতি আবেদন করতে চাই এবং জাতিকে জানাতে চাই, জিয়াউর রহমান সাহেব ওই সময়ে বন্দী ছিলেন। কোনো অবস্থাতেই তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য নির্দেশদাতাও নন এবং পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে এর সঙ্গে যুক্ত নন।’

শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রমকে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই হত্যার ঘটনার ৪৭ বছর পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন তাঁর মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় মেজর (অব.) আবদুল জলিলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা লে. কর্নেল (অব.) আবু তাহেরকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থানের পটভূমিতে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন, তখন তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন অলি আহমদ। তিনি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিতেও ছিলেন।

বর্তমানে এলডিপি নেতা অলি আহমদ ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর খন্দকার নাজমুল হুদাকে হত্যার মামলায় জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

শুক্রবার সেই সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরানোর জন্য এটি (মামলা) করানো হয়েছে। আমরা তাঁদের বলব, মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না।’

অলি আহমদ আরও বলেন, ‘এত দিন (৪৭ বছর) পর নির্বাচন সামনে রেখে উনি যে মামলাটা করেছেন, তাঁকে বলব, মা, এই কাজটা ভালো করেননি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কোনো অবস্থাতেই এটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।’

অলি আহমদ প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এত দিন মামলা হলো না, ৪৭ বছর পর হঠাৎ ঘুম ভাঙল…এটা(মামলা) করতে হবে। এখানে আমারই প্রশ্ন জাগে, নাজমুল হুদা সাহেবের স্ত্রী তো অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন না। তিনি ওই সময়ে এই মামলা করতে পারতেন। আওয়ামী লীগ তো ক্ষমতায় ছিল ১৯৯৬ সালে, এরশাদের সময়ে মামলা করতে পারতেন, তখন তিনি কিছু করলেন না। এখন নির্বাচনের আগে এসে এই ধরনের ধোঁয়াশা তুলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব করছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, এম মোরশেদ, সাকলাইন, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাহ হোসেন মিয়াজি ও আইন সম্পাদক আবুল হাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।