বোকা বানাতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে: ফখরুল

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

সবাইকে বোকা বানাতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটি শুধু নাম পরিবর্তন করে আরেকটি নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়নের নামান্তর।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ থাকায় আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ভদ্র সাজার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।

গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য কালো আইন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী আইন। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে নতুন আইন করে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আলোচনা করে আইন প্রণয়ন করবে, এটা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আশা করি না। আওয়ামী লীগের চরিত্র আমরা জানি। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্র সব সময় নিয়ন্ত্রণ করেছে। এটা নতুন নয়, ১৯৭৫ সাল থেকে এ কাজ করে আসছে তারা।’

আরও পড়ুন

গত রোববার গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের সব স্তরের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। সভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গের উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি যেন নির্বাচন করতে না পারে, তার সব রকমের ব্যবস্থা সরকার করছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার এবং দল হিসেবে বিএনপির যেসব অধিকার রয়েছে, তা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে সরকার। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে আবার আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার পথকে প্রশস্ত করতে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করছে।’

দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালতের বিচারকেরাও এখন অসহায়। দুই বিচারক নিজেরাই বলেছেন, তাঁরা কতটা অসহায়। তাঁদের কথা কেউ শোনে না। তাঁরা আদেশ দেন, গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু গ্রেপ্তার তো করেই, আবার রিমান্ডেও পাঠায়।’

আরও পড়ুন

লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমানের রায় ও সাজার প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সভায় অংশ নেওয়া নেতারা মনে করেন, বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে নিজেদের অবৈধ শাসনকে স্থায়ী করার লক্ষ্যে ব্যবহার করছে।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিচার বিভাগকে।

গতকাল রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতিত্ব করেন। মির্জা ফখরুলসহ সভায় অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।