তফসিল ঘোষণার পরই সারা দেশে মিছিল করবে আওয়ামী লীগ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই এটিকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে মিছিল করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সাংগঠনিক জেলা ও মহানগর নেতাদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তফসিল নিয়ে আগামীকাল বুধবার বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে তফসিল কবে হবে, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি ইসি।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, কাল বিকেল পাঁচটায় কমিশনের বৈঠকের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আর নির্বাচন হতে পারে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, আজ তফসিল ঘোষণা হতে পারে ধারণা পেয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া দলের সব স্তরে দায়িত্বশীল নেতাদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠান। তাঁদের বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পরপরই এটিকে স্বাগত জানিয়ে সারা দেশে বড় মিছিল করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকেরাও নিজ নিজ বিভাগের নেতাদের ফোন করে মিছিলের প্রস্তুতি রাখতে বলেছেন। তৃণমূলের নেতাদের এমন ধারণা দেওয়া হয়েছে, আজ ও আগামীকাল দুদিনই মিছিলের প্রস্তুতি রাখতে হবে। কোনো কারণে আজ তফসিল ঘোষণা করা না হলে পরদিন যাতে মিছিল করা যায়।

এদিকে রাতে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠকে বসেন। এ সময় সিদ্ধান্ত হয় যে শুধু মহানগর ও জেলা নয়, উপজেলা–থানা পর্যায়েও মিছিল করা হবে। মিছিলের স্লোগান থাকবে নৌকা। এর মাধ্যমে নির্বচনের আবহ নিয়ে আসতে হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা তো আনন্দের খবর। সুতরাং আওয়ামী লীগ সারা দেশে তফসিলকে স্বাগত জানাতে মিছিল করবে। নৌকার স্লোগানে সারা দেশ মুখর হবে।

কাল ও পরশু বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি রয়েছে। এই বিষয় উল্লেখ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, কোনো ধরনের অরাজকতা সহ্য করা হবে না। অরাজকতার ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানো হবে।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বিএনপির হরতাল-অবরোধসহ নানা কর্মসূচি থাকতে পারে। ফলে তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ যে মিছিল করবে, সেটি নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ ক্ষেত্রে মিছিল ও ‘সতর্ক’ পাহারা দুটিই হবে।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তফসিল ঘোষণার পর স্বাগত জানিয়ে মিছিলের করার বিষয়ে তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন। নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিদিনই মিছিল থাকবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার ও মহানগর দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, তারাও রাজধানীর প্রতিটি থানা–ওয়ার্ডে মিছিল করবেন এবং সতর্ক পাহারায় থাকবেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, তফসিল ঘোষণার পর মিছিল করার পেছনে মূল লক্ষ্য বিরোধী দল যাতে তফসিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাজপথে না নামতে পারে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন ঘেরাওসহ বিরোধী দলগুলোর নানা কর্মসূচির সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তফসিলের পরই রাজপথে শক্তি দেখাবে আওয়ামী লীগ। এর ফলে একদিকে মানুষের মধ্যে নির্বাচনের বার্তা যাবে। অন্যদিকে বিরোধী দল বের হওয়ার সাহস পাবে না।