কী ভেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলাম, আর কী পেয়েছি: নজরুল ইসলাম খান
কী আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, আর এখন কী পেলেন, তা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে ছিলাম, আক্ষেপটা বোধ হয় তাদেরই বেশি। কী ভেবে, কী চিন্তা করে, কী আশা নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলাম, আর কী পেয়েছি।’
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান এ আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বলা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করেছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করে। তখন কষ্ট হয়। তিনি সরকারি দলের উদ্দেশে বলেন, ‘গণতন্ত্র তো ক্ষমতায় যাওয়ার বাহন না। গণতন্ত্রের বাহন হলো নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। আপনারা সেই নির্বাচন ধ্বংস করে বলবেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন, এটা বলতে পারেন না।’
বাংলাদেশের মানুষ জেগে গেছে—এমন মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘মাত্র তিন মাসের মধ্যে আমাদের ১২–১৩ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও প্রতিটি কর্মসূচি সফল হচ্ছে। প্রতিটি আন্দোলনে সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। সাধারণ জনগণ তখনই অংশগ্রহণ করে, যখন তারা পরিবর্তন চায়।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করলে আন্দোলনে জয়ী হওয়া যায় না, ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। তারা জানে এটা। জানার পরেও তারা একই ভুল করছে। ক্ষমতা কি মানুষকে এতই অন্ধ করে?
কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন যেটা হবে, সেটা সবার জন্য। গত তিন-চার বছরে আমাদের দেশে ১৩–১৪ হাজার নতুন কোটিপতির সৃষ্টি হয়েছে। কেউ এটা উন্নতি বলতে পারেন। কিন্তু পাশাপাশি যে সাড়ে তিন কোটি থেকে চার কোটি লোক আরও অধিক দরিদ্র হয়ে গেল, সেটাকে কী বলবেন? এটা তো কথা ছিল না।’ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কথা ছিল আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে-মিলে সমৃদ্ধ হব। কিছু লোক, মাত্র হাতে গোনা কিছু লোক আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাবে, আর বাকি লোকেরা নিঃস্ব হয়ে যাবে, এ জন্য তো বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই।’
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।